লক্ষ্মীপুর: রাস্তার দুইপাশে ধান আর ধান। পুরো রাস্তা যেন পরিণত হয়েছে ধান শুকানোর মাঠে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, তাদের বাড়িতে ধান শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত উঠোন বা জায়গা না থাকায় রাস্তার মধ্যে ধান শুকাতে হচ্ছে। আর স্বল্প সময়ের মধ্যে ধান শুকাতে যে রোদের প্রয়োজন, তা অনেকের বাড়িতে পাওয়া যায়না। ফলে বেশিরভাগ কৃষক পরিবার তাদের বোরো ধান শুকানোর জন্য রাস্তা বেছে নিয়েছেন। তাই কৃষকদের উৎপাদিত ধান রাস্তায় বিছিয়ে দেন তারা। দুই বা তিন দিনের রোদে সে ধান পুরোপুরি শুকিয়ে বস্তা ভরে সংরক্ষণ করা যায়।
স্থানীয় কৃষক আলী হোসেন, সোহাগ, রহমত উল্যা বাংলানিউজকে বলেন, ভবানীগঞ্জের মিয়ার বেড়ী থেকে পশ্চিম এবং দক্ষিণে রাস্তার দুই পাশে বিস্তৃর্ণ ফসলি মাঠ। চলতি মৌসুমে এবার এসব জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত ৩-৪ বছর ধরে ধান চাষ করছেন তারা। আগে এসব জমিতে সয়াবিন বা রবি শস্য চাষ হতো। কৃষকের উৎপাদিত ধান শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত উঠান বা মাঠ না থাকায় তারা রাস্তায় শুকান। এটি আঞ্চলিক সড়ক হওয়ায় যানবাহনের চাপ কম থাকে। ফলে কৃষকরা আনায়াসে রাস্তায় ধান বিছিয়ে দিচ্ছেন। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে বস্তায় ভরে দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য রেখে দেন। কেউ আবার অর্থের প্রয়োজনে রাস্তা থেকেই বিক্রি করে দেন।
কৃষক আবদুর রহিম বলেন, চলতি মৌসুমে মাঠ থেকে প্রায় ৩০ মণ ধান পেয়েছি। ১০ মণ বিক্রি করে দিই। বাকিগুলো দিয়ে পরিবারের চাহিদা পূরণ করা যাবে।
তিনি বলেন, শুকনো প্রতি মণ ধানের মূল্য ৮০০ টাকা। সরকারিভাবে ধান ক্রয় করায় গত কয়েক বছর থেকে ধানের মূল্য পাচ্ছেন তারা।
কৃষক রফিক উল্যা বাংলানিউজকে বলেন, ধান কাটা শুরু হওয়ার পর ধান নিয়ে খুবই বিপাকে পড়তে হয়েছে। তখন টানা বৃষ্টি ছিল। তাই রোদে শুকাতে না পেরে ধানের অঙ্কুর গজিয়ে গেছিল। কিন্তু এখন আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় টানা রোদ পড়ছে। লোকজন খুব সহজেই ধান শুকাতে পারছে। এ এলাকার লোকজন সাধারণত রাস্তার মধ্যেই ধান শুকিয়ে থাকে। আবহাওয়া আরও ৮-১০ দিন এভাবে থাকলে ধান নিয়ে কারো কোন দুচিন্তা থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২২
এনটি