ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দলগত পারফরম্যান্সই টাইগারদের শক্তি

সিনিয়র স্পোর্টস করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
দলগত পারফরম্যান্সই টাইগারদের শক্তি গাজী আশরাফ হোসেন লিপু

ঢাকা: ‘বিশ্বকাপ খেলে আসা দলটির ঘরের মাঠের নৈপুণ্য যত দেখছি ততই বিস্মিত হচ্ছি। তাদের এই পারফরম্যান্স আগে দেখিনি।

দলে নতুন আসা সৌম্য-মুস্তাফিজ-লিটনের মতো তরুণ ও মাশরাফি-সাকিব-তামিমদের মতো পুরাতনদের সমন্বয়ে টাইগাররা যেভাবে পারফর্ম করছে তাতে বিস্মিত না হয়েই বা কোথায় যাই!’

কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও ম্যানেজার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। দলগত শক্তিই ধারাবাহিক সাফল্যের প্রধান কারণ বলে মনে করেন তিনি।

লিপুর মতো সাবেক ক্রিকেটার তার উত্তরসূরিদের এমন প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তা একটি দুটি কারণ কিংবা এক-দু’দিনের বিচার-বিশ্লেষণে নয়। ২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে ঘরের মাঠে দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোতে নিয়মিত সাফল্য পেতে ‍শুরু করে টাইগাররা। সেই সময় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে ৩২টি ওয়ানডে সিরিজ খেলে মোট ১২টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১১টিই ঘরের মাঠে। বাকি ১টি জয় ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, যেখানে দলটির বিপক্ষে তাদের মাটিতেই ৩-০ তে সিরিজ জিতেছিল সফরকারী বাংলাদেশ।

ঘরের মাঠে আয়োজিত সর্বশেষ ৫ সিরিজেই জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এর মধ্যে দুটিতে সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা। গেল বছর ঠিক এ মাসেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষ ৫-০ তে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৫ এর এপ্রিলে পাকিস্তানের মতো বিশ্বকাপজয়ী শক্তিকে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করে লাল-সবুজের দল।

টাইগারদের এমন ক্ষুরধার পারফরম্যান্সের পেছনে কোচ হাথুরুসিংহের অবদানের কথা স্মরণ করতে ভুলে গেলেন না গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। তিনি বলেন, কোচের পরামর্শ, সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান এসব মিলিয়েই টাইগাররা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখছে।

টাইগারদের সাম্প্রতিক ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের কথা বললে যে দুটি সিরিজ জয়ের কথা উল্লেখ না করলেই নয়, তা হলো দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত ও ক্রিকেটের সব সময়কার শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়।

গেল জুনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩টি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট খেলতে আসা ভারত বাংলাদেশের কাছে এক রকম নাকানি-চুবানি খেয়েই ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারে। আর ফতুল্লায় অনুষ্ঠিত সিরিজের একমাত্র টেস্টটি বৃষ্টির বাগড়ায় হয়েছে ড্র।

স্বাগতিকদের কাছে সিরিজ হেরে ভারত দেশে যাবার পর, সমানসংখ্যক ওয়ানডে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তাদের জন্য সময়টি ছিল বড্ড দুর্ভাগ্যের। টাইগাররা ফর্মের চূড়ায় থাকায় প্রোটিয়াদেরও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ পরাজয় মেনে নিতে হয়।

‘বড় এই দল দুটির বিপক্ষে উল্লেখযোগ্য ছিল টাইগারদের দলগত পারফরম্যান্স, যেখানে ব্যাটিংয়ে ওপেনাররা ব্যর্থ হলে দলের হাল ধরেছেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। বোলিংয়েও ছিল একই চিত্র। ভারতের বিপক্ষে বল হাতে স্ট্রাইক বোলার হিসেবে মাশরাফির জায়গায় এসেছিলেন নবাগত মুস্তাফিজ। আর এসেই কী অভাবনীয় সাফল্য! নিজের অভিষিক্ত ম্যাচেই পেলেন ৫ উইকেট! আর সিরিজে সর্বমোট ১৩টি! কখনও বল হাতে তাসকিন, সাকিব, মাশরাফি আবার কখনও বা নাসির জ্বলে উঠেছেন। এসবই দলগত পারফরম্যান্সের ফলাফল’- যোগ করেন লিপু।  

ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিরিজ জয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ দাবি করেন, ‘আমাদের দলটির খেলোয়াড়দের মধ্যকার চমৎকার সমঝোতা ও কঠোর অনুশীলন ও নিয়মিত হোমওয়ার্ক তাদের এই দুর্লভ জয় এনে দিয়েছে। ওই সিরিজগুলোতে আমাদের ছেলেদের ফিটনেসও ছিল দারুণ। তারা কোনো ক্যাচ ড্রপ করেনি, ফিল্ডিং ছিল প্রশংসা করার মতো। তাছাড়া দলে যারাই নতুন সুযোগ পাচ্ছে তারা নিজেদের প্রমাণ করছে, যেমন ধরুণ ইমরুল কয়েস। বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে বাদ পড়া এই টাইগার ওপেনার দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেই ৭৬ রানের ইনিংস খেলে নিজেকে প্রমাণ করেছে। শুধু সিনিয়ররাই নয়, অনূর্ধ্ব-১৯ ও ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে এসেও অনেকেই দলে সুযোগ পেয়েছেন। তারা এখনও হয়তো নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি, কিন্তু ভবিষ্যতে পারবে বলে আমি আশা করি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
এইচএল/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।