ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর ঘটনা তদন্তে কমিটি

আল রাহমান ও বাইজিদ ইমন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২২
সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর ঘটনা তদন্তে কমিটি ছবি: বাংলানিউজ

বিএম ডিপো থেকে (চট্টগ্রাম): সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।  

রোববার (৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে তিনি সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

 

বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন), পরিচালক (পরিবহন) ও পরিচালক (নিরাপত্তা)। বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।

কনটেইনার ডিপোতে শনিবার (৪ জুন) রাতে আগুন লাগার পর রাত ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডের ১৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।  ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।  ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন রয়েছেন।  ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আগুন কখন নিয়ন্ত্রণে আসবে সঠিক বলা যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

বিএম ডিপোর জিএম (সেলস) নাজমুল আকতার খান সাংবাদিকদের জানান, এ ডিপোর ধারণক্ষমতা ১০ হাজার টিইইউসের বেশি। শনিবার ৪ হাজার ৩০০ টিইইউএস কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে ৩ হাজার খালি কনটেইনার। রফতানি পণ্যভর্তি ৮০০ কনটেইনার। আমদানি পণ্যভর্তি ৪০০ কনটেইনার ছিল। হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কনটেইনারগুলো রফতানির জন্য রাখা হয়েছিল।  

তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় দুই শিফটের ২ শতাধিক কর্মী ছিলেন ডিপোতে। আগুনে কেমিক্যাল বোঝাই কনটেইনার ছাড়াও কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন (সিএফএস) শেড পুড়ে গেছে।

বিএম কন্টেইনার ডিপো মালিকপক্ষের প্রতিনিধি নির্বাহী পরিচালক শহীদ উদ্দিন বলেন, কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও হতাহতের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এই মুহূর্তে নিহতের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহত যারা হয়েছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে সর্বোচ্চ ও যারা আহত হয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করা হবে। একইসাথে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব গ্রহণের ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনসহ সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছে। এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা বা কোনও প্রতিপক্ষ দ্বারা ইচ্ছাকৃত অনিষ্ট সাধন, তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

কলকারখানা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি

বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

অধিদপ্তরের সহকারী মহিপরিদর্শক শিপন চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে শ্রম পরিদর্শক (স্বাস্থ্য) শুভংকর দত্তকে। আরেক সদস্য হলেন শ্রম পরিদর্শক (নিরাপত্তা) মো. শামীম হোসেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সর্বপ্রথম মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছি। আমরা আগে উদ্ধার অভিযান শেষ করি। এরপর সব পক্ষকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
এআর/বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।