ফরিদপুর: আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয় অনেকটা চূড়ান্ত করে ফেলেছে জামায়াত। প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে ২০ দলীয় জোটের মধ্যে কোনো আলোচনা বা সমঝোতা না হলে জামায়াত এককভাবে প্রার্থী দেওয়ার সকল প্রস্তুতি নিয়েছে হাইকোর্টের রায়ে নিবন্ধন হারানো দলটি।
নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করায় অন্য নির্বাচনের মতোই পৌরসভায়ও দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারছেন না স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াত। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, তেমনটি হলে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীই দেবেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুত তওয়াব বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে যদি জামায়াতের অংশগ্রহণে বাধা অথবা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া হয় তাহলেও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, যদি জামায়াত সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সেক্ষেত্রে এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার অধিকার থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে।
২০ দলীয় জোটবদ্ধ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। যদি ঐক্যের ভিত্তিতে প্রার্থী দেওয়া হয়, তাহলে তো ভালো। যদি তা না হয় তবে এককভাবে প্রার্থী দেবে জামায়াত।
তওয়াব বলেন, আইনগতভাবে জামায়াত নিষিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে জোরপূর্বক কেউ যদি কিছু করে সেটা ভিন্ন কথা। আর যদি নিষিদ্ধও করা হয়, তার বিকল্পের জন্যও জামায়াত প্রস্তুত আছে।
প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক তওয়াব দাবি করেন, সরকারের কঠোরতার কারণে জামায়াত প্রকাশ্যে তেমন কোনো কর্মসূচি দিতে না পারলেও দলীয় ও সাংগঠনিক কার্যক্রম থেমে নেই।
তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক- এটা জামায়াত প্রত্যাশা করে। তবে এই সরকারের আমলে বিগত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা যা বলে, তাতে নিরপেক্ষ নির্বাচন আদৌ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ বদরউদ্দীন বলেন, জামায়াত নির্বাচনমুখী একটি দল, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তাই জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে মাঠে থাকবেন বলেও জানান এই জামায়াত নেতা।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত ও বিএনপির জনপ্রতিনিধিরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এক একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যদি এভাবে ভোগান্তির শিকার হন তাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়।
তিনি বলেন, যেখানে যে দলীয় জনপ্রতিনিধি থাক না কেন তাকে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা উচিৎ।
এদিকে ২৩৬ পৌরসভার মধ্যে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও নগরকান্দা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে জেলা জামায়াত ওই দুই পৌরসভায় তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে সভা করে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করেছে।
নির্বাচন পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আবু হারিছ মোল্যা।
হারিছ মোল্যা বাংলানিউজকে বলেন, বোয়ালমারী পৌরসভায় মেয়র পদে বোয়ালমারী উপজেলা জামায়াতের আমির সৈয়দ নিয়ামুল হাসানকে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের জন্য তিনজন জামায়াত নেত্রীকে বাছাই করা হয়েছে। তবে ৯টি সাধারণ কাউন্সিলরের পদে ৪টিতে ৪ জন প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নগরকান্দা পৌরসভার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সময়মতো প্রার্থীদের নাম-পরিচয় জানানো হবে।
বোয়ালমারী পৌরসভায় জামায়াতের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী সৈয়দ নিয়ামুল হাসান বলেন, নির্বাচনে অংশ নিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। এরই মধ্যে দলের কয়েকদফা সভায় প্রার্থী হিসেবে আমাকেই বাছাই করা হয়েছে। আশা করছি, এই পৌর এলাকার সাধারণ মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে জয়ী করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
আরকেবি/এএসআর