ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এইচএসসি পাস পাবেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এইচএসসি পাস পাবেল পাবেল আহমেদ

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিপুর ইউনিয়নের নারকিলা গ্রামের আব্দুর রহমানের বড় ছেলে পাবেল আহমেদ। তিনি এবার দিরাই ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ৩.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

পাবেলের এই সাফল্যে খুশি দুর্গম হাওর বেষ্টিত নারকিলা গ্রামরে সবাই। কারণ ওই গ্রামের প্রথম এইচএসসি পাস ছেলে তিনি।

দারিদ্রতা ও অবহেলার কারণে এর আগে কেউ ওই এলাকার কেউ স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেনি।

দুই বছর আগে শাল্লার শ্যাম সুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাবেল এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩.২৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর অর্থের অভাবে তার পড়াশোনা প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়। বিষয়টি জানতে পেরে তৎকালীন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ তার উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনার সকল খরচের দায়িত্ব নেন। পরে নতুন পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান যোগদানের পর তিনিও পাবেলকে অর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন।

কিন্তু এবার এইচএসসি পাস করার পর কেউ তাকে সহযোগিতা করবে কী না তা এখনও জানেন না পাবেল। পাবেলের ইচ্ছা তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিষয়ে (অর্নাস) পড়বেন। কিন্তু টাকা জোগাড় না হলে কিভাবে তিনি উচ্চ শিক্ষা নেবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।  

ইতোমধ্যই পাবেল চাকরি খোঁজা শুরু করে দিয়েছেন। যেকোন চাকরি পেলে তিনি কাজ করতে চান। তবে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি সরকারি চাকরি করতে চান। পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে চান।

পাবেল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি দরিদ্র পরিবারের ছেলে। অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় এই পর্যন্ত এসেছি। পুলিশ সুপারসহ অনেকেই আমাকে পড়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন। আমি আরও পড়াশোনা করতে চাই। আমাকে সবাই আগের মতো সহযোগিতা করবেন সেই কামনা করি। সেই সঙ্গে পড়াশোনার পাশাপাশি যদি একটি চাকরি পেয়ে যাই তাহলে কাজ করে অনেক খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো।

দিরাই ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার দাস বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পাবেলের বিষয়ে জানতাম সে দ্ররিদ্র পরিবারের ছেলে। টাকা পয়সা খরচ করে তার পড়াশোনা করা মতো সামর্থ্য নেই। সে কারণে আমরা তার কাছ থেকে বোর্ড ফি ছাড়া অন্য কোন ফি নেয়নি। পরীক্ষার ফি সেশন ফি সহ সকল প্রকার ফি তার জন্য মওকুফ করা হয়েছে। সে যাতে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে সেজন্য বৃত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শাল্লা হবিপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য এলাছ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, পাবেল যদি আমাদের কাছে সহযোগিতা চায় আমরা তাকে অবশ্যই সাহায্য করবো। তার মতো ওই গ্রামের আরও ছেলে যাতে পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে পারে আমরা সেটাই চায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।