ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

ফুটবল

ব্রাজিল-জার্মানির প্রধান চার লড়াই

ওয়ার্ল্ড কাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৪
ব্রাজিল-জার্মানির প্রধান চার লড়াই

ঢাকা: সময়টা বাংলাদেশে মধ্যরাত, ব্রাজিলে তখন বিকেল। আবারও সেলেকাওদের মুখোমুখি জার্মানরা।

শুধু সালটা ২০০২ নয়, ২০১৪। মঞ্চ এবার ফাইনালের বদলে সেমিফাইনাল। তাতে কী?

সেবার জার্মানির ছিল না মহা মূল্যবান বালাক, আজকের লড়াইয়ে ব্রাজিলের নেই মহা বিস্ময় নেইমার। ব্রাজিলিয়ানরা প্রাথমিক শোক কাটিয়ে দলকে উদ্বুদ্ধ করতে সোমবার সকাল থেকেই ঢাক বাজানো শুরু করে দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ছক বাঁধছে দুই কোচ।  

এই স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ নিয়ে এক যুগ আগে জার্মান বধের নায়ক রোনালদো বলেছেন, নেইমার না থাকায় ব্রাজিল যে একজন তারকা ফুটবলার হারিয়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমাদের প্রতিপক্ষের উপর শুরু থেকে চাপ দিতে হবে। এটা বড় ম্যাচ। যেখানে ফুটবল বিশ্বের দু’টো গ্রেট টিম খেলছে। এ রকম ম্যাচে আমি কাউকে পরিষ্কার ফেভারিট দেখছি না।

ঠিক তাই। খেলা যখন এ দুই পরাশক্তির, তখন লড়াই শুধুমাত্র জয়-পরাজয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না- লড়াইয়ের ভেতরেও থাকে অন্য লড়াই! দেখে নেয়া যাক, বেলো হরিজন্তের মিনেইরাও স্টেডিয়ামে ব্রাজিল-জার্মানির প্রধান চার লড়াই কী হতে পারে!

ব্রাজিল ডিফেন্ডার দান্তে বনাম জার্মানি স্ট্রাইকার ক্লোসা
হলুদ কার্ড নিষেধাজ্ঞায় সিলভা নেই। একে তো স্বাগতিক হওয়ার পাহাড়সম চাপ, তার উপর রক্ষণের মূল দায়িত্ব এখন দান্তের ঘাড়ে। ক্লোসাকে সামলানোর ভার স্কলারি তার ওপরেই যে দেবেন তা অনুমান করা যায়। বলা যায়, দুই দলের ফল নির্ধারক লড়াই হবে এটি।

সেদিক দিয়ে বুন্দেসলিগায় পাঁচ মৌসুম খেলায় জার্মান ফুটবল সম্পর্কে দ‍ান্তের যথেষ্ট ধারণা আছে। আজকের লড়াইয়ে নিঃসন্দেহে কাজে দেবে এই অভিজ্ঞতা।

এদিকে ক্লোসা দাঁড়িয়ে আছে আরেকটি মাইলফলকের সামনে। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করে কদিন আগেই রোনালদোর রেকর্ড ছুঁয়েছেন। তার দেশে, তারই দলকে গোল করে দ্য ফেনোমেননের রেকর্ড ভাঙলে সেটি হবে চরম বেদনার। সেক্ষেত্রে ক্লোসার আক্রমণ রুখে দিয়ে স্বজাতির রেকর্ড অক্ষুন্ন রাখার ভারটাও পড়ছে দান্তের ওপর।

ব্রাজিল ফরোয়ার্ড ফ্রেড বনাম জার্মান ডিফেন্ডার হামেলস
নেইমারের উপস্থিতিতে গোল করার ভারটা দলের মূল স্ট্রাইকার ফেডের ওপর বর্তালেও চলতি বিশ্বকাপে খুব একটা ফর্মে নেই এই তারকা। কনফেডারেশন কাপের দ‍ুর্দান্ত নৈপূণ্যে ফ্রেডকে দলে রেখেছিলেন স্কলারি। বিশ্বকাপে যেন নিজেই নিজের ছায়া হয়ে ঘুরছেন।

তারপরও স্কলারির জহুরি চোখ বলে কথা! হয়ত এ ম্যাচেই জ্বলে উঠতে পারেন। সেক্ষেত্রে তার মূল লড়াইটা হবে জার্মান সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হামেলসের সাথে। কারণ তাকে টপকালেই মিলবে গোলবক্স।

ব্রাজিল মিডফিল্ডার অস্কার বনাম জার্মানি ডিফেন্ডার লাম
আবারও বলতে হয়, নেইমারের অনুপস্থিতে মাঝমাঠ সাজানোসহ আক্রমণ শানানোর দায়িত্ব তার ঘাড়েই পড়বে। আর জার্মানির পক্ষ থেকে তাকে আটকাবেন লাম। এর মধ্যেই বিশ্বকাপে একজন সফল মিডফিল্ডার হিসেবে লাম তার নামটা পাকাপাকি করে ফেলেছেন।

সেক্ষেত্রে অস্কারের দুর্দান্ত গতি ও দক্ষতা নিশ্চিত ভাবে লামকে পরীক্ষার মুখে ফেলবে। প্রতিপক্ষ ফরোয়ার্ডদের ‍আটকানো ছাড়াও কাউন্টার অ্যাটাকেও পারদর্শী জার্মান ক্যাপ্টেন।

ব্রাজিল মিডফিল্ডার হাল্ক বনাম জার্মান ডিফেন্ডার বেনেডিক্ট
একইভাবে ম্যাচে হাল্ক-বেনেডিক্টের লড়াইটাও দারুণ জমবে। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই জার্মান এ সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ছিলেন বেশ সফল।
যেহেতু নেইমার থাকছে না, আশা করা যায় হাল্কসহ অস্কার-ফ্রেডদের নিয়ে নতুন রণকৌশল সাজাবেন স্কলারি। পাশাপাশি গতি ও সক্ষমতা দিয়ে হাল্কের বেশ যোগ্য প্রতিপক্ষ হবেন বেনেডিক্ট।

মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। এখন অপেক্ষা মাঠে বল গড়ানোর। কাগজ-কলমের লড়াই তো হলো, আসল লড়াইটা মাঠেই দেখা যাবে!

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, ৮ জুলাই, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।