ঢাকা, রবিবার, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাহাড়ে বারবার আগুন দেন চাষীরা, পানি ঢেলে ক্লান্ত কর্তৃপক্ষ   

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
পাহাড়ে বারবার আগুন দেন চাষীরা, পানি ঢেলে ক্লান্ত কর্তৃপক্ষ    ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: প্রতিষ্ঠাকালে বেশকিছু নিয়ম করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে একটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার মধ্যে যদি কারও জায়গা থাকে তাহলে তিনি অনুমতি নিয়ে সেখানে শুধুমাত্র চাষাবাদ করতে পারবেন।

এছাড়া কেউ যদি চাষাবাদের জন্য ইজারা নিতে চায় পাহাড়ের কোনো জমি, তাহলে একবার ইজারা নিয়ে যতদিন তিনি ছাড়বেন না, ততদিন সেখানে চাষাবাদ করতে পারবেন।  

বিশালাকৃতির এ ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ অংশজুড়েই রয়েছে গাছপালা ও সবুজ বনায়ন।

এছাড়া বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসাবেও ক্ষ্যাতি আছে চবি ক্যাম্পাসের। পাশাপাশি পাহাড়গুলোতে সংরক্ষণ করা হয়েছে দেশের দুর্লভ প্রজাতির নানান বৃক্ষ। তবে বিভিন্ন সময় পাহাড়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধ্বংস হচ্ছে বন্যপ্রাণীর বসবাসের স্থান। হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ে থাকা অনেক সংরক্ষিত বৃক্ষ।  

বুধবার (৮ মার্চ) দুই দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের পাশের পাহাড়ে ঘটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। প্রথমবার দুপুর ২টার দিকে অনুষদের পেছনে আগুন লাগলে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা দফতরের কর্মীরা তা নিয়ন্ত্রণে আনেন৷ পরে বিকাল ৪টার দিকে অনুষদের সামনের পাহাড়ে আবার আগুন দেখা যায়। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকে এ আগুন। দীর্ঘ চেষ্টার পর রাত ৮টার দিকে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।  

এদিকে এসব অগ্নিকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত- এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ধারণা- পাহাড়ে যারা চাষাবাদ করেন, তারাই সহজে জায়গাগুলো পরিষ্কারের জন্য এ ধরনের কাজ করে থাকে। তবে তাদেরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না বেশিরভাগ সময়। কারণ আগুন লাগিয়ে তারা পালিয়ে যায়। তাই আমাদের কিছু করারও থাকে না। চাষাবাদের মৌসুমে এ সমস্যাটা প্রকট আকার ধারণ করে। আমাদের বিভিন্ন সময় পরিকল্পনা করেছি এ ব্যাপারে। তবে কোনোভাবেই বিষয়টাকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। তাছাড়া আগুনের উৎস এমন জায়গা থেকে হয়, যেখানে ফায়ারসার্ভিসও পৌঁছাতে পারে না।  

তিনি আরও বলেন, আমরা কিছুদিন আগে একবার তিনজনকে আঁটক করেছিলাম। একজনকে শনাক্ত করে, বাকি দুইজনকে ধরা হয়। পরে তাদেরকে সতর্ক করে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন কিছু নিয়মের কারণে আমরাও তাদেরকে লিজ না দিয়ে পারি না। তবে বারবার এসব অগ্নিকাণ্ডের কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে বন্যপ্রাণীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দণ্ডনীয় অপরাধ। পরবর্তীতে আমরা কাওকে সনাক্ত করতে পারলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনবো।

বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা দফতরের প্রধান শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুপুর ২টার দিকে একবার আগুন লেগেছিল। নিরাপত্তা কর্মীরা তা নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর বিকাল ৪টার দিকে আবারও জীববিজ্ঞান অনুষদের সামনের পাহাড়ে আগুন লাগে। রাত ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই আমরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৩
এমএ/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।