ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

ক্রিকেট

আফ্রিদি-মুশফিকদের বিদায়, কুমিল্লার জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
আফ্রিদি-মুশফিকদের বিদায়, কুমিল্লার জয় ছবি : শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২৯তম ম্যাচে মুখোমুখি হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও শহীদ আফ্রিদির সিলেট সুপারস্টারস। আফ্রিদি-মুশফিক-মুমিনুল-জুনায়েদদের ৭১ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা।

এ ম্যাচে হারের ফলে বিপিএলের তৃতীয় আসর থেকে বিদায় নিল সিলেট।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সিলেট দলপতি আফ্রিদি। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে কুমিল্লা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৫০ রান। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে চরম বিপর্যয়ে পড়া সিলেট ১৩.৫ ওভার ব্যাট করে ৭৯ রান তুলতে সক্ষম হয়। ৭১ রানে ম্যাচ হেরে আসর থেকেও বিদায় নেয় সিলেট।

এর আগে কুমিল্লার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। শুরুটা ভালো হয়নি ভিক্টোরিয়ান্সের। দলীয় ৭ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা। মোহাম্মদ শহীদ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে লিটন দাসকে ফিরিয়ে দেন। উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে লিটনের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৪ রান।

এরপর জুটি বাধেন ইমরুল-আহমেদ শেহজাদ। ৬৮ রানের এই জুটি ভাঙেন টাইগার পেসার রুবেল হোসেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে রুবেলের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান শেহজাদ। ৩১ বলে ৫টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকিয়ে শেহজাদ তার ইনিংস সাজান। ১০ ওভার থেকে কুমিল্লার উঠে ৭৫ রান।

দলীয় ৮৬ রানের মাথায় ফেরেন কুমিল্লার আরেক ওপেনার ইমরুল কায়েস। ১২তম ওভারে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে ইমরুলকে ফেরান আফ্রিদি। বিদায়ের আগে ২৮ বলে দুই বাউন্ডারি আর একটি ওভার বাউন্ডারিতে ২৭ রান করেন কুমিল্লার বাঁহাতি এ ওপেনার।

টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন আসার জাইদি ও অলোক কাপালি। এ দুই ব্যাটসম্যান স্কোরবোর্ডে আরও ৫৬ রান যোগ করেন। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে রান আউট হওয়ার আগে জাইদি ২৯ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ৩১ রান। অলোক কাপালি ২৬ বলে একটি চার আর দুটি ছক্কায় ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন। এক রানে অপরাজিত থাকেন আন্দ্রে রাসেল।

সিলেটের হয়ে রুবেল হোসেন ৪ ওভার বল করে ৩০ রান খরচায় নেন একটি উইকেট। আফ্রিদি ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। রবি বোপারা ৪ ওভারে কোনো উইকেট না পেয়ে খরচ করেন ২৮ রান। আব্দুর রাজ্জাক এক ওভারে ১২ রান খরচ করে উইকেট শূন্য থাকেন। এক উইকেট পাওয়া শহীদের ৩ ওভারে কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা ১৮ রান নেন। পাকিস্তানি পেসার সোহেল তানভীর ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচায় কোনো উইকেট দখল করতে পারেননি।

১৫১ রানের টার্গেটে সিলেটের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন জসুয়া কব ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। দলীয় ১৬ রানের মাথায় বিদায় নেন জুনায়েদ (১০)। শুভাগত হোমের দারুণ ডেলিভারিতে জাইদির তালুবন্দি হন তিনি। আরেক ওপেনার কব ১৮ বলে ৫টি চারের সাহায্যে করেন ২১ রান। নাঈম ইসলামের বলে আবু হায়দারের তালুবন্দি হন কব।

দলীয় ৩৩ রানের মাথায় দুই ওপেনার ফিরে গেলে বিপাকে পড়ে সিলেট। ৩৩ রানের মাথায় আরও একটি উইকেট হারায় সিলেট। রবি বোপারা (১) রান আউট হয়ে ফেরেন।

ইনিংসের সপ্তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন শুভাগত। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় শুভাগতের বলে আবু হায়দার ক্যাচ নিলে ফেরেন ২ রান করা মুশফিক। একই ওভারের পঞ্চম বলে শুভাগত ফিরিয়ে দেন সোহেল তানভীরকেও। লিটন দাসের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ফেরেন এক রান করা তানভীর।

এরপর জোড়া আঘাত হানেন বোলিং আক্রমণে প্রথমবার আসা জাইদি। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় আরও বিপদ বাড়িয়ে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সিলেট দলপতি আফ্রিদি বিদায় নেন। নবম ওভারের প্রথম বলে জাইদি বোল্ড করেন ৬ রান করা আফ্রিদিকে। জাইদির করা একই ওভারের চতুর্থ বলে নুরুল হাসান (২) এলবির ফাঁদে পড়েন। দলীয় ৫০ রানে সাত উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া সিলেটের ব্যাটিং লাইনআপের লেজ বেরিয়ে আসে।

ইনিংসের ১১তম ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন আবু হায়দার। তৃতীয় বলে ২ রান করা আব্দুর রাজ্জাককে নাঈম ইসলামের হাতে ধরা পড়তে বাধ্য করেন আবু হায়দার। ফলে, অষ্টম উইকেটের পতন ঘটে সিলেটের।

১৪তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন আন্দ্রে রাসেল। দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ শহীদকে (৬) আর পঞ্চম বলে রুবেল হোসনকে (০) বিদায় করেন ক্যারিবীয় বোলার রাসেল।

আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মুমিনুল হক অপরাজিত থেকে ১৫ রানের ছোট ইনিংস খেলে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। ১৩.৫ ওভারে ৭৯ রান করে গুটিয়ে যায় সিলেট।

কুমিল্লার হয়ে এ ম্যাচেও বল হাতে নেননি মাশরাফি। কুলাসেকারা ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে একটি উইকেট পান আবু হায়দার। শুভাগত হোম ৩ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচ করে তুলে নেন সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। একটি উইকেট নেন নাঈম ইসলাম। ২.৫ ওভারে ৯ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট দখল করেন আন্দ্রে রাসেল। আর এক ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৪ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট তুলে নেন জাইদি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর

**  আফ্রিদি-মুশফিকদের টার্গেট ১৫১ রান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।