আগরতলা থেকে: ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য শুরু হয় মূলত ত্রিপুরার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। ব্যাপক বাণিজ্যের কারণে এটি এখন মর্যাদা পেয়েছে ইন্টিগ্রেটেট চেকপোস্ট হিসেবে।
শনিবার (১১ জুলাই) সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে একথা জানান ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স ত্রিপুরা রাজ্য চ্যাপ্টারের সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে বাণিজ্য শুরু হয় ১৯৯৬ সালে ইলিশ আমদানি দিয়ে। ১৯৯৯ সালে এ রাজ্যে আমদানি শুরু হয় প্রাণ পণ্যের। অন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরে ভারতের শিল্প-কলকারখানা থেকে পিছিয়ে থাকা অন্য ছয় রাজ্যেও বিস্তার লাভ করে।
প্রশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের সাত রাজ্যে কোনো শিল্প পণ্য উৎপাদিত হয় না শিল্প-কলকারখানা নেই বলে। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যের দূরত্ব ৪/৫শ’ কিলোমিটার করে। আগরতলা থেকে কলকাতার রেলপথের দূরত্ব ১৭০০ কিলোমিটার। পাহাড়ি রাস্তা বলে ট্রাক চলাচল করতে পারে না। আর খরচ এত বেশি পড়বে, ভাবাও যায় না।
তিনি বলেন, সময় সাশ্রয় ও খরচ কমাতে আমরা বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কেননা এতে ক্রেতার হাতে অতি দ্রুত পণ্য তুলে দেওয়া যায়। আগরতলার মূল শহর মহারাজার রাজবাড়ি থেকে আখাউড়া সীমান্ত মাত্র তিন কিলোমিটার। রিকশা ভাড়া ২৫/৩০ রুপি।
প্রশান্ত ভট্টাচার্য জানান, প্রাণ ছাড়াও আবুল খায়ের গ্রুপ, আকিজ এবং আল-আমিনসহ কোম্পানিগুলো ফ্রুট জুস, বিস্কুট-পাউরুটি ও অন্য খাবার রফতানি করে। তবে এখন সিমেন্ট বেশি আমদানি হয় বাংলাদেশ থেকে। ব্যাটারিও আসে।
আগে কিছুদিন ইট আমদানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। পরে অজ্ঞাত কারণে বাংলাদেশ ইট রফতানি বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ মেঘালয় থেকে পাথর আমদানি করে ক্রাশ করে পরে ত্রিপুরায় তা রফতানি করে। কারণ এতে আমাদের খরচ কম পড়ে।
আশার মধ্যে হতাশার চিত্রটাও বাংলানিউজের কাছে তুলে ধরলেন প্রশান্ত ভট্টাচার্য। তিনি জানান, আখাউড়া স্থলবন্দর ইন্টিগ্রেটেট চেকপোস্ট চালু হওয়ায় নানা নিয়ম কানুন চালু হয়েছে। নিয়মের বেড়ার জালে পড়ে ব্যবসায়ীরা আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। যে কারণে ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। আগে বাংলাদেশ থেকে বছরে ৩৫০/৪০০ কোটি টাকার পণ্য আসতো। এখন তা ১০০/১৫০ কোটিতে নেমে এসেছে। এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে বছরে মাত্র এক/দেড় কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়। এখান থেকে কমলা, আদা ও টমোটে যায় বাংলাদেশে।
প্রশান্ত ভট্টাচার্য কথা প্রসঙ্গে জানালেন ব্যবসার কারণে তাকে প্রায়ই ঢাকা যেতে হয়। ঢাকাকে তিনি সেকেন্ড হোম মনে করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৫
এসএস/এএ