লালমনিরহাট: রংপুর বিভাগে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার পাশাপাশি চা শিল্পে এগিয়ে যাচ্ছে লালমনিরহাট জেলা। জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রায় ২০০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে চা বাগান।
চা প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও স্থানীয় চা বাগান মালিকের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠেছে সোমা অ্যান্ড সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। অনুকূল পরিবেশ ও ব্যাপক সম্ভাবনার কারণে চা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন এ জেলার চাষিরা।
জেলায় সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চায়ের চাষ হয় হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব বিছনদই এলাকায়। ওই গ্রামের ফেরদৌসের স্ত্রী শাহানারা বেগম সোমা জীবিকার সন্ধানে একটি এনজিও প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন পঞ্চগড় জেলার চা বাগান এলাকায়। সেখানকার চা বাগান মালিকদের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখে শখ করে চা গাছের চারা নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় রোপন করেন অনেকটাই পরীক্ষামূলকভাবে।

এ অঞ্চলের চা বাগানের স্বপ্নদ্রষ্টা শাহানা বেগম সোমা বাংলানিউজকে জানান, প্রথম দিকে অনেকটা শখ করেই চা বাগান শুরু করেন। সেই শখই একদিন চা শিল্প গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখায়। সেই স্বপ্নকে লালন করেই সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে চলেছেন তিনি।

এ দম্পত্তির একক প্রচেষ্টায় গড়ে উঠা চা বাগান দেখে এ অঞ্চলের অনেকেই চা বাগান করায় আগ্রহী হয়ে উঠে। এসব অাগ্রহী চাষিদের সুবিধার জন্য এ দম্পত্তির পরবর্তীতে গড়ে তোলেন দু’টি চা গাছ নার্সারি। সেখান থেকে সুলভ মূল্যে চারা সংগ্রহ করে এখন অনেক কৃষকই গড়ে তুলেছেন চা বাগান। নতুন আরও অনেকেই এগিয়ে আসছেন চা বাগান করার পরিকল্পনা নিয়ে।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা জমগ্রামের চাষি তাজুল ইসলাম, দহগ্রামের চাষি বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, স্বল্প পরিশ্রমে ও কম খরচে অধিক মুনাফা পেতে চা চাষের বিকল্প নেই। বর্তমানে নিজ জেলায় টি প্রসেসিং কোম্পানি হওয়ায় বিক্রি করতেও ঝামেলা নেই। তাই দিন দিন এ জেলায় চা চাষির সংখ্যা বাড়ছে বলেও মনে করেন তারা।
চা শিল্পের প্রসারে লালমনিরহাটে একটি চা বোর্ড গঠনের দাবি জানান এ দুই চা চাষি।

ফেরদৌস আলম বাংলানিউজকে জানান, এ অঞ্চলে এক বছরে এক একর জমিতে চা উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৭ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী বর্তমানে ২০০ একর জমিতে মোট ১৪০০ মেট্রিক টন চা উৎপাদিত হচ্ছে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায়। আর এ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ৭৫ জন চা চাষি।

বর্তমানে এ অঞ্চলের চাষিরা প্রতি কেজি ১৮ টাকা দরে সোমা টি প্রসেসিং লিমিটেডে কাঁচা চা পাতা সরবরাহ করছেন। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের জটিলতার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় জেনারেটর দিয়েই চালু করা হয়েছে কারখানাটি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ফেরদৌস আলম।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
এমজেড