চট্টগ্রাম: তখনকার শিক্ষকরা কঠোর শাসনের মাধ্যমে শিক্ষা দিতেন, স্নেহও করতেন। তাই আজ প্রতিষ্ঠিত হয়ে পিতৃতুল্য শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি।
চন্দনাইশ উপজেলার শুচিয়া রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয় ’৯১ ব্যাচের প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিব হোসেন এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুচিয়া রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজের মাধ্যমে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ৯১ সালের প্রাক্তন শিক্ষক (মরণোত্তর) ও বর্তমান শিক্ষকদের যে সম্মান ১৯৯১ ব্যাচ দিয়েছে, তা আমাকে আনন্দিত করেছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম এর প্রাক্তন উপ-পরিচালক দেবব্রত দাশ। সভাপতিত্ব করেন ৯১ ব্যাচের ছাত্র মো. আহছান উদ্দীন চৌধুরী। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের যুগ্ম সদস্য সচিব সাংবাদিক রাজেশ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব সুজন দেব। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দিলীপ ভট্টাচার্য্য, তৃষিত চৌধুরী, কিশোর চৌধুরী, প্রভাকর বড়ুয়া।
পুরনো দিনের স্মৃতি বুকে ধারণ করে ৯১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এদিন মিলনমেলায় যোগ দেন। কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সকাল ১০টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পরে প্রয়াত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ৯১ ব্যাচের মৃত্যুবরণকারী বন্ধুদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠান চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর বন্ধুরা একত্রিত হওয়ায় এক উৎসবমুখর ও আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বন্ধুদের পেয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কেউ কাঁদেন আবেগে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো. রাজিব হোসেনের হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন সাবেক প্রধান শিক্ষক করুণাময় দাশ ও রতন চক্রবর্তী, বর্তমান প্রধান শিক্ষক টিক্লু দাশ গুপ্ত, সাবেক সিনিয়র শিক্ষক সবিতা সিকদার, দিবাকর বড়ুয়া ও সলিল চক্রবর্তী। মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়া হয় সাবেক প্রধান শিক্ষক দিলীপ কান্তি মজুমদার, সিনিয়র শিক্ষক সুকুমার বড়ুয়া, শান্তিপদ দাশ, অজিত কুমার বড়ুয়া, তপন কান্তি চৌধুরী, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রত্না প্রভা বড়ুয়াকে। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। পরে বর্তমান সকল শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
মিলনমেলা অনুষ্ঠানে ৯১ ব্যাচের বন্ধুদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন গৌতম ভট্টাচার্য্য, নেপাল শীল, লিপি দেব, সিরাজুল হক, বিজন দে, ত্রিদিব দেব, করবী দাশ, প্রবীর চৌধুরী, লিটন পাল, সজল ভট্টাচার্য্য, সময় ভট্টাচার্য্য, বিথী বড়ুয়া, শম্পা দাশ, নূপুর বড়ুয়া, উত্তম চৌধুরী, দিপক হোড়, শিমলা বিশ্বাস, ইতি তালুকদার, ঝর্ণা দেব, আলমগীর আলম, ভবতোষ চৌধুরী, অনুপ বড়ুয়া, মিল্টন চৌধুরী, পূর্ণিমা আচার্য্য, প্রণতি চৌধুরী, শিব নারায়ণ চক্রবর্তী, সুবল দে, মহিউদ্দীন চৌধুরী, দিলীপ হোড়, তরুণ চৌধুরী, চম্পা দেব, মিন্টু আচার্য্য, রাম প্রসাদ দেব, প্রিয়তোষ বড়ুয়া, জিতেন বিশ্বাস, পুষ্পেন বড়ুয়া, নিতিশ বড়ুয়া, দয়াল দাশ, পূর্ণিমা সামন্ত, সুবল দে, প্রিয়তোষ বড়ুয়া, শিল্পী ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
দিনব্যাপী আড্ডা, আলাপচারিতা, শিক্ষাগুরু ও পুরোনো বন্ধুদের নিয়ে ফটোসেশন, বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ এবং র্যাফেল ড্র’র মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। বিদায়বেলায় বন্ধুরা গেয়ে গেলেন সেই গান-‘আবার হবে তো দেখা, এ দেখাই শেষ দেখা নয়তো...’।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
এসি/টিসি