ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের দিন আমরা সতর্ক থাকবো। কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করবো।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মঙ্গলবার (০৭ মে) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সিইসি বলেন, বুধবারের (০৮ মে) ভোট অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম যাতে না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। মন্ত্রী-এমপিদের নিবৃত করা হয়েছে, প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। ভোটের দিন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ নির্বাচনের জন্য যা যা করণীয় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। যাতে নির্বাচনটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আইন শৃঙ্খলা সঠিকভাবে তদারকিতে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচন ভবনে পরিস্থিতি মনিটরিং করা হবে। নির্বাচনে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সংশ্লিষ্টরা নিয়ম কানুন প্রতিপালন করলে নির্বাচনটা সহজ হবে; তারা যদি বিশৃঙ্খলা তৈরি করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা দুরূহ হবে। এবার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে মত বিনিময় করা হয়েছে। নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে কারো কারো প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয় সেজন্যে ইসির তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেককে নিবৃত করতে পেরেছি। হয়ত বা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদূর দেখেছি, দলীয়ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক-যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয় কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখা যাক, কতটুকু হয়। প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশন নিয়েছি। বিভিন্ন ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা হয়, এজন্যে একজনকে ডাকিয়ে এনে বক্তব্য নিয়েছি, প্রার্থিতা বাতিল করেছি।
সিইসি বলেন, মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি প্রতিদিনই সব সময় খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়-সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী, এমপিদের প্রভাব প্রসঙ্গে সিইসি আরো বলেন, বেকায়দায় থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কোনো বেকায়দায় নেই। এটা একটা ভালো দিক, রাজনৈতিক সদিচ্ছা যখন বিকশিত হয়েছে স্পষ্ট হয়েছে, সেটা নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। তারপরও বলে থাকে-কোনো সংসদ সদস্য প্রভাব বিস্তার করছে কিনা, যদি করে থাকেন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কে কোন দল করে আমরা জানি না। নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের কাজ। কে দাঁড়ালো, কে দাঁড়ালো না, আমাদের কাছে সবাই প্রার্থী। আমরা দেখছি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। কেউ এলো কি, কেউ এলো না, তা নয়। প্রতিটি উপজেলায় অন্তত চার জন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে যাচ্ছি না, প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। অবাধ হচ্ছে কিনা তা দেখবো।
এ সময় নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলমসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এবার চার ধাপে ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন হবে৷ প্রথম ধাপে ১৪০ উপজেলায় ভোট হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৪
ইইউডি/এসআইএস