ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ছাঁটাইয়ে তৈরি হয় মানহীন মিনিকেট চাল: খাদ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
ছাঁটাইয়ে তৈরি হয় মানহীন মিনিকেট চাল: খাদ্যমন্ত্রী কথা বলছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাজারে মিনিকেটসহ বিভিন্ন চকচকে চালের মান ও পুষ্টিহীন। মিনিকেট নামে ধানের কোনো জাত নেই, অন্যান্য ধান ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে এই চাল প্রস্তুত করা হয় বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় একাত্তর হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ৪র্থ নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ চাল খেতে চাইলে লাল চাল খেতে হবে। চকচক করলেই সোনা হয় না, এটা বোধ হয় আমরা ভুলে গেছি। চকচক চাল খেতেই আমরা পছন্দ করি। আর ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ নিয়ে কারসাজির আশ্রয় নেয়। তারা বিভিন্ন জাতের চাল কেটে-ছেঁটে এসব চাল প্রস্তুত করে। চাল যত বেশি পলিশ করা হয় দামও তত বেশি হয়, সেটা প্যাকেটজাত করলে দাম আরো বেশি হয়। চকচকে চাল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, এটা ব্র্যান্ডের নাম। মিলাররা বিভিন্ন জাতের ধান ছাঁটাই করে এসব ব্র্যান্ডের চাল বাজারজাত করছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।

তিনি বলেন, মিনিকেট চালের বিষয়ে সার্ভে করতে আমাদের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছিলো, সেই রিপোর্টটি আমরা হাতে পেয়েছি। মিনিকেট আসলে একটি ব্র্যান্ডের নাম। পলিশ, ফাইন পলিশ, মিডিয়াম পলিশের মাধ্যমে মিলাররা এই ব্র্যান্ডের চাল তৈরি করে বাজারজাত করে।

তবে এটি চাইলেই বন্ধ করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, মিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে একই জাতের ধান পায় না। কৃষকরা একই বস্তায় বিভিন্ন জাতের ধান পুরে মিলারদের সরবরাহ করেন। সেখানে জাতের স্বকীয়তা থাকে না। এরপর মিলাররা তারা পলিশ করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বাজারজাত করে। তাই এটি চাইলেই বন্ধ করা যাবে না, তবে ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ১৮টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং মোট ৪৮৬টি সংস্থা কাজ করছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তাদের সমন্বয়ের কাজ করছে।

স্ট্রিট ফুডের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, স্ট্রিট ফুড এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। পৃথিবীর উন্নত দেশেও স্ট্রিটফুড রয়েছে। তবে, আমাদের দেশের স্ট্রিটফুড হাইজেনিক না। এটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, অনেককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সচেতনতা বাড়াতে টিভিসি তৈরি করা হয়েছে। রেস্তোরাঁ প্রবিধানমালা তৈরি করা হয়েছে, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে এটি আইন হলে স্ট্রিট ফুডকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত নজরদারি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন আমাদের তিনটি টিম বিভিন্ন এলাকায় মনিটরিংয়ে বের হয়, ২টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এই পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ৯ হাজার ৪৭৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। অভিযানে কারো ত্রুটি পাওয়া গেলে জরিমানাসহ বিভিন্ন শর্ত পূরণে নির্ধারিত সময় বেধে দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে মন্ত্রী জানান, বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ৪র্থ নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করবেন। ‘টেকশই উন্নয়ন সমৃদ্ধ দেশ, নিরাপদ খাদ্যের বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার দেশজুড়ে দিবসটি উদযাপিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।