পুরো মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন বায়ার্ন মিউনিখের স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডভস্কি, কিন্তু এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগটা নেইমারেরই প্রাপ্য। চলতি আসরের নকআউট পর্ব থেকেই অসাধারণ খেলছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
আসরের শেষ ষোলোর ম্যাচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ২ গোল করেছিলেন নেইমার। এরপর আলাতান্তা ম্যাচে শেষ মুহূর্তে সমতা ফেরানো গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন। শেষ ৩ মিনিটের ঝড়ে জয় তুলে নেওয়া ম্যাচে এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোতিংয়ের গোলটির উৎসও ছিলেন তিনি। তার ডিফেন্সচেরা পাস ধরেই চুপো মোতিংকে গোল করার সুযোগ করে দেন এমবাপ্পে।
সর্বশেষ আরবি লিপজিগের বিপক্ষে সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান নেইমার। ওই ম্যাচে দুইবার গোল করার সুযোগ হাতছাড়া হয় তার। দু’বারই বল বারে লেগে প্রতিহত হয়। তবে ম্যাচে একটি গোলের অ্যাসিস্ট আসে তার পা থেকেই, আর সেটিও দেখার মতো অ্যাসিস্ট। ব্যাকহিলের আলতো ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দি মারিয়ার পায়ে এমনভাবে বল পৌঁছে দেন যা থেকে অতি সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার।
সবমিলিয়ে আসরের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে তার নাম উচ্চারিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
সত্যি বলতে, ২০১৩ সালের গ্রীষ্মে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় পর্যায়ে ভালো করে আসছেন নেইমার। ক্যাম্প ন্যুয়ে নিজের দ্বিতীয় মৌসুমেই (২০১৪-১৫) ইউরোপ সেরার মুকুট জেতার স্বাদ পান তিনি। সেবার ১০ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন এই ব্রাজিলিয়ান।
২০১৫ সালে বার্লিনের ফাইনালে নেইমারের গোল কিংবা পিএসজির বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-১ গোলে পাওয়া জয়ে তার অবদানের কথা ফুটবলভক্তরা সারাজীবন মনে রাখবে। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের নেইমার এর চেয়েও বেশি কিছু।
৫৯ ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত নেইমারের গোলসংখ্যা ৩৫টি। একবার শিরোপাও জিতেছেন। এক আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। ২০১৬/১৭ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করেছেন। ২৮বার সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন।
যে কারণে নেইমার অ্যাসিস্টের ‘নতুন রাজা’
ইউরোপীয় পর্যায়ে প্রথম পা দেওয়ার পর থেকে অ্যাসিস্টের বিচারে সবার চেয়ে এগিয়ে নেইমার। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তার চেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট করার কীর্তি নেই আর কারো। সর্বশেষ আলাতান্তা এবং লিপজিগ ম্যাচে যা করেছেন তিনি, তাতে তার প্রতিযোগিরা আরও পিছিয়ে গেছে। তার সবচেয়ে কাছাকাছি আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
জুভেন্টাসের পর্তুগিজ স্ট্রাইকার রিয়াল ও তুরিনের বুড়িদের হয়ে ২৫ বার সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন। কিন্তু আসল পার্থক্য আরও বেশি। কারণ একই সময়ে রোনালদো চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলেছেন ৭৮ ম্যাচ, নেইমারের চেয়ে যা ১৯ ম্যাচ বেশি।
২০১৩/১৪ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোয় এগিয়ে আছেন যারা-
১. নেইমার- ২৮টি
২. রোনালদো- ২৫
৩. আনহেল দি মারিয়া- ২০
৪. লিওনেল মেসি- ১৭
৫. জেমস মিলনার- ১৫
৬. মার্সেলো- ১৪
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২০
এমএইচএম