ঢাকা: কল্পনা করতে পারেন ১৭৮০ সালে ঢাকা শহরের মানচিত্র কেমন ছিল? বলতে পারেন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী কোন পথে বয়ে যেত? মেপে দেখবেন প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতা? এসব প্রশ্নোত্তর ছায়াছবির মত স্পষ্ট হয়ে উঠবে ‘গ্রাফোসম্যানের ভূচিত্রাবলী’র এক একটি পাতা উল্টালেই। এরকম হাজারো জাদুকরী মানচিত্রের পসরা সাজিয়ে বইমেলায় বসেছে ‘গ্রাফোসম্যান’-এর স্টল।
ইন্টারন্যাশনাল ম্যাপ ট্রেড এসোসিয়েশনের সদস্য প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বধিকারী মোশাররফ হোসেন। মানচিত্র তৈরির এই কারখানাটি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৫ সালে। আজ তিনি রোগে শয্যাশায়ী। তবুও থেমে নেই তার পথচলা। অসংখ্য তরুণ অভিযাত্রী গহীন বনাঞ্চল থেকে খনিজের আঁধারে, রেলের সরল পথ থেকে পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে চলেছে ‘গ্রাফোসম্যান’ প্রকাশিত এক একটি অমূল্য মানচিত্রের সহায়তায়।
বইমেলায় বাংলানিউজের সংবাদকর্মীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলাপনে মো. জালাল উদ্দিন আহমেদ জানালেন ‘গ্রাফোসম্যান’-এর নানা বৃত্তান্ত। স্বত্বধিকারী মোশাররফ হোসেনের সুযোগ্য কর্মঠ সহকারী জালাল আহমেদ বলেন, ‘একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে হলে তার নিজস্ব ভৌগোলিক জ্ঞান থাকা দরকার। নিজের থানা, জেলা, বিভাগ থেকে শুরু করে দেশ, মহাদেশ পুরো পৃথিবীর মানচিত্র নখদর্পণে থাকা একজন সুশিক্ষিত ও সচেতন মানুষের জন্য জরুরি। সূর্যোদয়ের দেশ জাপান, সেই দেশটা কোথায় কেমন তা ঘরে বসেই দেখতে পারি মানচিত্রের সাহায্যে। পৃথিবীর সুউচ্চ পর্বতমালার উচ্চতা, মহাসাগরের গভীরতা, দীর্ঘতম নদীগুলোর যাত্রাপথ সহজেই জানতে পারি মানচিত্রের সাহায্যে। এই জানার প্রক্রিয়া অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। ’
গ্রাফোসম্যানের স্টলে কি কি পাওয়া যায় এমন প্রশ্নের উত্তরে জালাল উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি থানা-জেলা-বিভাগের মানচিত্র, রেল-নদী-খনিজ-বন-মৎস্য-কৃষিসহ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়াবলী চিহ্নিত বাংলাদেশের মানচিত্র, বিশ্ব মানচিত্র, সার্কভুক্ত দেশ সমূহের মানচিত্র গ্রাফোসম্যান প্রকাশ করেছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের জন্য গাণিতিক সূত্রাবলী, কীট-পতঙ্গের জীবনচক্র, শিরাতন্ত্র, মানবদেহের পরিপাকতন্ত্র, বৃক্ষের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া, রাসায়নিক মৌলের পর্যায় সারণী প্রভৃতি প্রকাশনা আমাদের রয়েছে। ’
তবু মানচিত্র ও ভূগোলবিদ্যা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পুস্তক, চার্ট, মানচিত্র তৈরির এই অসাধারণ প্রকাশনাটির স্থান সংকুলান হয়নি বাংলা একাডেমি বইমেলার মূল প্রাঙ্গণে।
বাংলাদেশ সময় : ১০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১২