আজ দেশের খ্যাতিমান ফুটবলার ও রাজনীতিবিদ আমিনুল হকের জন্মদিন। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি গোলকিপার হিসেবে যেমন তিনি পৌঁছেছেন অনন্য উচ্চতায়, তেমনি রাজনীতির ময়দানেও হয়েছেন সংগ্রাম ও নেতৃত্বের প্রতীক।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ১৯৯৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন আমিনুল হক। ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে গোলবারের নিচে তার দৃঢ় উপস্থিতি ছিল অমূল্য। সেই জয়েই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হয়, আর সেই সাফল্যের নায়ক ছিলেন এই কিংবদন্তি গোলরক্ষক। এছাড়াও ২০১০ সালের সাউথ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে স্বর্ণপদক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।
ক্লাব ফুটবলেও আমিনুল ছিলেন সমান উজ্জ্বল। আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবসহ দেশের প্রায় সব শীর্ষ ক্লাবেই সাফল্যের ছাপ রেখেছেন তিনি। গোলকিপার হিসেবে তার ক্ষিপ্রতা, সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং দলের প্রতি অঙ্গীকার তাকে ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।
ফুটবল ক্যারিয়ার শেষে ২০১৩ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হন আমিনুল হক। মাঠে যেমন নেতৃত্ব দিয়েছেন, রাজনীতিতেও হয়েছেন সংগঠক ও সংগ্রামী। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতিতে তার কার্যকর ভূমিকা, জনসম্পৃক্ততা ও সাংগঠনিক দক্ষতা তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বে পরিণত করেছে।
রাজনীতির পথচলায় বারবার বাধা-বিপত্তির মুখে পড়েছেন আমিনুল। রাজনৈতিক কর্মসূচি ও আন্দোলনে অংশ নিয়ে হয়েছেন গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার। তবুও তার অদম্য মানসিকতা ও দেশপ্রেম তাকে থামিয়ে রাখতে পারেনি। বরং এসব সংগ্রামই তাকে আরও দৃঢ় করেছে দেশের সেবায় নিবেদিত হতে।
আজ আমিনুল হকের জন্মদিন উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বার্তা। ফুটবল ভক্তরা স্মরণ করছেন তার অতুলনীয় গোলকিপিং, বিশেষ করে ২০০৩ সালের সাফ জয়ের সেই সোনালি মুহূর্ত। বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তার রাজনৈতিক ত্যাগ, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেম।
এক সময়ের ক্রীড়াঙ্গনের নায়ক আজ রাজনীতির ময়দানে সংগ্রামী নেতা। তার জীবন দেখায়, ক্রীড়া ও রাজনীতি দুই ভিন্ন ক্ষেত্রেও নেতৃত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব। তিনি কেবল একজন খেলোয়াড় বা রাজনীতিক নন, তিনি এক অনুপ্রেরণা।
জন্মদিনে দেশবাসীর একটাই প্রত্যাশা, সুস্থ থাকুন আমিনুল হক, আরও দীর্ঘদিন দেশের জন্য কাজ করুন এবং মানুষের পাশে থাকুন।
এআর/আরইউ