ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উপকূল থেকে উপকূল

‘ঈদের নতুন জামা নেই, তাই কেউ খেলায় নেয় না’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৭
‘ঈদের নতুন জামা নেই, তাই কেউ খেলায় নেয় না’ ‘ঈদের নতুন জামা নেই, তাই কেউ খেলায় নেয় না’

ভোলা: ‘আমাদের নতুন জামা নেই, তাই কেউ খেলায় নিতে চায় না। একটা জামা ছিলো, তাও ছেড়া। তাই খালি গায়ে বসে আছি। ঈদে বাবা-মা নতুন জামা কিনে দেননি। সকাল থেকে না খেয়ে আছি’।

কথাগুলো বলছিল বাঁধের ওপরে মন খারাপ করে বসে থাকা দুই ভাই জিহাদ (১০) ও মনির (৭)। তাদের বাবা জসিম দিনমজুর।

কখনও আবার অন্যের নৌকায় মাছ শিকার করেন। কাজ করে যা পান, তা দিয়ে কোনোমতে ডাল-ভাত খেয়ে দিন কাটে। কখনো কখনো না খেয়েও থাকতে হয়।

ঈদ এলেও সন্তানদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি জসিম। তাই ঈদের দিন খালি গায়েই খেলা করতে বাঁধে এসেছে জিহাদ ও মনির। কিন্তু জামা না থাকায় কেউ খেলায় নিচ্ছে না।


ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের কোড়ারহাট সংলগ্ন বাঁধে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল শিশুদের বিবর্ণ ঈদ কাটছে এভাবেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নতুন পোশাক গায়ে জড়িয়ে কয়েকজন শিশু হাসি-আনন্দ আর খেলা-ধুলায় মেতে উঠলেও বাকিদের মুখে হাসিও নেই। মলিন মুখে নীরবে বসে আছে তারা।

জিহাদ বলে, ‘অনেকের ঘরে রুটি-মাংস, কিন্তু আমাদের ঘরে চুলো জ্বলে না। হয়তো ঈদের দিনেও না খেয়ে কাটাতে হবে। আমাদের ঈদ নেই, প্রতিটি দিনই সমান’।

মনিরদের প্রতিবেশি সালমা আক্তার বলেন, ‘দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে জসিমের অভাবের সংসার। নিজস্ব জমি নেই, অন্যের জমিতে আশ্রিত তারা। জাল বেয়ে যা পান, তা দিয়ে কোনোমতে খাবারের ব্যবস্থা হয়। কখনো আবার একবেলা জোটে তো দু’বেলা না খেয়ে থাকতে হয়। খাবারই জোটে না, সেখানে তাদের কোরবানি কিসের?’

মনির ও জিহাদের মতো আরও অনেকের একই অবস্থা। ঈদের দিন কেউ খালি গায়ে, কেউ বা ছেড়া জামা পরে বাঁধের ওপর ঘুরে বেড়াচ্ছে। খুশির বার্তার বদলে ঈদ আরও বেশি দুঃখ-কষ্ট বয়ে আনছে হতদরিদ্র পরিবারের এসব শিশুদের জীবনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২,  ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।