ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মুশফিকদের লজ্জায় ডুবিয়ে উড়ছে তামিমের চিটাগং

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
মুশফিকদের লজ্জায় ডুবিয়ে উড়ছে তামিমের চিটাগং ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

দাপুটে জয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করলো তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস। বরিশাল বুলসকে ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিল চিটাগং। ১৮৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আট বল বাকি থাকতে ১০৭ রানেই গুটিয়ে যায় বরিশালের ইনিংস।

চট্টগ্রাম থেকে: দাপুটে জয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করলো তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস। বরিশাল বুলসকে ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিল চিটাগং।

১৮৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আট বল বাকি থাকতে ১০৭ রানেই গুটিয়ে যায় বরিশালের ইনিংস।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন এনামুল হক। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ১৯ ও তাইজুল ইসলাম ১২ রান করে আউট হন। আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শোয়েব মালিক।

তিন উইকেট নিয়ে শুরুতেই বরিশাল ইনিংসে ধস নামান মোহাম্মদ নবী। তাসকিন ‍আহমেদ ও শুভাশিষ রায় দু’টি করে ‍আর বাকি দুই উইকেট নেন শোয়েব মালিক ও ইমরান খান। ১৯তম ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বির রান আউটের মধ্য দিয়ে অলআউট হয় মুশফিকুর রহিমের দল।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দুই ওপেনার ডেভিড মালান (৫) ও নাদিফ চৌধুরীকে (৪) ফিরিয়ে জোড়া আঘাত হানেন আফগান অলরাউন্ডার নবী। পরের ওভারেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শাহরিয়ার নাফিসের (১) উইকেট হারায় বরিশাল। তার স্ট্যাম্প ভাঙেন পেসার শুভাশিষ রায়।

চতুর্থ ওভারে এসে প্রথম বলেই জিভান মেন্ডিসকে (১) নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন নবী। তাসকিন আহমেদের করা সপ্তম ওভারের শেষ বলে নবীর হাতেই ধরা পড়েন মুশফিক (১৯)।

মুশফিকের পর থিসারা পেরেরাকে (০) বোল্ড করে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটান শোয়েব মালিক। নবম ওভারে রায়াদ এমরিতকে (৬) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তাসকিন। ৩৯ রানের মধ্যে সাত উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল।

তবে অষ্টম উইকেট জুটিতে ৪২ রান যোগ করে দলীয় একশ’ পার করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখেন এনামুল হক ও তাইজুল ইসলাম। খুব বেশিক্ষণ অবশ্য টিকতে পারেননি তাইজুল। ১৪তম ওভারে শুভাশিষের বলে তামিমের ক্যাচবন্দি হন। ১৭তম ওভারে আবু হায়দারের (৯) স্ট্যাম্প ভেঙে উইকেটের খাতায় নাম পেসার ইমরান খান।

এর আগে শোয়েব মালিক ও ডোয়াইন স্মিথের ঝড়ো ফিফটিতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় চিটাগং। রায়াদ এমরিতের করা শেষ ওভারের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ৩০ বলে ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেন মালিক।

৯টি চারের পাশাপাশি ২টি ছক্কা হাঁকান অভিজ্ঞ পাকিস্তান অলরাউন্ডার। সাত রানে অপরাজিত থাকেন জহুরুল ইসলাম। দু’জনের পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ১৬ বলে ৪৫।

বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চিটাগং অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ওপেনিংয়ে ক্যারিবীয় তারকা স্মিথের সঙ্গে ৪৩ রানের পার্টনারশিপে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তিনি।

পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে আউট হন তামিম (১৯)। পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির করা ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে আবু হায়দারের ক্যাচে পরিণত হন এ দেশসেরা ওপেনার।

তামিম ফিরলেও ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখেন স্মিথ। ২৮ বলে ৬টি চার ও দুই ছক্কায় অর্ধশতক তুলে নেন। আনামুল হককে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে আরো ৩৯ রান তোলেন। ১১তম ওভারে আনামুলকে (১১) ডেভিড মালানের তালুবন্দি করেন লঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা।

দলকে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত গড়ে দিয়ে ফেরেন স্মিথ। খেলেন ৪৯ বলে ৬৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। তাতে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় পেরেরার ফুলটস বলে ডিপ মিডউইকেটে এনামুল ‍হকের হাতে ধরা পড়েন। ১৮তম ওভারে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মোহাম্মদ নবীকে (৪) নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন রাব্বি।

এবারের আসরে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হয় দু’দল। ঘরের মাঠে প্রতিশোধ নেওয়ার চ্যালেঞ্জটা ভালোভাবেই পার করলো চিটাগং। গত ১৪ নভেম্বরের ম্যাচটিতে ১৬৪ রানের লক্ষ্যটা সাত উইকেট ও দুই বল হাতে রেখে টপকে যায় বরিশাল।

এদিকে, মঙ্গলবারের (২২ নভেম্বর) প্রথম ম্যাচটিতে খুলনা টাইটান্সকে সাত উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করেছে রংপুর রাইডার্স। দুইয়ে নেমে গেছে মাহমুদউল্লাহর খুলনা।

চট্টগ্রামে এসে চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেল চিটাগং। অন্যদিকে, টানা তিন ম্যাচেই জয়হীন থেকে ঢাকায় ফিরছে বরিশাল।

সাত দলের পয়েন্ট টেবিলে আট ম্যাচে চার জয় ও চার হারে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানেই চিটাগং। ৬ পয়েন্টে পাঁচ নম্বরেই রয়েছে এক ম্যাচ কম খেলা বরিশাল। শীর্ষে থাকা রংপুরের সংগ্রহ ছয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে ১০।

রান রেটে পিছিয়ে থাকায় সমান পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে এক ম্যাচ বেশি খেলা খুলনা। সাত ম্যাচে ৮ পয়েন্টে তিনে সাকিবের ঢাকা। মাত্র ‍এক ম্যাচ জিতে তলানিতে মাশরাফির কুমিল্লা (সাত ম্যাচ)। ছয় ম্যাচে চার পয়েন্টে ছয়ে অবস্থান করছে স্যামি-সাব্বিরের রাজশাহী।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৬
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।