কষ্টের সঙ্গেই কথাগুলো বলছিলেন সালেহা (৪০)। ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বলরাম শুরা গ্রামের বাঁধের ওপরে আশ্রিত তিনি।
শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) ঈদ-উল আযহার দিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধের ঝুপড়ি ঘরে ১৩ বছরের প্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়ে মারদিয়ার কান্না থামানোর চেষ্টা করছিলেন সালেহা।
কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আমাদের খোঁজ-খবর নেননি, কেউ সাহায্য দেন না, অনেক কষ্টে আছি। ঈদের দিনেও ছোট মেয়েটাকে নতুন জামা কিনে দিতে পারিনি। দুপুরে মাংস জুটবে কিনা জানি না’।
সালেহা আরো বলেন, ‘স্বামী ইয়াছিন নদীতে মাছ ধরতেন, কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে বহু কষ্টে ২ ছেলে-৩ মেয়েকে বড় করছি। ২ মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন ঘরে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ে। বড় ছেলে জাকির বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে থাকে, কারো খোঁজ নেয় না। ছোট ছেলে নদীতে মাছ ধরে, কিন্তু যে আয় হয়- তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই এ বয়সেও অনেক ঘরে কাজ করি’।
‘ঈদ এলেও পরিবারের কারো মুখে হাসি ফোটেনি। অভাবের সংসার, তাই আনন্দ-খুশির কথা চিন্তা করি না। শুধু প্রতিবন্ধী মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছি’।
মেঘনা পাড়ে আরও অনেকের একই অবস্থা। চারদিকে হাসি-আনন্দ আর উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপন চললেও যেন বিবর্ণ ঈদ এখানে।
যেখানে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগাড়ের লড়াই চলে, সেখানে ঈদ তাদের জীবনে খুশি বয়ে আনতে পারে না। ঈদের দিনেও কষ্টে কাটাতে হয়। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে কেটে যায় দিনের পর দিন আর বছরের পর বছর। কিন্তু কেউ খোঁজ নেন না- কেমন আছেন সালেহারা?
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭
এএসআর