আগরতলা, (ত্রিপুরা): ‘ভারতের শ্রেষ্ঠ-ভাষা বাংলা ও তার ধারক বাহক বাঙালি জাতিকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেওবার জন্যে এক গভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত কাজ করে চলেছে’।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করা আমরা বাঙালি দলের তরফ থেকে।
এ দিন রাজধানীর শিবনগর এলাকার দলীয় কার্যালয় আমরা বাঙালির রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল অভিযোগ করে বলেন, ভারতের স্বাধীনতার পর থেকেই ত্রিপুরা, উত্তরপূর্বাঞ্চল তথা গোটা দেশজুড়ে বাঙালিদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। জিলাপরিষদ গঠন, বিদেশি বিতাড়ন, এনআরসি ইত্যাদি আইনের নাম করে ভারতের মাটিতে ভূমিপুত্র বাঙালিদের ভূমির অধিকার, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি করার অধিকার থেকে শুরু করে সব নাগরিক অধিকারই ধীরে ধীরে অত্যন্ত সুকৌশলে কেড়ে নেওয়ার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির উন্নত ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেওবার জন্যেও দীর্ঘদিন ধরেই দেশজুড়ে ষড়যন্ত্রের নীল নকশার জাল বোনা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৬১ সালে আসামের মাটিতে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার জোর করে বাংলাভাষাকে বাদ দিয়ে অসমিয়া ভাষা চাপাতে চেয়েছিল। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে ৬১-এর ১৯ মে তারিখে ১১ জন বাঙালি তরুণ-তরুণী আসামের শিলচরের মাটিতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই করিমগঞ্জ জেলায়। সেদিনও মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাস নামে দুইজন বাঙালি আসাম পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে আসামে বাংলাকে বাদ দিয়ে আবারও অসমিয়াকে আবশ্যিক পাঠ্য হিসেবে স্থান করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান বিজেপি সরকারেরর আমলে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটে। সম্প্রতি বিজেপি যে নূতন শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছে সেখানে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধ্রুপদী ভাষার তালিকা থেকে বাংলাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, অথচ বাংলা শুধু ভারতের সংবিধান স্বীকৃত অন্যতম ভাষাই নয়, আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ভাষা।
আমরা বাঙালি অংল জাতি বিদ্বেষী উল্লেখিত ঘটনাগুলোকে তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানায়। সেই সঙ্গে চক্রান্তকারীরা যাতে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত থাকেন তার জন্যে অনুরোধ জানান। নতুবা ভবিষ্যতে বাংলা ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতিও বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব, অধিকার রক্ষা করতে আমরা বাঙালি দল দেশজুড়ে তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তুলব।
এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যান্য নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২১
এসসিএন/এএটি