ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নতুন সিইসি আউয়ালের কর্মজীবন

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
নতুন সিইসি আউয়ালের কর্মজীবন কাজী হাবিবুল আউয়াল

ঢাকা: দেশের ১৩তম নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সরকারের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল, যিনি অবসরে গেছেন ২০১৭ সালে।

অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পেয়েছেন—অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।

আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে তাদের নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল সর্বশেষ জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালের ২ মার্চ এই মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। তারপর একই বছর ১ ডিসেম্বর জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি অবসরে গেলে ২১ জানুয়ারি একই মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবেই পুনর্নিয়োগ পান তিনি। কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে থাকাকালে মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সব বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা পালন করেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৬ সালের ২১ জানুয়ারি। শিক্ষাগত জীবনে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৬ সালে এলএলবি ও ১৯৭৮ সালে অর্জন করেন এলএলএম ডিগ্রি। এরপর বার কাউন্সিল সনদ পান ১৯৮০ সালে এবং একই বছর ঢাকা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পদ লাভ করেন।

১৯৮১ সালে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে জুড়িসিয়াল সার্ভিসে যোগ দেন তিনি। নিয়োগ পান মুনসেফ হিসেবে। এরপর ধারাবাহিক পদোন্নতি পেয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল জেলা জজ হন ১৯৯৭ সালে।

কর্মজীবনে কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশ আইন কমিশনের সচিব, শ্রম আদালতের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী সচিব ও পরবর্তীতে উপ-সচিব হিসেবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেষণেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০০০ সালে আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে এবং ২০০৪ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০০৭ সালের ২৮ জুন একই মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্ব শেষে কাজী হাবিবুল আউয়াল ২০১০ সলের ২৪ এপ্রিল নিয়োগ পান ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।

দীর্ঘ ৩৪ বছরের সরকারি চাকরি জীবনে কাজী হাবিবুল আউয়াল দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেন। ভ্রমণ করেন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, পাকিস্তান, জার্মানি, অস্ট্রেলেয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, নেপাল, কানাডা, জাপান, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, ঘান, সাউথ কোরিয়ো, ফিলিপিন ও হংকং।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বিভিন্ন সংস্থায় রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ, পুলিশ স্টাফ কলেজ, বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার, ফরেন সার্ভিস একাডেমি, জুড়িসিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট।

সরকারি চাকরি থেকে পরিপূর্ণ অবসরে যাওয়ার পর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃতাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়। এরপর থেকে এখনো পুরো কমিশন ফাঁকা রয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন কবে শপথ নেবে, তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে কিছু জানানো হয়নি। শপথ নেওয়ার পর যেদিন দায়িত্ব নেবে নতুন কমিশন, সেদিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর হবে তাদের মেয়াদ। কোনো ব্যত্যয় না হলে কাজী হাবিবুল আউয়ালের এই কমিশনের অধীনেই সম্পন্ন হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

এই প্রথমবারের মতো একটি আইন প্রণয়ন করে সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিলেন রাষ্ট্রপতি। এখন পর্যন্ত নিয়োগ পাওয়া ১৩ জন সিইসির মধ্যে সাতজনই বিচারপতি। আর বাকিরা সরকারের আমলা ছিলেন।

আরও পড়ুন:
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন
নির্বাচন কমিশনার হলেন যারা
দ্বিতীয়বারের মতো পুরো ‘ফাঁকা’ ইসি

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
ইইউডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।