চট্টগ্রাম: নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি, গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। পিসিটি, বে টার্মিনাল, মাতারবাড়ী হাতছানি দিচ্ছে।
করোনাকালে বন্দরে এসে আপনাদের সংকল্প দেখেছি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার।
রোববার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বারিক বিল্ডিং মোড় এলাকায় সার্ভিস জেটিতে বন্দরের জন্য কেনা কাণ্ডারী ৬ টাগবোট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সঠিক নেতৃত্ব পেয়েছি বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে। বন্দরে বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে ধরনা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বন্দর গতিশীল হয়েছে। সরকার প্রধান দেশরত্ন শেখ হাসিনা ১২ বছর ধারাবাহিক দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন৷ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অগ্রগতি অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। অনেক ধনী দেশ মুখ থুবড়ে পড়েছে শুধু নেতৃত্বের কারণে৷ বঙ্গবন্ধু না হলে আমাদের স্বাধীন সত্তা থাকতো না। অনেক নেতা ছিলেন, বঙ্গবন্ধুই পথ দেখিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি মেরিটাইম নিয়ে ভেবেছিলেন, আইন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি সাড়ে তিন বছরে দেড়শ আইন করেছিলেন দেশকে এগিয়ে নিতে। বঙ্গবন্ধু ভিত্তি রচনা করে দিয়েছিলেন সোনার বাংলার।
তিনি বলেন, চুয়াত্তর সালে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল সপরিবারে। শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়েছিল। কী নির্মম, কী পৈশাচিক। এ হত্যাকাণ্ড জায়েজ করতে জিয়া এরশাদ খালেদা অনেক অপকর্ম করেছে, কিন্তু পারেনি। লুটেরা, স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে অর্থনীতি তুলে দেওয়া হয়েছে। আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকাণ্ড হয়েছে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়েছে।
এসময় তিনি সুইচ টিপে কাণ্ডারী ৬ টাগবোটের নামফলক উদ্বোধন করেন।
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বন্দর নিরলস কাজ করছে দেশের উন্নয়নের জন্য। জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সমন্বয় করে বন্দরকে করোনাকালে ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন চালু রেখেছিল। তখন বিশ্ব স্থবির ছিল। আমদানি রফতানি নির্বিঘ্ন করতে অফডক, শিপিং এজেন্ট, এমএলও, ফিডার সার্ভিস, সড়কপথে কনটেইনার পরিবহনে করোনাকালে আগে থেকে সম্ভাব্য ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের বন্দরে জাহাজের ওয়েটিং টাইম জিরো। ফরেন কারেন্সি সাশ্রয় হচ্ছে। জাহাজ ভাড়া, ইন্সুরেন্সের প্রিমিয়াম কমে গেছে। আমরা পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে ১৩৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছি, এ বছর ৩২ লাখ ১৪ হাজারের বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছি। সক্ষমতা বাড়িয়েছি কনটেইনার ধারণক্ষমতা। দু-তিন মাসের মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল উদ্বোধন করতে পারবো। বে টার্মিনাল হলে বড় জাহাজ দিন-রাত ভিড়তে পারবে। মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দর হবে ডিপ সি পোর্ট। ইউরোপের সঙ্গে সরাসরি কনটেইনার পরিবহন শুরু করেছি আমরা। এতে ভাড়া ও সময় সাশ্রয় হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমি বন্দর চেয়ারম্যান হতে পেরেছি। দেশের অর্থনীতির সোপান চট্টগ্রাম বন্দরকে রাশিয়ার সহযোগিতায় মাইনমুক্ত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি জানতেন, অর্থনীতির চালিকাশক্তি বন্দর।
ওয়েস্টার্ন মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, আমরা আনন্দিত কাণ্ডারী ৬ হস্তান্তর করতে সক্ষম হয়েছি। জাহাজ নির্মাণশিল্পে অনেক ব্যাকওয়ার্ড শিল্প গড়ে উঠেছে। দেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দিলে আমরা পারবো। তিনি বিল্ডার্স সনদ, রেপ্লিকা, ক্রেস্ট হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বন্দর সচিব মো. ওমর ফারক। উপস্থিত ছিলেন বন্দরের সদস্য মো. জাফর আলমসহ নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসসির এমডি, মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট, বন্দর সিবিএ নেতৃবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারীরা।
>> চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস জেটি উদ্বোধন
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২২
এআর/এসি/টিসি