আইপিএলে দল পেলেও মাঠে নামা হচ্ছিল না লিটন দাসের। অবশেষে আসরে দলের ষষ্ঠ ম্যাচে সুযোগ পেলেন তিনি।
২০২৩ আইপিএলের ২৮তম ম্যাচে আজ ৪ উইকেটে জিতেছে দিল্লি। ঘরের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কলকাতাকে মাত্র ১২৭ রানেই আটকে দেয় দিল্লির বোলাররা। জবাবে ৬ উইকেট হারালেও ডেভিড ওয়ার্নারের দুর্দান্ত ফিফটিতে ভর করে ৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। এই জয়ে টানা পাঁচ হারে খাদের কিনারে চলে যাওয়া দিল্লি শিবিরে স্বস্তি ফিরলো। অন্যদিকে টানা তিন ম্যাচে হারল কলকাতা।
টস জিতে আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় দিল্লি ক্যাপিটালস। এদিন চার পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে কলকাতা। বদল আসে ওপেনিংয়ে। ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়ের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন লিটন। প্রথম ওভারে স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন রয়। প্রথম দুই বলে কোনো রান নিতে পারেননি তিনি। তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইকে আসেন লিটন। প্রথম বলেই কাভার ড্রাইভে ইশান্ত শর্মার ডেলিভারিকে বাউন্ডারি ছাড়া করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। পরের দুই বল থেকে অবশ্য রান নিতে পারেননি।
দ্বিতীয় ওভারে শেষ বলে ফের স্ট্রাইক পান লিটন। কিন্তু এবার নিজের উইকেটই উপহার দিয়ে আসেন তিনি। মুকেশ শর্মার করা শর্ট ডেলিভারিটি অনেকটা বাইরেই ছিল লিটনের। চাইলে ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু পুল করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন এই ওপেনার। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্কয়ার লেগে থাকা ললিত যাদবের হাতে। তাই ৪ বলে ৪ রান করেই ফিরতে লিটনকে।
এদিকে এই ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের একাদশে সুযোগ পাননি মোস্তাফিজুর রহমান। তাক বাদ দিয়ে উইকেটকিপার-ব্যাটার ফিল সল্টকে দলে নেয় দিল্লি। বোলিংয়ে আজ দিল্লির সব বোলারই ছিলেন যথেষ্ট কৃপণ। বিশেষ করে ইশান্ত শর্মা, এনরিখ নরকিয়া এবং কুলদিপ সিংদের সামনে সেভাবে দাঁড়াতেই পারেননি কলকাতার ব্যাটাররা। তবে নিয়মিত উইকেট পতনের মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন জেসন রয়। কিন্তু তিনিও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি।
৩৯ বলে ৪৩ রান করে রয় যখন বিদায় নেন, তখন কলকাতার স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ৯৭। শেষদিকে ৩১ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে কলকাতাকে মান বাঁচানো সংগ্রহ এনে দেন আন্দ্রে রাসেল। যদিও তার ইনিংসের ৪ ছক্কার ৩টিই এসেছে শেষ ওভারে। বল হাতে দিল্লির চার বোলার (ইশান্ত, নরকিয়া, অক্ষর প্যাটেল ও কুলদিপ ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। বাকি উইকেট মুকেশ কুমারের।
জবাব দিতে নেমে দিল্লি দারুণ শুরু পায় ওয়ার্নারের হাত ধরে। পৃথ্বী শ'কে নিয়ে ৩৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন এই অজি ওপেনার। ১৩ রান করে শ বিদায় নেওয়ার পর মিচেল মার্শ (২) ও ফিলিপ সল্ট (৫) দুজনেই ওয়ার্নারকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন। কিন্তু ওয়ার্নার একপ্রান্তে রানের গতি ঠিক রাখেন। পরে ফিফটির দেখাও পান তিনি। কিন্তু দলকে জয় থেকে ৩৫ রান দূরে রেখে বিদায় নেন ওয়ার্নার (৫৭)। এরপর দিল্লির রানের গতি কমে যায়। মনীশ পান্ডে (২৩ বলে ২১ রান) কিছুটা এগিয়ে দেন।
মনীশের বিদায়ের পর ম্যাচে ফেরে কলকাতা। তবে দিল্লির অক্ষর প্যাটেল দাঁড়িয়ে যান। যদিও ১৮তম ওভারে তাকে বিদায় করার সুযোগ পেয়েছিল কলকাতা। কিন্তু উইকেটের পেছনে লিটন দাস কাজের কাজটা করতে পারেননি। ব্যাটার এগিয়ে এসে বলের লাইন মিস করেন। বল গিয়ে লাগে লিটনের বুকে। বল ধরে স্ট্যাম্পিং করতে দেরি করায় বেঁচে যান অক্ষর। পরে এই অক্ষরই ম্যাচ বের করে নেন।
যদিও শেষদিকে বলে বলে রানের হিসাব মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে হয়েছে অক্ষরকে। কিন্তু সেই হিসাব তিনি শেষ ওভারের প্রথম দুই বলেই চুকিয়ে দিয়েছেন। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রান। প্রথম বলেই দুই রান। এরপর দ্বিতীয় বলটি হয় নো বল। ফ্রি হিটে ডাবল নিয়ে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন অক্ষর।
৬ ম্যাচে প্রথম জয় পাওয়া দিল্লি এখনো পয়েন্ট টেবিলের একদম তলানিতেই আছে। আর কলকাতা সমান ম্যাচে ৪ হার নিয়ে আছে আটে।
বাংলাদেশ সময়: ০১১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৩
এমএইচএম