ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

দেওয়ানগঞ্জ থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন খান

‘ভোটের কতা কমু না’

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান ও গোলাম রাব্বানী নাদিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
‘ভোটের কতা কমু না’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা থেকে: ‘মেয়রপ্রার্থীগর মধ্যে মারামারি গণ্ডগোল। এ কারণে ভোটের কতা কমু না।

কেরা জানে আপনারা কোন মেয়রের লোক। ’

মেয়র পদে কেমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে রহস্যের হাসিতে কথাগুলো বলছিলেন ঈষিতা বেগম। বয়স চল্লিশের কোঠায়।

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরকালিকাপুর এলাকায় তার সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। ওই ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থী’র পক্ষে তিনিসহ কয়েকজন নারী ভোটারের কাছে প্রচারণা চালানোর সময় আলাপ হয়। প্রথমে মেয়র প্রার্থীদের লোক মনে করে ভয়ে মুখ খুলছিলেন না ঈষিতা, লেবু বেগম, মিলন বেগম, সালেহা ও বুলিসহ কয়েক নারী।

পরে সব জেনে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে গণ্ডগোল কী নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই সালেহা বেগম জানান, আওয়ামী লীগ দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থী দু’জনই এলাকায় অনেক প্রভাবশালী। যে কারণে ভোটের খবর ফাঁস করে কোনো ঝক্কি-ঝামেলার মুখে পড়তে চান না।

ভোট নিয়ে ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বুলি হেসে বলেন, আমগর গাইরজেন (স্বামী) যেই প্রার্থীর কথা কইবো তারেই ভোট দিমু। তিনি কাউরে না কাউরে পছন্দ কইরা রাখছেন। সেই কথা কইয়া বিপদে পড়বার চাই না। পরিস্থিতি ভালা না। আবার যদি গণ্ডগোল শুরু হইয়া যায়!

বুলি, সালেহাদের সঙ্গে যখন আলাপ হচ্ছিলো তখন খানিক দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন দ‍ুই রিকশাচালক আক্কাছ আলী ও আজাদ। তাদের বাড়ি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চিকাজানি এলাকায়। কাকে ভোট দেবেন, জানতে চাইলে আক্কাছের সাফ জবাব, ‘ভদ্র মানুষরে ভোট দিমু। যে এলাকায় সন্ত্রাস করবো না। আমার শান্তিতে ঘুমাইতে পারমু। ’

আক্কাছের কথার সঙ্গে যোগ করে আজাদ বলেন, ‘নির্বাচনের দিন গণ্ডগোল না হইলে ভোট দিবার যামু। গণ্ডগোল হইলে ভোট দিবার যাইয়া বিপদে পড়বার চাই না। ’

দেওয়ানগঞ্জ বাজার এলাকার মা বস্ত্রালয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন সুরুজ বানু ও রোজিনা আক্তার। তারা সম্পর্কে শ্বাশুড়ি ও পুত্রবধূ। কেমন মেয়র প্রার্থীকে পছন্দ, সুরুজ বানের কাছে জানতে চাইলে ঝটপট উত্তর দিলেন, স্বামী ‘পানি খাই কী দিয়া? সেই প্রার্থীরেই ভোট দিমু। ’

উত্তর দিতে না পেরে কিঞ্চিত অসন্তুষ্টই মনে হলো সুরুজ বানুকে। এবার তিনি বললেন, ‘মনে মনে ঠিক কইরা রাখছি। বাড়িত বৈঠক কইরা ভোটের সিদ্ধান্ত নিমু। এর আগে মত বইদলাও যাইতে পারে। ’

১৯৯৯ সালের ১৩ জানুয়ারি গঠিত দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের শাহ নেওয়াজ শাহেনশাহ (নৌকা), বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর নবী অপু (জগ) ও বিএনপি’র একেএম মূসা (ধানের শীষ)।

বর্তমানে ‘খ’ শ্রেণীর এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২৬ হাজার ৭১৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৩ হাজার ২৫১ ও পুরুষ ভোটার ১৩ হাজার ৪৬৮।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এএ

** নির্বাচনী চা!
** ‘আসল খেলা ইলেকশনের আগের রাইতে’
** সুন্দর পরিচ্ছন্ন শহর গড়ার অঙ্গীকার দুই মেয়রপ্রার্থীর
** নৌকা ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বিএনপি!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।