বাংলা নববর্ষের দিনেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) জন্য দুঃসংবাদ হয়ে এসেছে সাধারণ সম্পাদকের দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আবু নাইম সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
আজ (১৫ এপ্রিল) বাফুফে ভবনে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তবে সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সংবাদ সম্মেলন থেকে বিদায় নেন তিনি। সোহাগের নিষেধাজ্ঞা বাফুফের জন্য লজ্জার কিনা? এমন প্রশ্নের পরেই ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে চলে যান বাফুফে সভাপতি।
গতকালেই সোহাগের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সবাই একসাথে হয়েছি একটা দুঃসংবাদে, খারাপ সংবাদে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশেন সাধারণ সম্পাদক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। আপনারা যেমন গতকাল ডকুমেন্ট পেয়েছেন। আমিও গতকালই জানতে পেরেছি। আমি গতকাল, এবং আজকেও ডকুমেন্টস পড়েছি তবে শেষ করতে পারি নাই। তার বিরুদ্ধে যা যা করার ছিল; যেমন ব্যান করা, এটা আপনারা দেখেছেন সেটা হয়ে গেছে। ’
সোহাগের ভবিষ্যত নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। দ্রুতই একটি জরুরি সভা ডেকে তার ভবিষ্যত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি, ‘আমি একটা জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। তবে আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্টদের মধ্যে দুইজন ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আছেন। তাই আমি বৈঠক ডাকতে পারিনি। উনারা কাল পরশু দেশে এসে পৌছাবেন। সকলে এসে পৌঁছালে পরশু দিন আমরা বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেব। এরপর আপনাদের জানিয়ে দেব পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে। ’
‘আপাতত ফিফা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা সেখানেই আছি। বাদ-বাকি বাফুফে কি সিদ্ধান্ত নেবে তার জন্য সকলকে দুইদিন অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার দিন ফিফা খুলবে, এরপর আমি ফিফার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবো। আমরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিব আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে। ’ -যোগ করেন তিনি।
ইতোমধ্যেই আবু নাঈম সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। বাফুফে সভাপতিকে আপিল করার কথাও জানিয়েছেন বাফুফে, ‘এথিক্স কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা নিয়ে আমি সোহাগের সঙ্গে কথা বলেছি গতকাল রাতে। সে আমাকে বলেছে, এথিক্স কমিটির যে সিদ্ধান্ত সেটা তার উপর অবিচার করা হয়েছে। এবং এটা নিয়ে কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে যাবে বলে আমাকে জানিয়েছেন। ’
ফিফার রিপোর্টে আর্থিক অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। সেখানে কাপড়ের দোকান থেকে ফুটবল কেনা, ম্যানপাওয়ারের ব্যবসা করা, প্রতিষ্ঠান থেকে বেশি দামে টিকিট কেনাসহ বেশ কিছু আর্থিক অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। তবে এটা অস্বীকার করলেন বাফুফে সভাপতি। তিনি বলেন, ‘ওরা কিন্তু বলে নাই আর্থিক অনিয়ম। কোড অব এথিক্স এবং রেসপনসিবিলিটি নিয়ে বলেছে। যাই বলা হয়েছে সবই এখানে আসবে, লুকানোর কিছু নাই। তবে কিছু বলার আগে আমার সকলের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার সব ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সিনিয়র মেম্বারদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সিদ্ধান্ত যেটা হবে সেটাই আমি সকলকে জানাবো। ’
এরপর যখনই বাফুফে কর্তার কাছে জানতে চাওয়া হয় সাধারণ সম্পাদকের নিষেধাজ্ঞা বাফুফের জন্য লজ্জার কিনা? তখনই, ‘ধন্যবাদ’ বলে সংবাদ সম্মেলন কক্ষ ত্যাগ করেন সালাউদ্দিন। যদিও উপস্থিত সাংবাদিকরা আরও কিছু প্রশ্নের জন্য তাকে থাকতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে সেসব দিকে কর্ণপাত করেননি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৩
এআর/আরইউ