ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অনেকে ড্রোন ব্যবহারের সমালোচনা করছেন: মেয়র রেজাউল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
অনেকে ড্রোন ব্যবহারের সমালোচনা করছেন: মেয়র রেজাউল ...

চট্টগ্রাম: অনেকে ড্রোন ব্যবহারের সমালোচনা করছেন। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে আমরা পিছিয়ে থাকতে পারি না।

ড্রোনের কারণে বহুতল ভবনে মশার প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত করা যাচ্ছে অনেক দ্রুত। সুইমিং পুল, ছাদবাগান, বারান্দায় টবে জমে থাকা পানি মশার প্রজনন কেন্দ্র হয়ে উঠছে।
জনসাধারণের সচেতনতা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) নগরের নন্দনকাননের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চসিকের ৩০তম সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এসব কথা বলেন।  

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ডেঙ্গুর উৎস সন্ধানে পরিচালিত অভিযানে নির্মাণাধীন ভবনে সবচেয়ে বেশি লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে।  চট্টগ্রামে অনেক সরকারি ভবন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, এ ভবনগুলোতেও যাতে ডেঙ্গুর প্রজননক্ষেত্র না থাকে সে ব্যাপারে  সতর্ক থাকতে হবে। চসিকের পক্ষে মশা নিয়ন্ত্রণে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলছে, দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার সেবা। প্রয়োজনে করোনাকালের মতো চসিকের পরিচালিত হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পৃথক বিশেষায়িত কেন্দ্র চালু করা হবে।

নগরের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হলেও আলোচনার কেন্দ্রে ছিল সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের দাবি। এ সময় মেয়র বলেন, অন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে চসিকের আওতাধীন এলাকায় প্রকল্প গ্রহণ করতে হলে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে। আমরা রাস্তা বানাব আর অন্য সংস্থা রাতের আঁধারে রাস্তা কেটে ফেলবে, এভাবে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম গড়া সম্ভব নয়। চট্টগ্রামে বর্তমানে জনসংখ্যা ৭০ লক্ষ, যা আবার প্রতিদিন বাড়ছে। এই বাড়তি চাপ মোকাবিলায় সবগুলো সরকারি সংস্থা জনসাধারণকে সাথে নিয়ে কাজ না করলে নিকট ভবিষ্যৎেই চট্টগ্রাম বসবাসের অনুপযোগী হয়ে  পড়বে।

যেসব ওয়ার্ডে ময়লার এসটিএস নেই সেখানে এসটিএস গড়ার পাশাপাশি নতুন ল্যান্ডফিলের জন্য ভূমি নির্ধারণের কাজ চলছে বলে জানান মেয়র।

ট্রাফিক বিভাগের সহযোগিতা চেয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকায় যথেষ্ট রাস্তা থাকলেও যানজট হচ্ছে; যার মূল কারণ অবৈধ পার্কিং। আমি কলকাতায় নিউ মার্কেটে দেখেছি সেখানে রাস্তা প্রশস্ত না হলেও ১০০ রুপি দিয়ে পে-পার্কিং চালু করা হয়েছে। অথচ চট্টগ্রামে এই পে-পার্কিং চালু করতে গেলে কিছু মানুষ দুুর্র্ঘটনার ভয় দেখায়। অথচ পোর্ট কানেক্টিং রোডে রাতদিন ডবল লাইন করে অবৈধভাবে ট্রাক-লরি দাঁড়িয়ে থাকে। এসব গাড়ি থেকে চুঁইয়ে পড়া তেলে রাস্তার বিটুমিন ক্ষয়ে যাচ্ছে। মাঝিরঘাটে রাস্তায় ৩০-৪০ টনের গাড়ি চলে নতুন রাস্তা নষ্ট করে ফেলেছে। আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে দিনরাত গাড়ি পার্কিং করা থাকে।

‘অবৈধ দখলবাজির কারণে ফুটপাথে মানুষ হাঁটতে পারে না। এমনকি একটি সংস্থা ফুটপাথ দখল করে চশমার দোকান, খাবারের দোকান বসিয়ে ফেলেছে। আমরা সকালে উচ্ছেদ করি, দখলদাররা সন্ধায় আবার দোকান বসায়। সিএমপি কমিশনারকে বলেছি  প্রতিটি থানা পুনরুদ্ধার করা ভূমি সংরক্ষণে মনিটরিং করলে সাফল্য আসবে।  শহরে অবৈধ মোটর রিকশা অনেক বেড়ে গেছে। এগুলো দুর্ঘটনা আর লোডশেডিং বাড়াচ্ছে, সড়কের গতি কমাচ্ছে। পুুলিশের উচিৎ কঠোর অভিযান চালিয়ে মোটর রিকশার অত্যাচার কমানো।

চসিকের আয় বাড়াতে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমি মন্ত্রণালয়ে বলেছি বন্দরে প্রতিটি কনটেইনার থেকে চার্জ আদায় করতে হবে, কাস্টমসে পৃথক চার্জ আরোপ করতে হবে। শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে চট্টগ্রামের মতো বড় শহর চলতে পারে না। অন্য সংস্থাগুলো আয়ের একটি অংশ চসিককে দিলে সে টাকা দিয়ে চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নের গতি বাড়ানো সম্ভব যা চট্টগ্রামে শিল্পায়ন বাড়াবে। আয় বাড়াতে চসিকের বিদ্যমান ভবনগুলোর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হবে, কাজে লাগানো হবে পতিত ভূমিগুলোকে।

সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিরা নিজ নিজ স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন। সভায় প্যানেল মেয়র, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল আসলাম, কাউন্সিলরবৃন্দ, চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধান এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।