ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কাশ্মীর ইস্যুতে মুখোমুখি আফ্রিদি-গম্ভীর

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৯
কাশ্মীর ইস্যুতে মুখোমুখি আফ্রিদি-গম্ভীর আফ্রিদি ও গম্ভীর/ছবি: সংগৃহীত

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অর্থাৎ ৩৭০ নম্বর ধারা ও ৩৫-এ অনুচ্ছেদ তুলে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই নিয়ে গোটা ভারতের রাজনীতি যখন তোলপাড়, প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও এই আঁচের বাইরে নয়। এমনকি এর ঢেউ লেগেছে ক্রিকেটাঙ্গনেও। শুরুটা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। আর আফ্রিদির মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন তার ‘অঘোষিত শত্রু’ ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া গৌতম গম্ভীর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে নিজের দুশ্চিন্তার কথা উল্লেখ করেছেন আফ্রিদি। তিনি দাবি করেছেন, জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কাশ্মীরিদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

এজন্য এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপও প্রত্যাশা করেছেন তিনি।  

এক টুইটে আফ্রিদি লিখেছেন, ‘জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কাশ্মীরিদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের সবার মতো তাদেরও প্রাপ্য স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। জাতিসংঘ কেন সৃষ্টি হয়েছিল আর কেন তারা ঘুমাচ্ছে? বিনা প্ররোচনায় কাশ্মীরে মানবতাবিরোধী আগ্রাসন সবাই মনে রাখবে। মার্কিন প্রেসিন্ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখা উচিত। ’

এদিকে আফ্রিদির এই টুইটের কড়া জবাব দিয়েছেন সাবেক ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীর। দুজনের সম্পর্ক যে তিক্ত সে কথা এখন কারো অজানা নয়। প্রায়ই কথার লড়াইয়ে জড়াতে দেখা যায় তাদের। মাঠের লড়াই থেকে এখন সেটা সামাজিক যোগযোগের মাধ্যমে এসে ঠেকেছে। এবারও তার অন্যথা হয়নি।

আফ্রিদির টুইটের জবাবে গম্ভীর লিখেছেন, ‘আফ্রিদি ঠিক পয়েন্ট ধরেছে। সেখানে (কাশ্মীরে) বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। তার (আফ্রিদি) অবশ্যই জোর গলায় এ নিয়ে বলা উচিত। তবে একমাত্র বিষয় সে উল্লেখ করতে ভুলে গেছে, আর তা হলো, এসব ঘটছে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে। চিন্তা করো না বাছা, আমরা দ্রুতই এটার সমাধান করবো। ’

গম্ভীরের এমন তীব্র কটাক্ষের জবাব এখনও দেননি আফ্রিদি। এখন দেখা যাক, তাদের এই কথার লড়াই কোথায় গিয়ে থামে।

কাশ্মীর ইস্যুতে মন্তব্য করা আফ্রিদির জন্য নতুন কিছু নয়। এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে লন্ডনে এক অনুষ্ঠানে আফ্রিদি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে মুখ খুলে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। সেবার তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান কাশ্মীরের মালিকানা চায় না। কিন্তু মালিকানা ভারতের হাতে দিতেও তার আপত্তি। তিনি বরং কাশ্মীরের স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। আর পাকিস্তান যে নিজের চার রাজ্যই ঠিকমতো সামলাতে পারছে না সে কথাও জোর গলায় বলেন তিনি।

ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী বিশেষ মর্যাদা পেয়ে জম্মু ও কাশ্মীর দেশটির অন্যান্য যেকোনো রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্বশাসিত ছিল। এমনকি পররাষ্ট্রসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ছাড়া বাকি সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ওই রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল আলাদা ক্ষমতা। কিন্তু এবার সব বাতিল হয়ে গেছে দেশটির সংবিধানের এই ৩৭০ ধারা রদ করে দেওয়ার মাধ্যমে। এরইমধ্যে এ ধারা রদ করার বিজ্ঞপ্তিতে সই করে ফেলেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ।

সোমবার (০৫ আগস্ট) সংসদে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চলমান কাশ্মীর সংকট এবং তুমুল বিতর্কের মধ্যে এ ধারা বাতিল করে অঞ্চলটির বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় বিজেপি সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে, যাতে ইতোমধ্যে সই করেন দেশটির রাষ্ট্রপতি। ফলে এখন থেকে জম্মু এবং কাশ্মীর দু’টি আলাদা ‘ইউনিয়ন টেরিটরি’ বা কেন্দ্রীয়ভাবে শাসিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হবে। আর লাদাখ কেন্দ্রশাসিত তৃতীয় একটি এলাকা হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এর বিধানসভাও থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।