পাকিস্তানের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছে থাইল্যান্ডের মেয়েরা। এর আগে পূর্ণ সদস্য দলগুলোর মধ্যে শুধু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ছিল তাদের।
এর পেছনের সবচেয়ে বড় কারিগর কোচ হার্শাল পাঠক। ছয় বছর ধরে একটু একটু করে দলকে গড়ে তুলেছেন তিনি। বুঝিয়েছেন ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মকের পার্থক্য। দ্বিতীয় বা তৃতীয় নয়, খেলতে বলেছেন প্রথম গিয়ারে।
জীবন, ক্যারিয়ার, খেলোয়াড়দের নেটে যেতে অনুৎসাহিত করার কারণ, ইতিবাচক ক্রিকেটসহ নানা বিষয় নিয়ে পাকিস্তানে ম্যাচের আগেই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় মাহমুদুল হাসান বাপ্পির। কারো যদি থাই মেয়েদের জয়কে ‘আপসেট’ বা ‘ফ্লুক’ মনে হয়, এই সাক্ষাৎকার তার ধারণা বদলেও দিতে পারে...
বাংলানিউজ : ক্রিকেটে কীভাবে জড়ালেন এটা দিয়েই শুরু করি...
হার্শাল : তখন একদমই বাচ্চা ছিলাম। রাস্তায় ক্রিকেট খেলতাম। এরপর থেকেই খেলাটার সঙ্গে সম্পর্ক। তখন হয়তো ৬-৭ বছর।
বাংলানিউজ : ভারতে তো ক্রিকেটটা ধর্মেরই মতো...
হার্শাল : আমার জন্যও তাই। জীবন, ঘর-সংসার; সবকিছুই আসলে এই খেলাটা।
বাংলানিউজ : আপনার খেলোয়াড়ি জীবন কেমন ছিল?
হার্শাল : বয়সভিত্তিক পর্যায়ে খেলেছি। কিন্তু প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে পারিনি। ২১ বছর বয়সের সময় চোখে আঘাত পেয়েছিলাম। ডান চোখে সমস্যা হয়েছিল। তখনই ক্রিকেট থামিয়ে দিতে হয়, কারণ বল ঠিকভাবে দেখতাম না। আমার কিছু সিনিয়র কোচরা বললেন কোচিং শুরু করো। কারণ আমি দলকে খুব ভালো নেতৃত্ব দিতে পারতাম। যেহেতু খেলাটার সঙ্গে থাকতে চেয়েছি, তাই ভাবতে হয়নি।
বাংলানিউজ : ক্রিকেট ক্যারিয়ার তেমন সমৃদ্ধ না। কোচিং ক্যারিয়ার নিয়ে কোনো ভয় ছিল? মানে ব্যর্থ হলে জীবিকা নিয়েও তো চিন্তা করতে হতো...
হার্শাল : না, কখনো না। এটা একটা কাজ। সেটা আপনাকে ঠিকঠাক করতে হবে। যা কিছু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, করবেন। বাকি সবকিছু ভুলে যেতে হবে।
বাংলানিউজ : আপনি তো হারমানপ্রিতের সঙ্গেও কাজ করেছেন, ওই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
হার্শাল : হারমানের ব্যক্তিগত ব্যাটিং কোচ ছিলাম আড়াই বছর। সে তখন মাত্র টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক হয়েছে। হারমান অসাধারণ নেতা। আমার দেখা অন্যতম সেরা ক্রিকেট ব্রেইন। ক্রিকেট নিয়ে মগ্ন থাকে সারাক্ষণ। যখন অধিনায়কত্ব করে, এক ধাপ এগিয়ে থাকে সময়ের চেয়ে। খেলা খুব ভালো পড়তে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার চাপের মধ্যে শান্ত থাকতে পারা, অধিনায়কদের জন্য এটা জরুরি।
বাংলানিউজ : তার সঙ্গে আপনার যোগাযোগ কীভাবে হলো?
