খুলনা: খুলনায় হঠাৎ করে বাড়ছে চালের দাম। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।
মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। আর খুচরা বাজারে কেজি প্রতি চালের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। ভারত থেকে এলসির চাল আসার পরও চালের দামে তার কোনো প্রভাব না পড়ায় অসন্তুষ্ট ভোক্তারা।
চালের দামের ঊর্ধ্বগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে মিল মালিকরা আড়দদারদের জানিয়েছেন। মিল মালিকরা বলছেন, বাজারে ধানের সংকট রয়েছে। ধানের দামের সঙ্গে সমন্বয় করেই চালের দাম নির্ধারণ করতে হচ্ছে। এতে চালের দাম কিছুটা বেড়ে গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ধান সংকটের কথা বলে ভোক্তাকে জিম্মি করে বাড়তি মুনাফা করতে আবার কারসাজি শুরু করেছেন মিল মালিকরা। দাম বাড়লেও এখন পর্যন্ত বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
খুলনার বড় বাজারে চাল কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী এম রহমান খান বলেন, বাজারে নতুন চাল এসেছে। তার পরও দাম বাড়ছে। এভাবে দাম বাড়ার কারণে পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নিম্ন আয়ের বেশ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, করোনার বিপর্যয়ে আমরা এমনিতেই কাজকাম পাচ্ছি না। তার ওপর আবার চালের দাম বাড়ছে। চালের দাম বৃদ্ধি হলেও আমাদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। চালের দাম আরও বাড়লে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে।
বড় বাজারের চাল বিক্রেতারা বলছেন, মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কেনার কারণে খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হচ্ছে।
সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জনগণকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। ধান-চাল মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
মহানগরীর বড় বাজারের মেসার্স মুরাদ ট্রেডিংয়ের পাইকারি বিক্রেতা জিয়াউল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে এলসির চাল আসার পরও দাম কমছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। বাসমতি এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০-৬২ টাকা, যা এখন ৬৪-৬৬ টাকা। মিনিকেট ৫৮-৬০ থেকে এখন ৬১-৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৫৯ থেকে এখন ৬০, ২৮ বালাম ৪৮-৪৯ থেকে এখন ৫০-৫২ টাকা, সিদ্ধ কাটারি ৫৭ থেকে এখন ৬০ টাকা, স্বর্ণা ৪০-৪১ থেকে এখন ৪২-৪৬ টাকা, রানী ভাইটাল ৫৭ থেকে এখন ৫৯ টাকা, ভাটেল ৫৬ থেকে ৫৭ টাকা, গাজী আতপ ৪০ থেকে ৪২ টাকা, চিকন আতপ ৪৩ থেকে ৪৬ টাকা, কাটারি আতপ ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা।
ফরিদ ব্রাদার্সের গোবিন্দ সাহা বাংলানিউজকে বলেন, চালের দাম বাড়ছে। মূলত মিল মালিকরাই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনে বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
যশোরের নওয়াপাড়ার এ. রহমান পরশ অটো রাইস মিলস লিমিটেডের সেলস অফিসার গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, চালের দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। ধান না থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমন মৌসুমে বন্যা হওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছে। ১ হাজার টাকার ধান এখন ১৩৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এমআরএম/এমজেএফ