ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

৪ বছরেও বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়নি বিসিবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
৪ বছরেও বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়নি বিসিবি

ঢাকা: ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘নাম দাও ব্যাংকক যাও’ শিরোনামে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রথম বিপিএলের দলগুলোর জন্য নাম আহ্বান করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এসএমএস করে নাম পাঠাতে বলা হয়।

যাদের নাম নির্বাচিত হবে, তাদের পুরস্কার হিসেবে ‘ঢাকা-ব্যাংকক-ঢাকা’ দুই দিন তিন রাত ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপনে জানানো হয়। বিজ্ঞাপনে ‘টুর্নামেন্ট অথরিটি’ হিসেবে বিসিবির লোগো ছিল।

চমকপ্রদ সেই বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে পকেটের টাকা খরচ করে এসএমএস পাঠিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অনেকে। তাদের পাঠানো নামে বিপিএলে অংশ নেয় দলগুলো। কিন্তু প্রায় চার বছর হয়ে গেলেও সেই নাম দেওয়া বিজয়ীদের প্রতিশ্রুত পুরস্কার দেয়নি বিসিবি।

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন এমন একজনের সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি জানান, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের পর উল্টো বিসিবির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে রুঢ় আচরণ করা হয়।

ওই বিজয়ী বলেন, ‘আমি অনেকগুলো নাম পাঠিয়েছিলাম, এরমধ্যে ‘ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস’ নির্বাচিত হয়। বিসিবি পুরস্কার দেবে বলে একদিন আমাকেসহ অন্যদের ডেকে পাঠায়, কিন্তু পাঁচ ঘণ্টার মতো মিরপুর স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনকক্ষে বসিয়ে রেখে অনুষ্ঠান স্থগিত করার কথা জানানো হয়। পরবর্তী এই চার বছরে আর যোগাযোগ করেনি বিসিবি। ’

জাতীয় ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার এমন আচরণে চরম ক্ষুব্ধ ওই বিজয়ী জানান, সম্প্রতি প্রাপ্য পুরস্কার দাবি করে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দেন তিনি। এর প্রতিক্রিয়ায় ‘চিঠির ভাষা কঠিন’ হয়েছে বলে তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন বিসিবির এক কর্মকর্তা।

প্রতিযোগিতার বিজয়ী ওই ক্রিকেটপ্রেমী বলেন, ‘চার বছরেও পুরস্কার না দিয়ে বিসিবি জঘন্যতম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে, এখন পুরস্কার দাবি করে তাদের যে প্রতিক্রিয়া পেলাম, তাতে মনে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে তারা মানুষই মনে করছে না, মনে হচ্ছে বিসিবি এবং এর কর্মকর্তারা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। পাবলিক নিজের পকেটের টাকা খরচ করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, আর তারা এটা নিয়ে ছেলেখেলা করছে। আমার তো মনে হয় বিসিবি ইচ্ছে করেই বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছে। বিসিবিকে এটা ভুললে চলবে না যে, এ দেশের ক্রিকেট আজ যে উচ্চতায় পৌঁছেছে তার পেছনে বিসিবি কর্তাদের যে অবদান, তার চেয়ে কোনো অংশেই কম নয় ক্রিকেট পাগল এদেশের কোটি কোটি সাধারণ ভক্ত-সমর্থকদেরও। তাদের এভাবে অবহেলা-অপদস্ত করা ঠিক নয়। ’

জনগণ এসএমএস পাঠাতে যে টাকা খরচ করলো সেই টাকা কার পকেটে গেল বলেও প্রশ্ন রাখেন ওই বিজয়ী।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বাংলানিউজকে বলেন, ‘সে সময় বিষয়টি নিয়ে বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল যতটুকু না ফ্রন্ট লাইনে ছিল, তার চেয়েও বেশি ছিল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গেম অন স্পোর্টস। মূলত প্রথম বিপিএলের পর এবং দ্বিতীয় বিপিএল শুরুর আগে ক্রিকেটারদের পাওনা মেটানোর সময় এই পুরস্কারটিও দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। যেহেতু ইভেন্টটির আয়োজক ছিল গেম অন স্পোর্টস, তাই বিজয়ী প্রতিযোগীদের পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ তাদের হাতেই। তারা যদি ‍এখনও পুরস্কারটি না দিয়ে থাকে, উচিত অনতিবিলম্বে তা দিয়ে দেওয়া। ’

লিপু বলেন, ‘যারা এখনও পুরস্কার পাননি, তারা প্রশাসনিকভাবে বিসিবির সহায়তা নিয়ে পুরস্কারটি গেম অন স্পোর্টস কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করতে পারেন। বিসিবিকেও আমি বিজয়ীদের প্রাপ্য পুরস্কার দেওয়ার সুপারিশ করবো। ’

অবশ্য, সম্প্রতি বিজয়ীদের পুরস্কার না দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনও। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে কিছু জটিলতা আছে। ’ সঙ্গে বলেন, ‘প্রথম দুই বিপিএলের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের রেখে যাওয়া অনেক সমস্যারই সমাধান করতে হচ্ছে আমাদের। এ বিষয়টা নতুন জানলাম। যেহেতু সরাসরি অভিযোগ এসেছে এটাকেও আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। ’

এই বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানতে নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
এইচএল/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।