হার্শাল : হারমানের এক বন্ধু আমার পরিচিত ছিল। সে জানতো আমি ব্যাটিং কোচ, তাই তাকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিল। ২০১৫ অথবা ২০১৬ সালের দিকে ও অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছিল। এর আগে আমার সঙ্গে ১৫ দিন কাজ করে। তাকে তখন বলেছিলাম যদি আরও কাজ করতে চায়, যেন আসে পরে। কারণ লম্বা সময় কাজ করা দরকার ছিল। পরের বছর মে মাসে সে আবার আসে। এরপর আড়াই বছর প্রায় নিয়মিতই তার সঙ্গে কাজ করেছি।
বাংলানিউজ : আপনার অনেক অভিজ্ঞতা ছিল, প্রোফাইলও বেশ ভালো। এরপরও থাইল্যান্ড নারী দলের দায়িত্ব কেন নিলেন?
হার্শাল : সত্যি কথা বললে, তখন আমি সুযোগ খুঁজছিলাম। আমার কাছে ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দল, ছেলেদের একটা জুনিয়র দলের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট আর এই চাকরির (থাইল্যান্ড) অফার ছিল। আমার একজন মেন্টর নাম প্রস্তাব করেছিল থাইল্যান্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে।
আমি পরে আমার কয়েকজন গুরুর সঙ্গে কথা বলি। শ্রীধর স্যার তখন ভারতের ফিল্ডিং কোচ ছিল, চান্ডু পান্ডিতের সঙ্গে কথা হয়েছিল তখন। তারা আমাকে বলেছিল এটা আমার জন্য খুব ভালো অভিজ্ঞতা হতে পারে।
বাংলানিউজ : ছয় বছর হয়ে গেল এই দলের সঙ্গে। এর মধ্যে প্রস্তাব পাননি কোনো?
হার্শাল : অবশ্যই পেয়েছি। নিয়মিতই পাই।
বাংলানিউজ : যাননি কেন?
হার্শাল : কেন যাইনি? ভালো প্রশ্ন...একটা ব্যাপার তো অবশ্যই যে এই দলের সঙ্গে আমার চুক্তি আছে। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে এই মেয়েদের সঙ্গে কাজ করা, এরা খুব নিবেদিত ক্রিকেটের প্রতি, ভালো করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; এদের সঙ্গে কাজ করে ভালো একটা অনুভূতি পাই।
আমার মনে হয় যদি এই দলটাকে একটা লেভেলে নিয়ে যেতে পারি। যেখানে তারা নিজের ব্যাপারটা বুঝবে, আত্মনির্ভরশীল হবে, নিজেদের জন্য ভাবতে পারবে, নিজেরা ম্যাচ জিততে পারবে; আমি তাদের ওই পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। এই দলটার জুনিয়র যারা আসবে, তারাও যেন একই রকম আক্রমণাত্মক হয় এটাই আমার লক্ষ্য।
আমি সবসময় প্যাশনের পেছনে ছুঁটেছি। এটা শুধু টাকার ব্যাপার না, কেমন কাজ করছি তাও গুরুত্বপূর্ণ। আমার জন্য খুব অনুপ্রেরণার এমন একটা দলের সঙ্গে কাজ করা যাদের ক্রিকেটের সঙ্গে এত বেশি সম্পর্ক নেই। আমি খুব খুশি যে থাইল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপে যাওয়ার পথে আমার অবদান আছে।
এরপর তারা ওয়ানডে স্ট্যাটাসও পেয়েছে, এটাও একটা অর্জন। সাড়ে তিন বছরে এটা কিন্তু কোনো কোচের জন্য কম ব্যাপার না! আমি খুব উপভোগ করি এদের সঙ্গে কাজ করা, এজন্য আসলে অন্য চাকরির সুযোগ থাকলেও যাইনি।
বাংলানিউজ : থাইল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়ে শুরুতে কী দেখলেন, আপনিই বা নতুন কী করলেন?
