ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

পন্থ ১, ধোনি ০!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
পন্থ ১, ধোনি ০!

চেন্নাই সুপার কিংস আর দিল্লি ক্যাপিটালসের লড়াইকে বলা হচ্ছিল গুরু ও শিষ্যের লড়াই। একজন দুই বিশ্বকাপ আর তিন আইপিএল শিরোপার মালিক; অন্যজন সবেমাত্র উঠতি তারকার স্বীকৃতি পেয়েছেন।

দুজনেই উইকেটরক্ষক।  প্রথমজন যে মহেন্দ্র সিং ধোনি তা নিশ্চয়ই এতক্ষণে পরিস্কার হয়ে গেছে। আর অন্যজন দিল্লির এবারের অধিনায়ক ঋষভ পন্থ।  

ধোনি হচ্ছেন পন্থের কিপিং গুরু। আর আইপিএলে অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম ম্যাচেই নিজের গুরুকে হারিয়ে দিলেন তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।

কাঁধের চোটের জন্য দিল্লির নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ছিটকে যাওয়ায় এবার দায়িত্ব পান পন্থ। দায়িত্ব পেয়েই গুরু ধোনির মোকাবিলা করতে হয় তাকে।  আর তাতে জয় হয়েছে পন্থের। নেতৃত্বের পরীক্ষায় পন্থের এই জয় এসেছে দলের দুই ওপেনিং ব্যাটসম্যান পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ানের কল্যাণে। দুজনের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে ভর করেই চলতি আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয় পেয়েছে দিল্লি।

আইপিএলের চতুর্দশ আসরে আজ প্রথম মাঠে নামে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শুরুতে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। জবাবে ৭ উইকেট ও ৮ বল হাতে রেখে জয় ছিনিয়ে নেয় দিল্লি।

চেন্নাইয়ের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার পৃথ্বী শ ও শিখর ধাওয়ান দিল্লিকে দারুণ শুরু এনে দেন। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে চেন্নাইয়ের বোলারদের ঘাম ছুটিয়ে দেন দুই ব্যাটসম্যান। ওপেনিং জুটিতেই উঠে আসে ১৩৮ রান। দুই ওপেনার পান ফিফটির দেখা।  

ইনিংস আরও বড় করার পথে থাকা শ অবশেষে থামেন ডোয়াইন ব্র্যাভোর বলে মঈন আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে। তবে এর আগে খেলেন ৩৮ বলে ৭২ রানের ঝড়ো ইনিংস। অসাধারণ ইনিংসটি খেলার পথে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকান শ। মাঝে অবশ্য মঈন আলীর বলে দু'বার ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কঠিন ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি চেন্নাইয়ের ফিল্ডাররা।

শ বিদায় নেওয়ার পর হাল ধরে রাখেন দিল্লির আরেক ওপেনার ধাওয়ান। 'গাব্বার' খ্যাত এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ফিফটি তুলে নেওয়ার পর থেকে কিছুটা খোলসে ঢুকে পড়েন। কিন্তু ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন প্রয়োজনের সময়। এমনকি ছুটছিলেন সেঞ্চুরির পথেও। কিন্তু দলকে জয় থেকে মাত্র ২২ রান দূরে রেখে শার্দূল ঠাকুরের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। ফলে শেষ হয় তার ৫৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ৮৫ রানের দারুণ ইনিংস।

শেষ ৩ ওভারে জেতার জন্য মাত্র ১৭ রান দরকার ছিল দিল্লির। ব্র্যাভোর করা ১৮তম ওভারে আসে ১০ রান। শার্দূলের করা ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে লক্ষ্যটা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন মার্কাস স্টইনিস। পরের বলে ডট। তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন স্টইনিস (১৪)। কিন্তু ৯ বলে ৩ রানের পুঁজি কাজে লাগার কথা নয়, লাগেওনি। চতুর্থ বলেই মিড উইকেটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দিল্লির জয় নিশ্চিত করে ফেলেন শিমরন হেটমায়ার। ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক পন্থ।

এর আগে টস জিতে চেন্নাইকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় দিল্লি ক্যাপিটালস। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দিল্লির দুই পেসার ক্রিস ওকস আর আবেশ খানের দাপটে চেন্নাইয়ের টপ অর্ডার ধসে পড়ে। দলীয় ৭ রানেই বিদায় নেন রুতুরাজ গায়কোয়াড (৫) ও ফাফ ডু প্লেসি (০)। এরপর মঈন আলীর সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন সুরেশ রায়না।  

২৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ওভার বাউন্ডারিতে ৩৬ রান করা মঈন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের শিকার হলে জুটি ভাঙে। চতুর্থ উইকেটে আম্বাতি রাইডুকে সঙ্গী করে আরেকটি দারুণ জুটি উপহার দেন আগের আসর থেকে নাম সরিয়ে নেওয়া রায়না।

মাত্র ৩২ বলে রায়না ফিফটি পূরণ করেন। রায়ডু ১৬ বলে ২৩ রানে আউট হওয়ার আগে জুটিতে আসে ৬৩ রান। তবে এরপর রান-আউট হয়ে যান ৩৬ বলে ৩ চার ৪ ছক্কায় ৫৪ রান করা রায়না। শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজা ১৭ বলে ৩ চারে ২৬* এবং স্যাম কারান ১৫ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৩৪* রান করেন।  

তবে আইপিএলের শুরুটা ভালো হয়নি চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির। মাত্র দুই বল খেলে আবেশ খানের বলে বোল্ড হয়ে যান। নামের পাশে শূন্য রান। তবে অধিনায়কের ব্যর্থতার দিনে সুরেশ রায়নার দাপুটে ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৮৮ রান। । ২টি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস আর আবেশ খান।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।