ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যেতে চাই: নাঈম শেখ

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২০
সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যেতে চাই: নাঈম শেখ নাঈম শেখ

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের জন্য স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্যতম নাঈম শেখ। তামিম-লিটনদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলে লম্বা সময় ধরে খেলে যেতে চাওয়া এই বাঁহাতি ওপেনার। 

রোববার (০৭ জুন) বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন নাঈম শেখ। জানিয়েছেন নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু কথা।

২০ বছর বয়সী নাঈমের ভাবনায় এখন শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেট। তার ইচ্ছা আছে সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যাওয়ার।

ক্রিকেটে আসা কিভাবে এমন প্রশ্নে নাঈম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ ছিল, পাড়ায় ক্রিকেট খেলতাম। জেএসসি পরীক্ষার পর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। ভালো রেজাল্ট হয়নি। কোনো রকম পাস করছিলাম। এইচএসসি পরীক্ষাতেও রেজাল্ট খারাপ করেছিলাম। খারাপ করেছিলাম একটা সাবজেক্টে। ক্রিকেট খেলছি, পড়াশুনা করছি। সত্যি কথা, ক্রিকেটের জন্য রেজাল্টটা খারাপ হয়ে গেছে। তখন থেকেই মনে একটা জেদ ছিল, ভালো কিছু করতে হবে। ঐ সময় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের জন্য অনুর্ধ্ব-১৮ দলকে দুইটা ভাগে ভাগ করে খেলিয়েছিল। লাল দল, সবুজ দল। সেখানে ভালো করার পরই অনূর্ধ্ব-১৯ মূল দলে জায়গা পেয়েছি। এরপরই ধীরে ধীরে টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছি। ’ 

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অবশ্য নাঈমের শুরুটা ভিন্নভাবে। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে দলে নিয়েছিলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। পরে দলে যোগ দেওয়ার পর এক সমস্যার কথা জানতে পারেন নাঈম। পরে অবশ্য মুশফিকের সহযোগিতায় খেলার সুযোগ পান তিনি।

নাঈম বলেন, ‘বিশ্বকাপ (অনূর্ধ্ব-১৯) চলার সময় ডিপিএলের প্লেয়ার ড্রাফট হয়েছিল।  তখন দল পেয়েছিলাম। সুযোগ পেয়েছিলাম লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলার। কিন্তু তাদের একটা অফস্পিনার দরকার ছিল। তখন নাঈম হাসান আমাদের সঙ্গে খেলতো। নাঈম হাসানকে নিতে গিয়ে ভুলে আমাকে পিক করছিল তারা। দলে যোগ দেওয়ার পর তারা বুঝতে পারে, আমি বাঁহাতি ওপেনার। তখন আমি খুব আপসেট ছিলাম এই ভেবে যে, এখন এই টিমে বসে থাকতে হবে। তখন মুশফিক ভাই আমাদের দলে ছিলেন।  নিদাহাস ট্রফি খেলে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি কয়টা ম্যাচ খেলেছি, কি রকম করেছি। তো মুশফিক ভাই আমাকে আগে থেকে অনেক সাহায্য করতেন, আমাকে পছন্দ করতেন। এরপরই চার নম্বর ম্যাচে আমাকে খেলানো হয়।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কিভাবে তৈরি করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার যারা আছেন তারা কিন্তু অনেক বছর ক্রিকেট খেলছেন। কিন্তু তাদের খেলা বুঝতে যে সময়টুকু লেগেছে আমার যেন সেই সময়টা না লাগে, সেটাই লক্ষ্য। আমরা ক্যারিয়ারে যখন ৭০-৮০ রান করি এরপর যখন সেটাকে বড় করার চিন্তা করি তখন তার জন্য একটা প্রস্তুতি লাগে। যেটা আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে নেই। আমরা অল্পতেই খুশি হয়। এটা হওয়া যাবে না। বড় বড় ক্রিকেটারদের দেখে আমাদের শেখা উচিত। ভালো খেললেও যাতে আরও ভালো খেলা যায়, তা আমি সিনিয়রদের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করছি। ’

২০ বছর বয়সী এই তরুণ ক্রিকেটার আপতত সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশি মনোযোগী হতে চান। এখন ভাবতে চান না টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে। নিজের আত্মবিশ্বাসটা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ভালো করার ব্যাপারে বেশ আত্মপ্রত্যায়ী তিনি।

নাঈম বলেন, ‘আমার যত পরিকল্পনা সেটা ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে ঘিরে। এখানে ভালো করতে আমি ক্ষুধার্ত। যত রকম কাজ করার দরকার তা করছি। ফিজিক্যালি, মেন্টালি, টেকনিক্যালি বলেন, সবদিক দিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি। টেস্টের জন্য প্রিপারেশন পরে নেবো। কারণ এটার জন্য আলাদা মানসিকতা তৈরি করতে হয়। মনোযোগের একটা ব্যাপার রয়েছে। দীর্ঘ সময় ক্রিকেট খেলতে হয়। তো আমি ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী। প্রিমিয়ার লিগেও আমি চেষ্টা করেছি নিজেকে সেভাবে গড়ে তোলার জন্য, ভালো গড় ও ভালো স্ট্রাইক রেট নিয়ে খেলার জন্য। কারণ আমি জানি এখানে একটু খারাপ করলেও আমি ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। ’

ক্যারিয়ার কোথায় শেষ করতে চান তিনি? তার উত্তর নাঈম দিলেন এভাবে, ‘বাংলাদেশে এখন সেরা ৫ জন যারা রয়েছেন, সাকিব-তামিম-মুশফিক ভাই যেখানে গিয়ে শেষ করবেন, আমার ইচ্ছা তাদেরকেও ছাড়িয়ে যাওয়া। তারা যেমন তাদের আগের জেনারেশনকে পার করেছেন, আমারও ইচ্ছা এই জেনারেশন যেখানে শেষ করবে আমার ক্যারিয়ারটা তাদের উপরে গিয়ে শেষ করা। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২০ 
আরএআর/ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।