কথাগুলো বলছিলেন, গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হরিণসিংহা গ্রামের দিনমজুর কৃষক দেলোয়ার হোসেন।
তার তিন বিঘা জমির প্রায় অধিকাংশ ধানই ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে সাদা হয়ে গেছে।
একই অবস্থা পাশের তরফকাল গ্রামের কৃষক কাকরু মিয়ার, তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তিনদিন ধরে ঝড়ি (বৃষ্টি) পরতেছে, এর মদোত (মধ্যে) কাম (কাজ) করি কেমনে, দুই বিগা (বিঘা) জমিত আবাদ করচোম, সাদা হয়া সগি (সব) তো নষ্ট হচে, আবাদ না হয় কমে হলো, ঝড়ির (বৃষ্টি) মদোত ধান যে কাটা যায় না বাহে।
এমন চিত্র শুধু কাকরু মিয়া ও দেলোয়ার হোসেনের নয়, এ চিত্র গাইবান্ধা জেলা জুড়েই, জেলার চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৩০ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। কিন্তু ধানের জমিতে বিভিন্ন পোকার আক্রমণ, বিরামহীন বৃষ্টি, শিলা ও বজ্রপাতের কারণে আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে পারবেন না কৃষক। এতে দিনমজুর, অসহায় ও দরিদ্র কৃষকদের কষ্টের সীমা থাকছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের এটা একটা পূর্বাভাস। বাংলাদেশে ধীরে ধীরে আগাম বন্যা ও অসময়ে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এতে ধানের জমিতে ফলন ভালো হচ্ছে না, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বাড়ছে।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আ ক ম রুহুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু জায়গায় ব্লাষ্ট রোগের আক্রমণ ও শিলাবৃষ্টির কারণে ধানের জমি নষ্ট হওয়ার খবর পেয়েছি তবে এতে আমাদের চাল উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা তা ব্যাহত হবে না। আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির কাজ করছি এবং তাদের পূনর্বাসনের ব্যাপারে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি।
এছাড়াও আমাদের প্রত্যেক ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজাররা (বিএস) কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন ও তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছেন। আশা করছি জেলায় কৃষকদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে পারব।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৮
আরএ