হার্শাল : গিয়েই টুর্নামেন্ট সিনারিও তৈরি করলাম। যেন আমি জানতে পারি তারা কীভাবে খেলে, কী করে। আমি শুধু প্র্যাক্টিসে দেখায় বিশ্বাস করি না, কারণ ওটা আলাদা ব্যাপার। যখন আপনি টুর্নামেন্টে খেলবেন ওটা প্র্যাক্টিসের চেয়ে পুরোপুরি ভিন্ন। আমি দেখতে চেয়েছি মেয়েরা চাপের মধ্যে কেমন খেলে।
এরপর যেটা করার চেষ্টা করলাম সর্বোচ্চ দিয়ে, মানসিকতা বদলাতে। আমার মনে হয় মেয়েদের ক্রিকেটে এই জায়গায় অনেক বড় বদল দরকার। টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের খেলাটা হচ্ছে রান তোলার আর এই রানও আপনাকে নিতে হবে দ্রুত। বোলিংয়ে উইকেট নেওয়া আর রান আটকানো। এখানে আপনাকে আক্রমণাত্মক হতেই হবে, বিকল্প নেই।
শুধু ইতিবাচক ক্রিকেট না। আমার মনে হয় ইতিবাচক হওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় বা তৃতীয় গিয়ার। আর আক্রমণাত্মক ইন্টেন্ট হচ্ছে সর্বোচ্চ গিয়ার। আপনাকে মাঠে গিয়ে প্রথম বল থেকেই টপ গিয়ারে খেলতে হবে, সেটাই হচ্ছে আক্রমণাত্মক ইন্টেন্ট। এই দলে আমি এটাই তৈরি করতে চাচ্ছি। আমরা ওদিকে এগিয়েও যাচ্ছি।
বাংলানিউজ : থাইল্যান্ডের মতো দলকে নিয়ে এমন কিছু সম্ভব?
হার্শাল : অবশ্যই সম্ভব। পারবো বিশ্বাস করি বলেই এখনো কাজ করছি। যদি আপনি ২০১৮ সালের আগে এই মেয়েদের স্ট্রাইক রেট, গড়, রান দেখেন আর এখনকার পরিসংখ্যান দেখেন; আশা করি আমাকে আর কিছু বলতে হবে না। এখানে উন্নতির ছাপ আছে। পরিসংখ্যানই আপনাকে এটা দেখিয়ে দেবে।
বাংলানিউজ : বেশির ভাগ ম্যাচেই হারে, এমন দলের কোচিং করানো কঠিন না?
হার্শাল : না, এটা একটা চ্যালেঞ্জ। পুরো আইডিয়াটাই এমন। যখন ঠিকঠাক চলে, সবাই ইতিবাচক থাকে। কিন্তু যখন ঠিক চলবে না সবকিছু, আপনাকে নিজের করা কাজের ব্যাপারে ইতিবাচক থাকতে হবে। মাঠে আবারও আক্রমণাত্মক হয়ে নামতে হবে। হেরে গেছেন? ঠিক আছে; মেনে নিতে হবে।
অনেক ভালো ভালো দলেরই টানা ৮-১০ ম্যাচ হারের রেকর্ড আছে। এরপর তারা ফিরেও এসেছে। তাহলে আপনি হারার ব্যাপারে কেন ভয় পাবেন? আপনাকে শুধু এটা করে যেতে হবে যেটা করা উচিত। আপনি কী পছন্দ করেন বা করেন না; ওই অনুযায়ী করলে হবে না। আমি সবসময়ই বলি, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে জরুরি জিনিসটা করা। কোনটা ভালো লাগে, কোনটা খারাপ; ইস্যু এটা না।
বাংলানিউজ : হারের পর দলকে কী বলে অনুপ্রাণিত করেন?
