প্রতিবছর নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিভাগের সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকদের ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হলেও এ বছর দেওয়া হয়েছে ব্লেজার। যার খরচ বহন করা হয়েছে অনুষদের উন্নয়ন ফান্ড থেকে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় ১৮ জন শিক্ষককে উপহার হিসেবে ব্লেজারগুলো দেওয়া হয়। আগামী ৪ মার্চ এই অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।
ব্লেজারগুলো তৈরি করা হয় চট্টগ্রামের ইউনুসকো সিটি সেন্টারের জিআর টেইলার্স থেকে। প্রতিটি ব্লেজারে খরচ হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। সেই হিসেবে ১৮টি ব্লেজারের খরচ ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা৷ খরচের পুরো টাকা অনুষদের উন্নয়ন ফান্ড থেকে দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রতি বছর ভর্তির সময় ‘অনুষদ উন্নয়ন ফি’ হিসেবে সাড়ে তিন হাজার টাকা জমা দিতে হয় একেকজন শিক্ষার্থীকে। এরমধ্যে তিন হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব বিভাগে এবং পাঁচশ টাকা অনুষদের উন্নয়ন ফান্ডে রাখা হয়। অনুষদের বিভিন্ন কাজে উন্নয়ন ফি’র এ টাকা খরচ করা হলেও ইউজিসিকে এর কোনো হিসেব দেওয়া লাগে না। প্রতিবছর নবীনবরণ অনুষ্ঠানের যাবতীয় খরচ অনুষদের এ ফান্ড থেকেই বহন করা হয়।
অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের একাধিক সভাপতির সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বাংলানিউজকে বলেন, ব্লেজারের টাকাগুলো কোন খাত থেকে দেওয়া হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তবে এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতিদের সঙ্গে একটি মিটিংয়ে এ বছর ক্রেস্টের পরিবর্তে শিক্ষকদের কাজে আসে এমন কিছু দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এর খরচ কোন ফান্ড থেকে দেওয়া হবে সেটা জানানো হয়নি।
অনুষদের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ব্লেজার কেনার টাকা ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া উন্নয়ন ফি থেকেই দেওয়া হয়েছে। কারণ, এ টাকার হিসেব ইউজিসির কাছে দিতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও এর হিসেব নবীনবরণের খরচের সঙ্গে মিলিয়ে দেখানো হবে। একজন শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া টাকায় ব্লেজার উপহার নেওয়া বা গায়ে দেওয়া লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় অনুষদের মিটিংগুলো দুপুরে রাখা হয়। মিটিং শেষে সবাইকে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। যার খরচ অনুষদের এই ফান্ড থেকে দেওয়া হয়। সাধারণত অনুষদের ফান্ডে যে টাকা থাকে সেটা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া উন্নয়ন ফি’র টাকা।
এ বিষয়ে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। ব্লেজারের বিষয়টি সদ্য সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী দেখেছেন।
অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে বাংলানিউজকে কিছু বলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬ , ২০২০
এমএ/এসি/টিসি