কাছে যেতেই ছেঁড়া কাপড়টি হাত থেকে ফেলে এগিয়ে আসলেন নিজে। টুকটাক আলাপ সেরে নির্বাচনী কথার শুরুতে মুহুর্তে চেহারাটা মলিন হয়ে গেল তার।
এনায়েত বাজার এলাকায় রাত দেড়টার দিকে কথা হয় নির্মাণ শ্রমিক অপু শীলের সঙ্গে।
ভোট দিয়ে তার কী লাভ প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও অপু শীল বলেন, ‘গত বার ভোট দিতে পারিনি। এবার ভোট দিতে চাই। ’
জলসা মার্কেটের সামনে আগুন পোহাতে দেখা যায় কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীকে। আগুন তাপিয়ে তারা শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। ফাঁকে নির্বাচনী আলাপে ব্যস্ত ছিলেন তারা। তাদের মধ্যে রাসেল মিয়া নামে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ভোট এসেছে, তাই তারা আমাদের ঘুমাতে দিচ্ছে না। ভোট গেলে তাদের খুঁজেও পাওয়া যাবে না। ’
পৌষের শুরুতে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে বইছে ভোটের ঝড়। এতদিন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের কাছে শীতও ঘেষতে সাহস পায়নি। দিন-রাত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন তারা।
দুয়ারে ভোট। হাতে সময় নেই। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তার আগে শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে শেষ হবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। এখন অপেক্ষা ব্যালটে ঝড় তোলার। পৌষের ঠিক মাঝামাঝি সময়ে কনকনে শীতের সকালে ভোটকেন্দ্রে দেখা মিলবে ভোটারের দীর্ঘসারি।
শুক্রবার রাতে নগরের অলিগলি ঘুরে ভাসমান ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাত কাটাবার জন্য ঘর নেই। তবে ভোট এলেই কদর বেড়ে যায় তাদের। অনেক প্রার্থী নানা উন্নয়নের ফুলঝুরি নিয়ে হাজির হন ঠিকই, কিন্তু ভোট শেষে তাদের আর দেখা মেলে না।
নগরের ভাসমান ভোটারের সঠিক কোনো হিসাব নেই। কিন্তু প্রতিবারই প্রার্থীরা তাদেরকে ট্রাম্প কার্ড বানিয়ে জিতে যান। এরপর পিঁছিয়ে পড়া মানুষগুলোর ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন হয় না। নির্বাচন যায় নির্বাচন আসে, সবার ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও এসব মানুষের ঠিকানা ওই ফুটপাত কিংবা বস্তিতে রয়ে যায়।
তাই এসব মানুষদের চাওয়া, যেই জিতুক, তাদের ভাগ্য যেন পরিবর্তন হয়। অন্তত মাথা গুজার ঠাঁই যেন তাদের হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
এসইউ/টিসি