কলকাতা: বাংলাদেশের দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে থাকাকালে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ও তার সহযোগীদের ১৪ দিনের জেল কাস্টডি (জেসি) হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) কলকাতার আদালতে ১৪ দিনের রিমান্ডের এ আদেশ হয়।
পরে আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, শেষ ১৪ দিনের রিমান্ডে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে কলকাতা ও তার সংলগ্ন আরও ৪৫টা সম্পত্তি পাওয়া গেছে। যেগুলো পি কে হালদারের থেকে তার ভাই প্রানেশ কুমার হালদারদের নামে ‘ট্রান্সফার’ হয়েছে। পরে সেগুলো পি কের সহযোগী সুকুমার মৃধার নামে হস্তান্তরিত হয়। এরসঙ্গে বেনামি আরও ৮০ লাখ রুপি পি কে হালদারদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।
এছাড়াও আরেক অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে একটি ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বর্তমানে ওই ব্যক্তি কর্ণাটক রাজ্যে আছেন। তার খোঁজ চলছে। সেই ফ্ল্যাটের অর্থ পি কে হালদার দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
এর সঙ্গে পি কে হালদার স্বীকার করেছেন যে, ৫০-৬০টা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন হতো। সেগুলো সবগুলোই অবৈধ অ্যাকাউন্ট। বাংলাদেশি নাগরিকরা অবৈধ ভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অ্যাকাউন্টগুলো খুলেছিল। যা পি কে হালদার স্বীকার করে নিয়েছে বলে ইডির আইনজীবী জানান।
প্রসঙ্গত, আগেরবারের জেরায় জানা গিয়েছিল, পি কে হালদারের নামে ভারতে ৮৮ টা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। এসব অ্যাকাউন্টের কাজ ছিল ৫০-৬০ জন সাধারণের মধ্যে লেনদেন করা। পরে তাদের থেকে সেই টাকা চলে যেত অন্য খাতে। তার বদলে সাধারণ অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের মাসিক ২৫ হাজার রুপি বেতন দেওয়া হত।
এদিন ইডির আইনজীবী জানান, জেরায় পি কে হালদার স্বীকার করেছেন ওই সব অ্যাকাউন্ট বাংলাদেশি সাধারণ নাগরিকদের খোলা। তাদের খোঁজ চলছে। অবশ্যই এই অবৈধ অর্থ বাংলাদেশ থেকে তছরূপ এবং আত্মসাৎ করা। ফলে তদন্ত এখনও চলবে।
এদিন স্থানীয় সময় বেলা ১২টার দিকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীদের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। এরপর বেলা ১টায় নগর দায়রা আদালতের সিবিআই-৩ এজলাসে আনা হয় তাদের। শুরু হয় বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা।
এরপর দীর্ঘক্ষণ বিচারক অপেক্ষা করার পর তার রায়ে জানান, আরও ১৪ দিন জেলে থাকবে হালদাররা। আগামী ৫ জুলাই ফের আদালতে তোলা হবে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের।
বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পিকে হালদার এবং তার পাঁচ সহযোগিকে গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করে ইডি।
এরপর ১৪ দিন ইডির রিমান্ডে থাকার পর, গত ২৭ মে আদালতের রায় অনুযায়ী, বিচার বিভাগীয় তদন্তের কারণে ১১দিনের জুডিশিয়াল কাস্টডি (জেসি) হয় পি কে হালদারদের। ঠিক একইভাবে ৭ জুন আদালতে তোলা হলে তাদের বিরুদ্ধে ১৪ দিনের জেসি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২২
ভিএস/এসএ