ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাক্ষাৎকারে মেহেদী হাসান মিরাজ

যেদিন ১১ জন একসঙ্গে অবদান রাখবে, সেদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে

মাহমুদুল হাসান বাপ্পি. স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
যেদিন ১১ জন একসঙ্গে অবদান রাখবে, সেদিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে

বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফরমারদের একজন তিনি। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং দলের প্রয়োজনে সবকিছুতেই সবার আগে এগিয়ে আসতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

পারফর্ম করেছেন সদ্য সমাপ্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও।

প্রায় দুইদিনের ভ্রমণ ক্লান্তি, কয়েক দিন বাদেই আবার জিম্বাবুয়ের উদ্দেশে উড়াল দিতে হবে। এসবের মাঝেই মেহেদী হাসান মিরাজ কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। নিজের বোলিংয়ে উন্নতি, দলের বিশ্বকাপ জিততে হলে কী করতে হবেসহ নানা প্রসঙ্গেই এই অলরাউন্ডার জানিয়েছেন নিজের ভাবনা।

বাংলানিউজ : এক মাসের লম্বা একটা সফর কাটিয়ে এলেন। কেমন কাটল?

মিরাজ : আলহামদুলিল্লাহ, খারাপ কাটেনি। সবকিছু ভালোই হয়েছে হয়তো। টেস্ট-টি-টোয়েন্টিতে ভালো করলে আরেকটু আনন্দ লাগতো। তারপরও আমরা সবাই খুশি আছি।  

বাংলানিউজ : এত লম্বা সফর, ক্লান্ত লেগেছে কোথাও?

মিরাজ : ক্লান্তি না আসলে। এটা আমাদের পেশা, করতেই হবে। ক্রিকেট খেললে এইটুকু ক্লান্তি সহ্য করা ছাড়া উপায় নেই। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে উপভোগ করতে পারা। আমার মনে হয় দলের সবাই সেটা করেছে।

বাংলানিউজ : ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি আপনার প্রিয় প্রতিপক্ষ? ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটা তাদের বিপক্ষে, এবারও দারুণ করলেন...

মিরাজ : কেউ আসলে প্রিয় না। সব দলের সঙ্গেই পারফর্ম করতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আলহামদুলিল্লাহ ভালো পারফর্ম হচ্ছে, এতে আমি খুশি। আর ওদের ওখানে সুবিধা পেয়েছি অনেক কিছু, সেটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।

বাংলানিউজ : ২০১৯ বিশ্বকাপটা ইংল্যান্ডের মাটিতে আপনার তেমন ভালো কাটেনি। কিন্তু এখন দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভালো করলেন। উইকেট পাচ্ছেন, মিডল ওভারগুলোতে দলের ভরসা হচ্ছেন। বোলিংয়ে পরিবর্তনটা কী আনলেন?

মিরাজ : তেমন কিছু করি নাই। আগে যেমন ছিল, ওরকমই চেষ্টা করেছি। শুধু মানসিকভাবে আরেকটু শক্ত থাকতে চেয়েছি। আর দুয়েকটা ভ্যারিয়েশন যোগ করেছি। অনেক বড় পরিবর্তন করেছি, এমন না। মানসিকভাবে আরেকটু শক্ত হয়েছি। বোলিংয়ে চেষ্টা করেছি ম্যারিট অনুযায়ী বল করতে।

বাংলানিউজ : বোলিংটা কি আরেকটু আক্রমণাত্মক করছেন এখন?

মিরাজ : আক্রমণাত্মক না, পরিস্থিতি অনুযায়ী বল করার চেষ্টা করছি। কোন ব্যাটারের বিপক্ষে কী করলে কাজ হবে, সেটা বুঝে বল করি এখন।  

বাংলানিউজ : ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা ব্যাক ফুটে খেলতে গিয়েও বোল্ড হয়েছে আপনার বলে। এই ডিসেপশনটা কি নতুন যোগ করলেন?

মিরাজ : নতুন না। এটা আসলে আমি চেষ্টা করি সবসময় ভালো জায়গায় বল করার জন্য। ব্যাটার যেন ভুল করে। ভুল করে আউট হয়ে যায়। ওটাই হয়তো হয়েছে। ব্যাটাররা লাইন-লেন্থ পড়তে ভুল করেছে।

বাংলানিউজ : ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ফিরে বললেন এশিয়া বা বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্য আপনাদের। এটার জন্য কী করতে হবে?

মিরাজ : প্রথম কথা হলো, সবাইকে পারফর্ম করতে হবে। সবাই ভালো খেলতে হবে। কারণ এক-দুইজন পারফর্ম করলে এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্ট জেতা যাবে না। এজন্য দরকার সবার একসঙ্গে ভালো ক্রিকেট খেলা।

সবার পরিশ্রম করতে হবে আর মাঠে একসঙ্গে ভালো ক্রিকেট খেলা জরুরি। এটাই হচ্ছে মূল শক্তি। যেদিন আমরা বাংলাদেশের সবাই ভালো খেলবো একসঙ্গে। ১১ জন যেদিন অবদান রাখতে পারবে; তখন ইন শা আল্লাহ বড় টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা ভালো থাকবে।

বাংলানিউজ : বাংলাদেশ ওয়ানডেতে এত ভালো খেলে। কিন্তু বাকি দুই ফরম্যাটের সঙ্গে এতদিনেও মানিয়ে নিতে পারেনি কেন?

মিরাজ : মানিয়ে নিতে পারি না এমন না। আমরা যে একদম খারাপ খেলি তেমনও না। মাঝেমধ্যে ম্যাচও জিতি। কিন্তু পার্সেন্টেজটা কম। নিউজিল্যান্ডে জিতলাম, ঘরের মাঠেও অনেক টেস্ট জিতেছি, বাইরে জিতেছি।  

জিতি নাই যে ওরকম না। আমরা হয়তো জেতার পরে আমাদের ধারাবাহিকতা রাখতে পারি না। কিন্তু এটা নিয়ে সবাই কাজ করছে। চিন্তা-ভাবনা করছে, এই জায়গাতে কীভাবে উন্নতি করা যায়।  

বাংলানিউজ :  র‌্যাংকিংয়ের ছয়ে চলে এসেছেন। সাকিব আল হাসানের পর বাংলাদেশের আরও একজন কী শীর্ষে যাবে?

মিরাজ : একে যাওয়া আসলে অনেক সময়ের ব্যাপার। মনে করেন ভালো খেলতে হবে। সবসময় পারফর্ম করতে হবে। এটা তো রাতারাতি সম্ভব না, অনেক লম্বা প্রক্রিয়া। সবারই তো অবশ্যই স্বপ্ন থাকে কিন্তু এরপরও খেলছি, ভালো খেলতে খেলতে একটা সময় হয়তো হবে। যদি এটা রিচ করতে পারি, তাহলে তো অবশ্যই আমার ক্যারিয়ারের জন্য ভালো।  

বাংলানিউজ : সাম্প্রতিক সময়ে কী দলে আপনার দায়িত্বটা আরেকটু বেশি? 

মিরাজ : দায়িত্ব সবার একই সমান। কারো কম-বেশি না। যে ১১ জন খেলে, সবারই দায়িত্ব থাকে দেশের হয়ে খেলা ও ভালো পারফর্ম করা। কিন্তু এটা আলাদা চাপ না। এটাকে যতটুকু ভালোভাবে করা যায় আর কী।  

বাংলানিউজ : এত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় দেওয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ...

মিরাজ : আপনাকেও...

এমএইচবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।