শক্তিশালী রাশিয়ার কাছে হার বাংলাদেশের শিরোপা স্বপ্ন অনেকটাই কঠিন করে দিয়েছে। তাই আসরে টিকে থাকতে হলে আজ ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না গোলাম রাব্বানী ছোটন শিষ্যদের।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জোয়ারে কোনো দলই প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ২০ মিনিট পর্যন্তও একই গতিতে এগোচ্ছিল খেলা। কিন্তু ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ভাগ্য খুলে যায় বাংলাদেশের। স্বাগতিকদের আত্মঘাতী গোল উপহার দিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনে ভারত। সেই গোল নিয়েই ম্যাচশেষে জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতে বাংলাদেশ।
রাশিয়া ম্যাচ থেকে এদিন চার পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজান বাংলাদেশ কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ডানপ্রান্ত থেকে পূজা দাসের ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি সুরভি আকন্দ প্রীতি। তবে বল চলে যায় সুলতানা আক্তারের কাছে। কিন্তু লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি।
ম্যাচের ১৬ মিনিটে নিজেদের অর্ধে বল ক্লিয়ার করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক রুমা আক্তার। তার ভুলের কারণে গোল হজম করার দুয়ারে ছিল স্বাগতিকরা। গোলরক্ষক রানি দাসও পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ভারতের পূজার লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
৩১ মিনিটে অন টার্গেটে শট নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু নুসরাত জাহান মিতুর দুর্বল শট ধরতে কোনো ভুল করেননি ভারতীয় গোলরক্ষক খুশি কুমারি। ডানপ্রান্ত থেকে সাগরিকা ডি বক্সে বল বাড়ান পূজা দাসের কাছে। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড। জটলা থেকে বল বেরিয়ে যাওয়ার পর ডি বক্সের কিছুটা দূর থেকে গোলমুখ বরাবর শট নেন মিতু। কিন্তু তার সেই শটে জোর ছিল না খুব একটা।
৫৪ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে জয়নব বিবি রিতার ভাসানো ক্রসে সাগরিকা মাথা ছোঁয়ালে তা জালের দেখা পায়নি। ৬৬ মিনিটে কর্নার থেকে সুযোগ আসে ভারতের। কিন্তু ডি বক্সে ফাঁকা জায়গা বল পেলেও তা বারের উপর দিয়ে মারেন ললিতা বয়পাই। তবে ৭৪ মিনিটে নিজেদের পায়েই কুড়াল মারে দলটি। ডান প্রান্তে থ্রো থেকে পূজা দাসের সঙ্গে দেওয়া-নেওয়া করে ডি বক্সের উদ্দেশ্যে শট নেন বাংলাদেশের নাদিয়া আক্তার। কিন্তু সেই শটে হেড করে নিজেদের জালেই বল ফেলেন ভারতীয় ডিফেন্ডার আখিলা রজন। তার হাস্যকর ভুলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ভারত। একের পর এক আক্রমণে চাপ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ওপর। ম্যাচের ৯০ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েও যায় তারা। ডি বক্সের ভেতরে বাংলাদেশি গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান শিবানি দেবী। তবে তার শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন গোলরক্ষক সঙ্গীতা রানি দাস। এর স্বীকৃতি স্বরুপ মাঠেই এই গোলরক্ষককে অর্থ পুরস্কার দেন ছোটন। অন্যদিকে হারের পর কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন ভারতীয় গোলরক্ষক খুশি কুমারি।
এই জয়ে ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রাশিয়া। অন্যদিকে দুই ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ভারত। রাউন্ড রবিন লিগ শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলের হাতে উঠবে শিরোপা। নিজেদের শেষ ম্যাচে আগামী ২৮ মার্চ নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে জিতলে ৯ পয়েন্ট হবে স্বাগতিকদের। তবে বাকি দুই ম্যাচে রাশিয়া হারলেই কেবল চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময় ২১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এএইচএস