ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

খাদ্যের গুণগত মান ফুলকলিকে শিখরে পৌঁছে দিয়েছে

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৬
খাদ্যের গুণগত মান ফুলকলিকে শিখরে পৌঁছে দিয়েছে ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: আমদানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হাজী শাহ আলম নগরীর বাকলিয়া এলাকায় একটি মিষ্টি ও বিস্কুট তৈরির কারখানা করেন ২০০২ সালে। উৎপাদিত মিষ্টি ও বিস্কুট বিক্রি করা হয় আন্দরকিল্লা বকশিরবিটে ‘ফুলকলি’ আউটলেটে।



গুণগত মান বজায় রেখে খাদ্য উৎপাদনের কারণে চট্টগ্রাম আলোড়ন সৃষ্ট করে ফুলকলি ব্রান্ডের মিষ্টি, স্ন্যাক্স ও বিস্কুট। শুরুর দিকে লোকসান গুনতে হলেও অল্প সময়ের মধ্যে খ্যাতি লাভ করে ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড।
বাড়তে থাকে বিক্রয় কেন্দ্র। কিছু দিনের মধ্যেই নগরীর নাছিরাবাদে আরেকটি কারখানা তৈরি করা হয় ফুলকলি ব্রাড ও বিস্কুট উৎপাদনের জন্য।

বর্তমানে সিলেট ও নারায়নগঞ্জে ফুলকলির কারাখানা রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে ফুলকলির উৎপাদিত খাদ্য পণ্য সরবরাহ করতে পটিয়ায় বিশাল কারখানা করা হয়েছে।   সারা দেশে বর্তমানে ১১০টি প্রদর্শনী কেন্দ্রে  বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। সরবরাহ করা হচ্ছে গ্রাম থেকে লোকালয়ে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে ফুলকলি ব্রান্ডের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে।  

কেবল একটি বিক্রয় কেন্দ্র থেকে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হওয়ার একমাত্র কারণ খাদ্যের গুণগত মান ও বিশ্বাস যোগ্যতা। এমনটাই বললেন, ফুলকলি ব্রাড এন্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড’র পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল উদ্দিন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খাদ্যের গুণগত মান রক্ষার বিষয়ে আমরা দৃড় প্রতিজ্ঞ। কারণ গ্রাহকরা গুণগত মানের কারণেই ফুলকলি ব্রান্ডকে বেছে নিয়েছে।

গ্রাহকদের এই আস্থা ধরে রাখতে আমরা কোন কার্পণ্য করিনা।

ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বাবার ব্যবসার হাল ধরে পরিসর বাড়িয়েছেন শাহ আলমের বড় ছেলে ইকবাল উদ্দিন। পরে যুক্ত হয়েছে দুই ছোট ভাই জহির উদ্দিন ও কফিল উদ্দিন। ঢাকা ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করা ইকবাল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মূলত ব্যবসার পরিসর বাড়তে থাকে। বর্তমানে গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে ফুলকলি।

তিনি জানান, ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস কারখানা থেকে যাত্রা করে বর্তমানে ফুলকলি ব্রাড এন্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রি(নাছিরাবাদ), ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস(সিলেট), ফুলকলি এন্ড কোং (পটিয়া), ফুলকলি সুইটস লিমিটেড(ঢাকা, নারায়নগঞ্জ) মান সম্পন্ন খাবারের চাহিদা পূরণ করছে। এছাড়া ফুলকলি অটোমোবাইল বেশ সাড়া জাগিয়েছে খুব কম সময়ে। আছে ফুলকলি প্রোপার্টিস। চলতি বছরের মার্চ বা এপ্রিলে পিউরিয়া ফুড প্রোডাক্টস নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান চালু হবে।

২০০৮ সালে পড়ালেখা শেষ করে বাবার ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে পরিচালক হিসেবে যোগ দেওয়া ইকবাল বলেন, ‘ব্যবসার শুরুতে লোকসান দিতে হয়েছে। কিন্তু গুণগত মান বজায় রাখার কারণে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে ফুলকলি। ’

সুযোগ থাকলেও অন্য কোন পেশায় না গিয়ে বাবার ব্যবসার হাল ধরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাবা সফলতার সঙ্গে একটি কারখানা দিয়েই ব্যবসা চালিয়ে গেছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিসর আরো বাড়িয়েছি।

ফুলকলি অটোমোবাইল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উল্লেখ ইকবাল বলেন, গাড়ির ব্যবসাতেও ফুলকলির সুনাম কাজে লাগিয়েছি। কম লাভ করে মানসম্পন্ন গাড়ি বিক্রি করার কারণে মার্কেটে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খুব কম সময়ে।

তিনি বলেন, আমরা জাপান থেকে ভাল মানের গাড়ি আমদানি করি। দামও কম। ফলে গ্রাহক আমাদের প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিচ্ছে।

দেশিয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে ফুলকলির ব্রাড ও বিস্কুট বিদেশে রফতানি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিস্কুট, কেক, নুডলস, টোস্ট বিস্কুট রফতানি করছি।

ব্যাবসায় সফলতার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার কথাও তুলে ধরেন ইকবাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছি না।

উ‍ৎপাদিত পণ্যের ভ্যাট কমানো প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ভ্যাট কমালে পণ্যের দাম কমে আসতো। এতে ভোক্তারা সুবিধা পেতেন। বর্তমানে খাদ্য পণ্যের উপর যে ভ্যাট তা বেশি। এটা মূলত ভোক্তাদেরকেই দিতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৬
এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।