মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন রশিদুল ইসলাম রাজা।
উদ্বোধনী মঞ্চায়নটি মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেন শিমুল ইউসুফ। তিনি বলেন, নাটকটির চিত্রনাট্য আমার হাতে তুলে দিয়ে সেলিম আল দীন বলেছিলেন, ‘কালিন্দী’ চরিত্রটি তোর কথা ভেবেই লিখেছি। এর তিন বছর পর তিনি ‘পরী’ অংশটি রচনা করেন। এ প্রদর্শনীতে দুইজন কালিন্দী চরিত্রে অভিনয় করবেন, তাদের অভিনয় দেখতেই আসা। আশা করি, এ নাটকটি দর্শকপ্রিয়তা পাবে।
নাটকের কাহিনিতে দেখা যায়- ধর্মতান্ত্রিক পরিবারের কন্যা কালিন্দী। বাবা ভাসান গায়ক। তার জীবনের চারপাশ যেনো মনসার সাপের ফনায় ঘেরা। কিন্তু তার ধমনিতে প্রবাহিত শিল্প-প্রেমের স্রোত তাকে জীবনের দিকে টানতে থাকে। সে বেরিয়ে এসেছিল ধর্মের খোলস ভেঙে প্রাণ ও প্রণয়ের টানে। শিল্প-যাত্রায় সহযাত্রী হয়েছিল মানুষের সুখ দুঃখের ভজন গায়ক আলাল গায়েন। যে গায়েন তার শিল্প-সৃজনে অনুপ্রেরণা মেনেছিল কালিন্দীর দু’টি চরণ।
কালিন্দী যাচনা করেছিল প্রেম। কিন্তু গায়েন মাঝ পথে উল্টো যাত্রা করে, পীরের মুরিদ হয়। পরকাল ও কবরের অন্ধকারে জীবনের অধিক সুখ খোঁজে। তার সুর ও পয়ারে মুখরিত আসরের আলো ক্রমশ নিভে যায়। ভেঙে যায় শিল্প-সংসার। ক্ষত-বিক্ষত হয় কালিন্দীর জীবন। পীর পূজার নিরন্তর সঙ্গীতে বদলে যাওয়া ভুবনে আত্ম বিসর্জন দেয় কালিন্দী।
পদাবলীর ধারায় নির্মিত ‘কালিন্দী’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন গোধূলি মাহজেবিন, মাধবীলতা, সোহাগ ধর, মানিক সরকার, সোহানুর রহমান, আননুর রাশাদ, রাহাতুল হাবীব, শাহরিয়া খান ইমন ও উৎসব বৈরাগী।
নাটকটি মঞ্চায়ন প্রসঙ্গে রশিদুল ইসলাম রাজা বলেন, অষ্টাদশ শতকে গীতিকা পালার সঙ্গে ধর্মকাব্যের দ্বান্দিক ছবি কালিন্দী আখ্যান। একালে বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে উগ্র ধর্মবাদীদের প্রকট দ্বন্দ কালিন্দীর প্রাসঙ্গিকতা বাড়িয়ে দেয়। তাই কালিন্দী মঞ্চে তোলা।
এর আগে, ১৯৯৩ সালে নাটকটির দু’টি অংশই মঞ্চে আনে ‘ঢাকা থিয়েটার’। তাতে কালিন্দী চরিত্রটি রূপায়ন করে শিমুল ইউসুফ, পরী চরিত্রে ছিলেন সুর্বনা মুস্তাফা।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এইচএমএস/এসআরএস