ব্যাট হাতে ঝড় তোলার পর বল হাতেও প্রতিপক্ষের ব্যাট্যারদের ভোগালেন মঈন আলী। এছাড়া লিটন দাসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে ঝলক দেখালেন মোস্তাফিজুর রহমান ও নাহিদুল ইসলাম।
অষ্টম বিপিএলের ২৭তম ম্যাচে শুক্রবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খুলনাকে ৬৫ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা। শুরুতে ব্যাট করে লিটন দাস ও মঈন আলীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান সংগ্রহ করে ইমরুলবাহিনী। জবাবে ১২৩ রান তুলতেই সব উইকেট হারিয়ে ফেলে মুশফিকুর রহিমের দল।
এই জয়ে ৯ ম্যাচে ৬ জয় ও ১ ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট হলো কুমিল্লার, যা তাদের শীর্ষে তুলে দিল। সিলেট পর্বে স্বাগতিকদের হারিয়ে আগেই প্লে অফ নিশ্চিত করেছে তারা। অন্যদিকে ৯ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে চার থেকে পাঁচে নেমে গেল খুলনা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দলীয় ১৭ রানেই ২ উইকেট হারায় খুলনা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মোস্তাফিজ আক্রমণে এসেই পর পর দুই বলে তুলে নেন খুলনার দুই ওপেনার রনি তালুকদার (০) ও আন্দ্রে ফ্লেচারের (১৬) উইকেট। এরপর চারে নামা ইয়াসির আলীকে (১৮) শিকার বানান মঈন। পরের ওভারে খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম কোনো রান করার আগেই আবু হায়দারের বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন।
৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া খুলনা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। জিম্বাবুয়ের ব্যাটার সিকান্দার রাজা (৮) আবু হায়দারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। ভরসা হয়ে থাকা সৌম্য সরকার আশা জাগিয়েও ২৫ বলে ২২ রান করে মঈনের বলে ক্যাচ তুলে দেন। এরপর ১৪ বলে ১১ রান করে নাহিদুল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন মেহেদী হাসান।
নিজের ওভারের শেষ বলে রুয়েল মিয়াকেও (০) ফেরান নাহিদুল। থিসারা পেরেরা যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আবু হায়দারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে এই লঙ্কান অলরাউন্ডার ২৩ বলে ২ ছক্কায় করতে পারেন ২৬ রান। অবশ্য এর আগেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। শেষ দুই ব্যাটার তাই হারের ব্যবধান কিছুটা কমানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি।
বল হাতে ৪ ওভারে ২০ রান খরচে ২ উইকেট তুলে নিয়েছেন মঈন। এছাড়া আবু হায়দার ৩টি এবং নাহিদুল এবং মোস্তাফিজ ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। বাকি উইকেট তানভীরের।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন কুমিল্লার ওপেনার লিটন দাস। তাকে সঙ্গে দিয়ে ধীরগতিতে এগিয়ে যান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি তিনি। পঞ্চম ওভারে নাবিল সামাদের শিকার হয়ে ১১ রানে সাঝঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে লিটনকে সঙ্গ দেন ফাফ ডু প্লেসি।
সপ্তম ওভারে ঝড়ো ব্যাট করতে থাকা লিটন থিসারা পেরেরার বলে উইকেট হারান। ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ১৭ বলে ৪১ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর ব্যাট করতে নেমে খালেদ আহমেদের শিকার হন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ৫ রানে তার বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন মঈন আলী। অপরপ্রান্তে থাকা ডু প্লেসিকে সঙ্গে নিয়ে ঝড়ো ইনিংস খেলেন ইংলিশ এই ব্যাটার। ৪৬ বলে ৮৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৭তম ওভারে বল করতে এসে ডু প্লেসিকে আউট করে জুটি ভাঙেন সৌম্য। ৩৬ বলে ৩৮ রান করে বিদায় নেন সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক।
ডু প্লেসির বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামা সুনীল নারাইন ডাক মেরে সাঝঘরে ফেরেন। এরপর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে এগিয়ে যান মঈন আলী। শেষদিকে এসে পেরেরার শিকার হন তিনি। ৯ ছক্কা ও ১ চারে ৩৫ বলে ৭৫ রান নিয়ে সাঝঘরে ফেরেন ইংলিশ এই ব্যাটার। শেষদিকে এসে মাহিদুলের ক্যামিও ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে কুমিল্লার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৮ রানে।
খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার করেন পেরেরা। একটি করে উইকেট পান খালেদ আহমেদ, নাবিল সামাদ, মেহেদি হাসান ও সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২
এমএইচএম