ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

হাইকোর্টের তদন্তে প্রক্টরের উদাসীনতা: যা বললেন ইবি প্রক্টর

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৩
হাইকোর্টের তদন্তে প্রক্টরের উদাসীনতা: যা বললেন ইবি প্রক্টর ইবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীদের দ্বারা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি।  

এছাড়া হল প্রভোস্টসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে চরম অবহেলা এবং প্রক্টরের উদাসীনতার কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য আজ বুধবার (০১ মার্চ) দিন ধার্য্য করেন।  

একই সঙ্গে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন ও বিধি সংগ্রহ এবং ইবির কোনো আইনজীবী থাকলে তাকে জানাতে বলা হয়েছে।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে করা তদন্ত কমিটিতে প্রক্টরের উদাসীনতার বিষয়ে নিজের অবস্থান জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ।

ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজের অবস্থান জানিয়ে ইবি প্রক্টর বলেন, ‘ঘটনাটি সংঘটিত হয় রাতে এবং দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে, যা আমাকে হল কর্তৃপক্ষ বা ভুক্তভোগী কেউই জানায়নি। আমি প্রথমে জানতে পারি আমার অফিসে জমা দেওয়া আবেদন থেকে। আমার কাছে আবেদন আসা মাত্রই তদন্ত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ভিসি বরাবর নোট উপস্থাপন করি এবং সেই নোটের আলোকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।  

তদন্ত চলাকালীন ভিকটিমকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে তার বাবা সন্তষ্টি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তাকে কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে আনা, তদন্ত কমিটির সাক্ষাৎকার দেওয়ানো, সাক্ষাৎকার শেষে আবার কুষ্টিয়া/কুমারখালী পর্যন্ত এগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিটা মুহূর্তে আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা বিধান করেছেন। আমি নিজেও ভিকটিম ও তার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি এবং তার নিরাপত্তার জন্য আশ্বস্ত করেছি। ঘটনার পরে প্রথম যেদিন ভিকটিম ক্যাম্পাসে আসে, আমি সেদিন তার ও তার বাবা এবং সঙ্গে আসা মামার সঙ্গে কথা বলে ক্যাম্পাসে তার সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে আশ্বস্ত করেছি। তারপরও যদি এটাকে উদাসীনতা বলা হয়, তাহলে আমার দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছু বলার নাই!

এর আগে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে র‍্যাগিংয়ের নামে ভিকটিমের ওপর নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসুম ইসলামসহ ৫ জনের হলের আবাসিকতা বাতিল করেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কতৃপক্ষ।  

নির্যাতনের ঘটনায় করা চারটি তদন্ত কমিটির প্রতিটিতেই নির্যাতনের সত্যতা উঠে এসেছে। পাশাপাশি নির্যাতনের সময় ভিডিও করার সত্যতাও মিলেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।  

প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র‌্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।  

বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ক্যাম্পাসও ছাড়েন অভিযুক্তরা।   

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।