ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফিরে দেখা ২০১৫

চবিতে নতুন উপাচার্য, নতুন নিয়ম

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
চবিতে নতুন উপাচার্য, নতুন নিয়ম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চার বছর দায়িত্ব পালনের পর পুনরায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্যের পদে বসার ইচ্ছে ছিল অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফের। এ লক্ষ্যে তিনি সব প্রস্তুতি সম্পন্নও করেছিলেন।

  চলতি বছরের (২০১৫) ৬ জুন ঘোষণা করেছিলেন উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখও। সঙ্গে ওপরের মহলে দেন-দরবার তো ছিলই।
  কিন্তু তার আগেই ২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ।

নতুন উপাচার্য হিসেবে ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী দায়িত্ব নেন ১৫ জুন।   দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে প্রশাসনের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন এনেছেন তিনি। দায়িত্ব হারানো শিক্ষক-কর্মকর্তারা সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন।   দায়িত্ব পালনকালে তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই উঠেছিল নানা অনিয়মের অভিযোগ।

চলতি বছর চবিতে পরিবর্তন এসেছে রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টর, তিন প্রাধ্যক্ষ, তিন সহকারী প্রক্টর, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান গ্রন্থাগারিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে। এ পদগুলোই প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।   এ ছাড়া বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষকসহ নানা পদেও পরিবর্তন এসেছে ২০১৫ সালে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হুদা। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছেন রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, প্রক্টরের দায়িত্ব নিয়েছেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী।
 
এ ছাড়া আলাওল, প্রীতিলতা ও শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ সফিউল আলম, শামীমা ফেরদৌসী ও মাইনুল হাসান চৌধুরী।   তিন সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, হেলাল উদ্দিন আহম্মদ ও লিটন মিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারিক হিসেবে মোহাম্মদ আবু তাহের এবং প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে মো. আবু সাঈদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চালু হয় নতুন নিয়ম।   ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০০তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি এ সভায় আগামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবারের পাশাপাশি শনিবারও করার সিদ্ধান্ত হয়।

নতুন নিয়মানুসারে শিক্ষক পদে নিয়োগ-প্রত্যাশীদের এখন থেকে লিখিত পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশনে অংশ নিতে হবে।   পাশাপাশি মৌখিক পরীক্ষা তো আছেই।

সবমিলিয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে নিয়োগ-প্রত্যাশীদের।   এর মধ্যে লিখিত ৫০ নম্বর, সাক্ষাৎকার ২৫ নম্বর ও প্রেজেন্টেশন ২৫ নম্বরের।   সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করা হলেও দাপ্তরিক সময় বাড়িয়ে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত করা হয়েছে।   আগে এটি ছিল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।   নতুন বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকে এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ ওঠেনি, বরং সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নেওয়া যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।   শিক্ষক সমিতিও স্বাগত জানিয়েছে এ নতুন নিয়মকে। এর ফলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অযোগ্য শিক্ষককেরা নিয়োগ পাবেন না বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক কামরুল হুদা বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ-প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো প্রশ্ন না উঠে, সে জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে শিক্ষক নিয়োগে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলো। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
টিএইচ/এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।