হার্শাল : কিচ্ছু না। কিছুই বলার নাই। আমরা জানি কোথায় ভুল করেছি, কোন জায়গায় উন্নতি দরকার। এমন না যে মেয়েরা চেষ্টা করছে না, তারা করছে। কিন্তু কখনো কখনো সবকিছু ঠিকঠাকভাবে হতে সময় লাগে। যতক্ষণ আপনার মনোভাব ঠিক আছে, তারা এটা দেখাবে; চেষ্টা করবে, ততক্ষণ আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি তাদের মধ্যে চেষ্টা দেখছি, ফল আপনারা শিগগিরই দেখতে পারবেন।
বাংলানিউজ : আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের কথা বলেছেন, এটা কি একটু ব্যাখ্যা করতে পারবেন?
হার্শাল : আক্রমণাত্মক হওয়া মানে আপনাকে কিছু করতেই হবে মাঠে। যখন ব্যাট করতে যাবেন, বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করতে হবে প্রতি বলে। যদি না পারেন, তখন সিঙ্গেল নেবেন। কিন্তু ইন্টেন্ট সবসময় বড় রানের জন্য থাকবে। রান খুঁজতে হবে।
যখন বল করবেন, ইন্টেন্ট থাকবে উইকেট নেওয়ার। যদি ব্যাটার অন্য কিছু করে, আপনাকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে, রান আটকানো লাগবে। যেন সে মারতে না পারে, সেই চেষ্টা করতে হবে।
যদি ফিল্ডিং করেন, তাহলে বল আপনার কাছে আসতে হবে। ঠিকঠাক থ্রো করার চেষ্টা করতে হবে। যতবার আপনার কাছে সুযোগ আসবে, একই কাজ করে যেতে হবে। ইন্টেনসিটি সবসময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে হবে। এটাই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। আপনি এখানে ম্যাচ জিততে এসেছেন। যখন ইন্টেন্ট থাকবে, আপনার কাজগুলোও ওরকম হবে।
বাংলানিউজ : আপনার অনুশীলনের ধরণ কেমন?
হার্শাল : আমি ম্যাচ সিনারিও ও গেম সেন্সের ওপর আস্থা রাখি বেশির ভাগ সময়। আমার মনে হয় এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি তরুণ থাকতে স্কিল শিখতে পারবেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ক্রিকেটে আপনাকে ম্যাচ সিনারিও প্র্যাক্টিস ও স্কিলের মধ্যে ভারসম্য রাখতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে টুর্নামেন্ট ও গেম সেন্স ঠিক রাখা।
বাংলানিউজ : আপনি কি তাহলে চান না ক্রিকেটাররা নেটে যাক?
হার্শাল : নেটে যেও না, ঠিক এমন বলি না। কিন্তু নেট প্র্যাক্টিসে তিন-চারজন বোলার বল করছে; এটা কিন্তু ম্যাচ আপনার কাছে চাইবে না। আপনাকে মানসিক স্কিল, কীভাবে নির্দিষ্ট সময়ে একটাই বলের প্রতি খেয়াল রাখবেন; এসব ব্যাপার ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবাই এটা নিয়ে কথা বলতে চায় না, আমি বলি ও এই ধরনের অনুশীলন করাই।
বাংলানিউজ : আপনি তো নাকি মেডিটেশনও করতে বলেন...
হার্শাল : এটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমি সবসময় সবাইকে বলি, ঠাণ্ডা মাথা ভালো সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাটিং ও বোলিংয়ের পুরো ব্যাপারটাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার। যখন আপনি ব্যাট করবেন, যদি মাথা ঠাণ্ডা থাকে ফ্রন্ট ফুট, ব্যাক ফুট, কোন শট; অটোমেটিক হয়ে যাবে কারণ আপনি অনুশীলন করেছেন।
যদি আপনার মাথা ঠাণ্ডা থাকে, পরিস্থিতিকে আরও ভালো দেখবেন। তা না থাকলে চাপ আপনার কাছে চলে আসবে, হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে মেডিটেশন মাটিতে ও বর্তমানে রাখবে। যত আপনি বর্তমান মূহূর্তে থাকবেন, আপনার শরীর ও ব্রেইন ভালোভাবে রিয়্যাক্ট করবে। ওই ধরনের অবস্থার জন্য মেডিটেশন সাহায্য করবে।
বাংলানিউজ : মানসিক স্বাস্থ্য ক্রিকেটে কত জরুরি?
