গোলাপগঞ্জ থেকে ফিরে (সিলেট): ‘এ’ গ্রেডের পৌরসভাগুলোর মধ্যে সিলেটের গোলাপগঞ্জ একটি। পৌরসভাটির পরবর্তী কাণ্ডারী কে হচ্ছেন- এ নিয়ে চলছে ভোটারদের নানা বিশ্লেষণ।
সরেজমিনে জানা যায়, আওয়ামী লীগের টিকিটে আসা বর্তমান মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুর জনপ্রিয়তা রয়েছে বটে। তবে তার ইতিবাচক দিকগুলোর অনুষঙ্গ হয়ে আলোচনায় রয়েছে বিগত দিনের কর্মকাণ্ডও।
আর বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক পৌর প্রশাসক ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল জব্বারও মেয়র পদে জনপ্রিয়তার দৌড়ে সমান তালে এগিয়ে রয়েছেন।
এ দু’জনের জনপ্রিয়তা সমান থাকায় অনেকটা দু-টানার মধ্যে রয়েছেন ভোটাররা।
স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, ভোটের মাঠে এ দুই প্রার্থীকে নিয়ে ভোটারদের যত চিন্তা। গোলাপগঞ্জকে ডিজিটাল পৌরসভা হিসেবে দেখতে পরিবর্তন নয় বরং পুরাতনে বিশ্বাসী এক শ্রেণির ভোটার।
পৌর এলাকার ভোটার শামীম আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু সরকার চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ, তাই মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী থাকলে পৌরসভার কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে। ডিজিটালাইজেশনের দিকেও এগিয়ে যাবে।
অপরদিকে পৌর এলাকার উন্নয়ন বঞ্চনার বিষয়কে সামনে টেনে নতুন প্রার্থীকে মেয়র পদে দেখতে চাচ্ছেন আরেক শ্রেণির ভোটাররা। এ জন্য আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন অনেকে।
আব্দুল মিয়া নামের এক ভোটার বলেন, ‘গোলাপগঞ্জে গ্যাসকূপ। আমরা গ্যাসের অঞ্চলে বাস করেও গ্যাস সংযোগ পাই না। পৌরএলাকার ৭০ শতাংশ মানুষের ঘরে গ্যাস নেই। তাছাড়া মেয়রের বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বললেও তার পাশ্ববর্তী ৮টি বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ’
‘দেশের ‘এ’ গ্রেড পৌরসভার একটি গোলাপগঞ্জ। অথচ এখানে ৬৬৬ পরিবার বিদ্যুৎহীন। তাই উন্নয়নের জন্য মেয়র পদে পরিবর্তন আসা প্রয়োজন। ’
অন্যদিকে যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেলও মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
তাকে নিয়েও রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত ও ওপর বিদ্রোহী প্রার্থীর মাথা ব্যাথা। এক দলের তিন প্রার্থী হওয়ায় অনেকটা বিপাকেই রয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।
ভোটার বাবুল মিয়া বলেন, ‘প্রার্থী নয়, আমরা সাধারণ ভোটাররা বেশ মুছিবতে আছি। তিনজনই আওয়ামী লীগের, ভোট দিতাম কারে?’
পৌর সদরের পান দোকানী আব্দুল মালিক বলেন, ‘কুন্তা (কিছু) বুঝতাম পাররাম না, কারে ভোট দিমু। তবে জনপ্রিয়তার দিকে পাপলু ও জব্বার আউগাইয়া (এগিয়ে) আছউন। তারা দুনো জনে প্রচারণাও ছালাইরা (চালাচ্ছেন)। ’
পৌর এলাকা অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে জনভোগান্তির কথা তুলে ধরে স্থানীয় ইয়াগুলের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাগুলোর বেহাল দশা? ড্রেনগুলোর পাশ দিয়ে দুর্গন্ধে পথচলা যায় না। আর খোলা ড্রেনে দুর্ঘটনা তো অহরহ ঘটছেই। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
এনইউ/আরএইচএস