কেশবপুর (যশোর) থেকে: ‘ভোট আবার কে দিবি না! সবাই ভোট দিবি। মেয়র প্রার্থীর কথা জানি নে, ওই কাউন্সিলর প্রার্থীরাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার কেন্দ্র নিয়ে আসপি।
যশোরের কেশবপুর পৌরসভা ভবনের পাশে পাবলিক ময়দানের পশ্চিম দিকে চা দোকান ঘিরে এটাই প্রধান আলোচনা। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে এই মাঠে জমজমাট ভোটের আলোচনা।
সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা তারা। একজন নৌকা, অন্যজন ধানের শীষের সমর্থক। কথা কাটাকাটি চলছে। আওয়ামী লীগের সমর্থক চাচা ঘোষণা দিলেন, এবার তারাই জিতবেন। আর ভাতিজার প্রশ্ন, ‘ও কি ভাবি? ভোট ঠিকঠাক দিতে পারলি তোমগের জিতবার পথ নাই’।
পাশ থেকে নিষ্পত্তির ভূমিকা নিতে হলো অন্যজনকে। ‘যাই বলো কেশবপুরে লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবে। যেই জিতুক, ব্যবধান বড় হবে না’।
এতে সম্মত চাচা-ভাতিজা দু’জনেই। বেশ তাহলে নির্বাচনের দিনের জন্যই এখন অপেক্ষা।
আড্ডায় উঠে এলো ভোটের পরিস্থিতির কথাও। যার উত্তরে সবাই জানালেন, পরিস্থিতি ভালো। প্রার্থীরা ভোট চেয়ে যাচ্ছেন, পাবলিক শুনে যাচ্ছে।
একজন বললেন, ‘ভোট হবে ৯টি মহল্লায়। তার মধ্যি একটা দুটো ঘটনা ঘটতিই পারে, তাতে সমস্যা হবে না। তবে এবারেরর নির্বাচনে পরিস্থিতি অনেক শান্ত’। পাশ থেকে অন্যজন বলে উঠলেন, ‘শান্ত আছে। আরো কয়দিন বাকি। দেখা যাক এটুকু শান্তও থাকে কি-না’।
পাবলিক ময়দানে ভোটারদের আনা-গোনা থাকে বলে প্রার্থীরাও এদিকটা দিয়ে যাওয়ার সময় ঢুঁ মারেন।
ঘণ্টাখানেকের মধ্যে একজন মেয়র প্রার্থী, তিনজন কাউন্সিলর প্রার্থী এসে তাদের নিজ নিজ ভোট চেয়ে গেলেন। সবার মুখেই এক কথা, ‘কেশবপুরে আমরা অশান্তি চাই না। সুষ্ঠু ভোট হবে, যে জনপ্রিয় সেই জিতবে’।
দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণায় সুবিধাজনক হয়েছে বলে মত মেয়র প্রার্থীর। দলের প্রতীককে তার জন্য আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন তিনি। বললেন, ‘সরকারের এমন একটি সিদ্ধান্ত নির্বাচনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে’।
কেশবপুরে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও বেশ সক্রিয়। তিনটি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের জন্য ঘরে ঘরে যাচ্ছেন নারী প্রার্থীরা। তাদের প্রচারণার কারণে নারীদের ভোট কাস্টিং বাড়বে বলেই মত তাদের। তারা বেশি করে বাড়ি বাড়ি ক্যাম্পেইন করছেন। ফলে নারীদের মধ্যোও ভোট নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে মত অনেক ভোটারেরও।
এ পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী দু’জন। তারা হলেন- নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম মোড়ল ও ধানের শীষে বিএনপির আবদুস সামাদ বিশ্বাস। সাধারণ কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ৯ ওয়ার্ডে মোট ২২ জন। আর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের তিনটি পদের জন্য নারী প্রার্থী ৭ জন।
এসব প্রার্থীর পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে কেশবপুরের সড়কগুলো। সাদা-কালোর শহরে পরিণত হয়েছে পুরো পৌর এলাকা। চারদিকেই একটি ভোট ভোট আমেজ। তাতে বলাই যায়, ভোট এখানে ৯৫ শতাংশই পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৫
এমএমকে/
** মানবিক গুণের প্রার্থী হলে বেশি ভোট
** প্রতীক দেখে সিল দেবে, মিছিল ভোটের ঐতিহ্য
** আউশের চিড়া ও তার কারিগরের গল্প
** প্ল্যাটফর্মে বস্তা-বস্তা ডাক, ডিজিটালে চাপ কমছে
** সাড়ে ৩ ঘণ্টা বিলম্বের কথা জানতেও দেড় ঘণ্টা বিলম্ব