ঢাকা: বাংলাদেশসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৫৪টি দেশের খ্যাতনামা চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় শুরু হয়েছে ‘১৭তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ-২০১৬’।
বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তন থেকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতারী মমতাজের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও ১৭তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০১৬ সাংগঠনিক কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী লিয়াকত আলী লাকী এবং মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি শিল্পী রফিকুন নবী।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ইয়ং চোল, থাইল্যান্ডের ভাইস মিনিস্টার মিস চাওরো কাসিতসুন অরং ট্রং।
১৯৮১ সালে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর বিশিষ্ট শিল্পীদের অংশগ্রহণে এ প্রদর্শনী যাত্রা শুরু করে। এ প্রদর্শনী ১ ডিসেম্বর থেকে চলতি মাসের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে ৫৫৬ জন শিল্পীর শিল্পকর্ম থেকে বাছাই করে ১৪৮ জন শিল্পীর ১৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ৫৪ জন আমন্ত্রিত চিত্রশিল্পীর ৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পাচ্ছে।
অন্যদিকে, প্রদর্শনীতে স্থান পাচ্ছে ৫৪টি দেশের ১২৭ জন শিল্পীর ২৭৭টি শিল্পকর্ম। বিভিন্ন দেশের শিল্পী, শিল্প সমালোচক, মিউজিয়াম কিউরেটরসহ মোট ১৪৬ জন বিদেশি এ প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। প্রখ্যাত বিদেশি শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন চীনের ওয়াং চুনচেন, ফ্রান্সের মিস মায়েলো ডাউন্ট, ইন্দোনেশিয়ার মিস দোলোরোসা সিংহা, জাপানের মিস ইয়োকো হাসেগাওয়া, পোল্যান্ডের জাইমুন্ট রাফাল স্ট্রিরেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার ইউন জিনসুপ প্রমুখ।
বাংলাদেশসহ অংশ নেওয়া অন্য দেশগুলো হলো- আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, বুলগেরিয়া, কম্বোডিয়া, কানাডা, চিলি, চীন, কলোম্বিয়া, ক্রোয়েশিয়া, উত্তর কোরিয়া, মিশর, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইতালি, জাপান, কুয়েত, লেবানন, লুক্সেমবার্গ, মালোয়শিয়া, মরিশাস, মায়ানমার, নেপাল, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, পেরু, ফিলিপাইনস, পোল্যান্ড, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, রিইউনিয়ন আইল্যান্ডস, রাশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সাউথ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্কো, ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও ভিয়েতনাম।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পকর্মের মধ্যে থেকে প্রতিবছরের মতো এবারও ৯ জন শিল্পীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এরমধ্যে ছিল ৫ লাখ টাকা মূল্যের তিনটি গ্রান্ড পুরস্কার এবং ৩ লাখ টাকা মূল্যের ছয়টি সম্মাননাসূচক পুরস্কার।
‘গ্রান্ড পুরস্কার’ পেয়েছেন বাংলাদেশের কামরুজ্জামান স্বাধীন, হারুনুর রশীদ ও চিলির ডাগমারা হুইসক্যাল। সম্মাননাসূচক পুরস্কার পেয়েছেন কুন্তল বাড়ৈ, বিপাশা হায়াত, রাজিব কুমার রায়, শ্যামল চন্দ্র সরকার, দিলীপ কুমার কর্মকার।
মাসব্যাপী প্রদর্শনীর পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে সেমিনার, পারফরমেন্স আর্টস প্রদর্শনী, আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্প ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রোসেসিং জোনে আন্তর্জাতিক আর্ট ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।
আর্টক্যাম্পে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন বাংলাদেশের শিল্পী ড. ফরিদা জামান, হাশেম খান, মাহমুদুল হক, মুনিরুল ইসলাম, নাইমা হক, নাজলি লাইলা মনসুর, রফিকুন নবী, রোকেয়া সুলতানা, সমরজিৎ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এমইউএম/টিআই