ঢাকা: নতুন করে আর কোনো রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) হচ্ছে না। সরকার এখন জোর দিচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার দিকে।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি রূপরেখা প্রণয়নের কাজ পুরোদমে চলছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ সরকারের কাছ থেকে এ সম্পর্কিত ঘোষণা আসতে পারে।
রোববার বেপজার চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়া হলে এখানে সব ধরনের শিল্প কারখানা তৈরির সুযোগ হবে। ’
তিনি জানান, এ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে চারটি ভাগে ভাগ করা হবে। এখানে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)’র পাশাপাশি থাকবে দেশীয় চাহিদা মেটাতে ঘরোয়া পণ্য প্রস্তুতকরণ অঞ্চল (ডমেস্টিক প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারিং জোন), কমার্শিয়াল ওয়্যার হাউস অ্যান্ড সেলার হাউস এবং এ অঞ্চলে বসবাসকারীদের জন্য থাকবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আবাসন অঞ্চল।
তিনি আরও জানান, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার আগপর্যন্ত ইপিজেডে বিনিয়োগে আগ্রহীদের ইপিজেড’র বরাদ্দ না হওয়া প্লট দেওয়ার সুযোগ থাকবে। এসব প্লট বরাদ্দ শেষ হলে বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে ইপিজেড’র বাইরেও বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে।
তবে নতুন করে কোনো ইপিজেড তৈরি করা হবে না বলে তিনি জানান।
বেপজার তথ্য মতে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে যথাক্রমে ৪ শ’ ৪২ টি ও ৫ শ’ ২ প্লট থাকলেও সবই বরাদ্দ হয়ে গেছে। কোনো প্লট খালি নেই।
তবে কুমিল্লা ইপিজেডের ২ শ’ ১১ টি প্লটের মধ্যে খালি রয়েছে ৪১ টি, ইশ্বরদীর ১ শ’ ৫৮টির মধ্যে ৩৯টি, উত্তরার (নীলফামারী) ২ শ’ ২ টির মধ্যে ১ শ’ ৬৪টি, মংলার ১ শ’ ২৪ টির মধ্যে ১শ’ টি প্লট খালি রয়েছে। কর্ণফুলি (চট্টগ্রাম) ২ শ’ ৫৮টি ও আদমজীর ১ শ’ ২৪ টি প্লটের মধ্যে কোনো প্লট খালি নেই।
ইপিজেড’র মোট বিনিয়োগের মধ্যে ২৭ শতাংশ বিনিয়োগ স্থানীয়, ৫৮ শতাংশ সরাসরি বিদেশি (এফডিআই) এবং বাকি ১৫ শতাংশ যৌথভাবে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ।
এদিকে, নতুন ইপিজেড তৈরির প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি বলে মনে করছেন বাংলাদেশ-ভারত চেম্বারের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘শত শত বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসলেও প্লট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। ’
এ ব্যাপারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ খান বলেন, ‘ইপিজেড-এ এখনও প্লট খালি রয়েছে। প্লট শেষ হলে বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে বাইরে তো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছেই। ’
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার সপক্ষে তিনি বলেন, ‘দেশের মোট রপ্তানির মাত্র ১৮ শতাংশ ইপিজেড থেকে হয়। বাকি ৮২ শতাংশ করা হয় ইপিজেড’র বাইরে থেকে। ’
তবে ইপিজেড’র সফলতাও তুলে ধরেন তিনি।
দেশের ৮টি ইপিজেড’র জমির পরিমাণ মাত্র ২ হাজার ৩ শ’ একর। এটুকু জায়গাতেই ৩ শ’ ৫৩ টি শিল্প কারখানা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এখান থেকেই ২০০৯-’১০ অর্থবছরে ২ শ’ ২১ দশমিক ৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এর আগের বছর ছিল ১ শ’ ৪৮ দশমিক ০৯ মিলিয়ন। আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ’
আর গত অর্থবছরে ইপিজেডগুলো মোট রপ্তানি করেছে ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণের পণ্য। এ থেকে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দেশে রয়ে গেছে বলে দাবি করেন বেপজা চেয়ারম্যান।
বালাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০