ঢাকা: তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় এক হাজার তিনশ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন আছে। তবে নানা কারণে এর অর্ধেকই অকার্যকর বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক নেতারা।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানো পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বর্তমান শ্রম ইস্যু ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি শীর্ষক সেমিনারে তারা এ অভিযোগ করেন।
বিকেএমইএর কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, প্রচলিত ধারার ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে আমাদের ভীতি আছে। সুস্থ ধারা ট্রেড ইউনিয়ন যা আমাদের শিল্পসহায়ক, সেসব ট্রেড ইউনিয়ন আমরা চাই। কিন্তু যে সব ট্রেড ইউনিয়ন শিল্পের ক্ষতি করে, বাইরের নির্দেশনা অনুসরণ করে সেসব ট্রেড ইউনিয়ন আমরা চাই না।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি স্যাংশন দেওয়ার মতো এত খারাপ নয়। বিশ্ব যেসব দেশে শ্রম পরিস্থিতি ভালো, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে আইএলওর ১২টি ধারার মধ্যে আটটিতে অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র করেছে ছয়টিতে। শ্রমিক অধিকারের মৌলিক যে দুটি ধারা আছে, যুক্তরাষ্ট্র তাতে অনুস্বাক্ষর করেনি, বাংলাদেশ করেছে। ফলে বাংলাদেশের কর্ম পরিবেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উন্নত।
শ্রমিকনেতা তৌহিদুর রহমান বলেন, মালিকপক্ষ বলছে শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় যারা কারখানা ভাঙচুরের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা সবাই বাইরের এবং তাদের বিরুদ্ধেই কেবল মামলা করা হয়েছে। কিন্তু এমন অনেক শ্রমিককে আটক করা হয়েছে, যারা সবাই কারখানার শ্রমিক। কারখানা মালিকরা মুখে বলছে এক কথা, বাস্তবে চিত্র আলাদা।
তিনি ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন আরও সহজ করার দাবি জানিয়ে বলেন, শ্রম আইন মেনে নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধন অফিসে আবেদন করা হলে কাগজপত্র দেখে দ্রুত নিবন্ধন করার ব্যবস্থা করতে হবে। অহেতুক ঝুলিয়ে রাখা ভালো শ্রম আইন প্রমাণ করে না। আইন আছে, সে আইন কার্যকর করতে হবে।
শ্রমিক অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানে পশ্চিম আকাশে কালো মেঘের সৃষ্টি হয়েছে। অবহেলা করা ঠিক হবে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে বলে পরামর্শ দেন এ শ্রমিকনেতা।
বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান বলেন, দুই ধরনের ট্রেড ইউনিয়ন আছে। এক, শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম করে। দুই, আরেক শ্রেণির ট্রেড হলো যারা বিদেশে থেকে ডলার এনে নিজেদের পকেট পুরে। আর বাইরের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানির প্রশ্নে স্যাংশন নিয়ে যে কথা হচ্ছে তা রাজনৈতিক। কূটনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।
ইকোনোমিক রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি রেফায়েতুল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সভাপতি আবুল কাসেম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