হার্শাল : মানসিক স্বাস্থ্য জীবনের প্রতিটা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেটও এর অংশ। মানসিক স্বাস্থ্য খুব অদ্ভূত একটা টার্ম। আমি জানি না কেউ এটাকে ব্যাখ্যা করতে পারবে কী না। আমি বিশ্বাস করি মানসিক স্বাস্থ্য মানে খুশি ও শান্ত থাকা, বর্তমানে থাকা। এটা ক্রিকেট না, জীবনের সবকিছুতে গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলানিউজ : থাইল্যান্ডের ক্রিকেটের অবস্থা কেমন?
হার্শাল : খুব জনপ্রিয় না এই মুহূর্তে। আমরা বিশ্বকাপে পৌঁছানোর পর, খেলা নিয়ে মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছে। তারা জেনেছে থাইল্যান্ড ক্রিকেট খেলছে। জনপ্রিয়তা আমার মনে হয় মাত্র শুরু হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অনেক কাজ করছে। তারা একদম মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছে।
বাংলানিউজ : আপনার অধীনে থাইল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলেছে, ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছে। ভাবলে কেমন লাগে?
হার্শাল : এক কথায় বললে খুব গর্ব হয়। আমরা অল্প সময়ে এমন কিছু অর্জন করেছি যেটা করতেই হতো। অনেকে জানে না, আমরা টানা ১৭ম্যাচ জিতেছিলাম। অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিলাম। যদিও এটা পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে না। কিন্তু রেকর্ড তো রেকর্ডই। এটা যেহেতু করেছি, মানে আমরা সঠিক পথে আছি।
বাংলানিউজ : ভারতের মতো ক্রিকেট পাগল দেশে আপনার জন্ম, ক্রিকেট খেলা, বেড়ে উঠা। এখন ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা একদম কম এমন একটা দেশে কাজ করছেন। আপনার কি মনে হয় ক্রিকেটে বড় ও ছোট দলগুলোর মধ্যে তফাৎ অনেক বেশি?
হার্শাল : হ্যাঁ, অনেক বড় ব্যবধান। আমার নিজের কাছে মনে হয় ব্যবধান স্কিল, ফিটনেস, সুযোগ-সুবিধার না; পার্থক্য মানসিকতায়। নতুন দলগুলোকে যদি এগিয়ে আসতে হয়, তাহলে মানসিকতা বদলাতে হবে। তখন হয়তো তারা সফল হবে।
বাংলানিউজ : কোচ হিসেবে কী স্বপ্ন দেখেন?
হার্শাল : এটা স্বপ্ন না আসলে...আমার চেষ্টা হচ্ছে যেখানেই যাই, যেন এমন পরিবেশ তৈরি করতে পারি খেলোয়াড়রা আত্মনির্ভরশীল হতে পারে। পরিস্থিতি সামলানো ও দলের জন্য ম্যাচ জেতা যেন তারা নিজেরাই করতে পারে। যখন আমি এমন কিছু করতে পারি, একরকম দল তৈরি করি, খুব আনন্দ লাগে।
আমি বিভিন্ন পর্যায়ে এমন করেছি। রাজ্য, প্রথম শ্রেণির, একাডেমির দল এবং এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও করছি। আশা করছি বড় কোনো দলের হয়েও এমন অবদান রাখতে পারি।
বাংলানিউজ : ভারতের কোচ হতে চান না?
হার্শাল : কে চায় না? এটা সবার স্বপ্ন!
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এমএইচবি/আরইউ