ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

ইনস্টলেশন আর্টেই ফুটে উঠবে কালরাত্রের চিত্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
ইনস্টলেশন আর্টেই ফুটে উঠবে কালরাত্রের চিত্র বাংলাদেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এক ও অভিন্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান সর্বাগ্রে। এজন্য বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস এক ও অভিন্ন। 

বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল এ বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। তাইতো পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর টার্গেটে পরিণত হয়েছিল প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সংঘটিত সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞে প্রাণ হারায় অনেকে।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অপারেশন সার্চলাইটের নামে এদিন সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালানো হয় তৎকালীন আল্লামা ইকবাল হল (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল)ও জগন্নাথ হলে। বাদ যায়নি রোকেয়া হলও।
 
সেই ভয়াল রাত্রিকে স্মরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবারের মতো এবারো নিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বিভিন্ন হল ও সংগঠন এ উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচী দিয়েছে। এবার শহীদদের স্মরণে  ইনস্টলেশন আর্ট বা স্থাপনা শিল্পের প্রদর্শন করা হবে।
 
এছাড়া ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশান এ উপলক্ষে সাত শহীদ শিক্ষককে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন, কার্জন হল, টিএসসিসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে আলোকসজ্জ্বার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 
জাতীয় প্রেক্ষাপটে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দিবস পালনের ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ভূমিকা নতুন করে ধরা দেবে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
 
কবি সুফিয়া কামাল হলের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী আতিকা হক স্বর্ণা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। বই পড়ে ওই সময়ের দৃশ্যসমূহ কল্পনা করি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দিবসগুলো গুরুত্বসহকারে পালনের ফলে আমরা নতুনভাবে অনুপ্রাণিত হই।
 
২৫ মার্চ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম কুমার সরকার বাংলানিউজকে বলেন, কালরাতে পাকিস্তানিদের অন্যতম টার্গেট ছিল এ হল। আমরা প্রতিবছর শহীদদের মর্যাদার সাথে স্মরণ করি। গতবছর আমরা হলের সকল শহীদদের নামফলক নির্মাণ করেছি। এবার আমরা শহীদ মিনারটা সাজিয়েছি নতুন করে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচী
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে ২৫ মার্চ (রবিবার)গণহত্যা দিবস’ পালন করা হবে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে: সন্ধ্যা ৭টায় স্মৃতি চিরন্তন এ মোমবাতি প্রজ্বলন, ৭ টা ৫ মিনিটে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং ৭ টা ২০ মিনিটে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
 
বা’দ জোহর মসজিদুল জামিয়ায় ২৫ মার্চের রাতে নিহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে অনুষ্ঠিত হবে প্রার্থনা সভা। রাত ৯টা থেকে ৯ টা ১ মিনিট পর্যন্ত ২৫ মার্চ কালরাত স্মরণে জরুরি স্থাপনা ব্যতীত সকল জায়গায় “ব্ল্যাক-আউট” কর্মসূচি পালন করা হবে।
 
জগন্নাথ হলের কর্মসূচী
 
’৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিহত শহীদদের স্মরণে জগন্নাথ হল পরিবার হল প্রাঙ্গণে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
 
অনুষ্ঠানের সময়সূচি : বিকেল ৪ টা ১ মিনিট- চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা ৬ টা ১ মিনিট-শহীদদের স্মরণে স্থাপনা শিল্পের প্রদর্শন (ইনস্টলেশন আর্ট), সন্ধ্যা ৭ টা ১ মিনিট-দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি, সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিট নাটক(কালরাত্রি)-পদাতিক নাট্য সংসদ, রাত ৯ টা ১ মিনিট- ব্ল্যাকআউট, রাত ৯ টা ১ মিনিট-গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্বালন ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, রাত ৯ টা ৫ মিনিট- মশাল প্রজ্জ্ব্লন, রাত ৯ টা ১০  মিনিট- আলোচনা সভা, রাত ১০ টা ১মিনিট- শোকসংগীত এবং রাত ১১ টা ১৫ মিনিটে প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী।
 
রোকেয়া হলের কর্মসূচী
 
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে রোকেয়া হলের অভ্যন্তরে যে-সকল নারী ও কর্মচারীবৃন্দ পাকিস্তানী সামারিক বাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছিলেন সেসকল বীর নারী ও শহীদ কর্মচারীদের স্মরণে প্রথমবারের মত ২৫ মার্চ (রবিবার) রাত ৮ টায় রোকেয়া হল পরিবার একস্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

 

বাংলাদেশ সময় ০৭২০ ঘন্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮ 
এসআইএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।