চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) অনার বোর্ডে থাকা সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার নাম কালো কালি দিয়ে মুছে দেন।
এরপর দীর্ঘ এক দশক এই অবস্থাতেই ছিলো অনারবোর্ডটি।
জানা গেছে, তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী চাকসু ভবনের তৃতীয় তলায় থাকা অনার বোর্ড থেকে মান্নার নাম মুছে দেন। একই দিনে চাকসুর সংগ্রহশালায় টাঙানো তার ছবিও খুলে ফেলা হয় এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তফা সাইফুল রোমেন, যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর টিপু ও নাজমুল হোসাইন।
সেদিন খালেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি (মান্না) যেহেতু ছাত্রের লাশ চেয়েছেন তাই ছাত্র প্রতিনিধি হওয়ার কোনো অধিকার তার নেই। তাই আমরা চাকসুর সাবেক জিএসদের নামের তালিকা থেকে মান্নার নাম মুছে দিয়েছি এবং তার ছবি খুলে ফেলেছি। '
প্রসঙ্গত, সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। যেখানে কথোপকথনের একপর্যায়ে আন্দোলন বেগবান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নাশকতা ঘটানো ও লাশ ফেলার বিষয়ে খোকাকে পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মান্নার বিরুদ্ধে।
এদিকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নিলেও মান্নার নাম যুক্ত হয়নি। তবে চাকসু নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হওয়ার পর বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসলে দ্রুতই নামটি লিপিবদ্ধ করার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ।
চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হওয়ার পরপরই নামটি পুনরায় লেখার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এর আগে আমরা জানতাম না।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নামটি দীর্ঘদিন কালো কালিতে ঢাকা ছিলো। অনেক আলোচনা-সমালোচনার পরও কোনো সমাধান হয়নি। বিষয়টি মিমাংসার ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা রেখেছে, সবাইকে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের চাকসু নির্বাচনে জাসদ ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহমুদুর রহমান মান্না। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৭৯ সালে জাসদ ছাত্রলীগ এবং ১৯৮০ সালে বাসদ ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দু’বার ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হন তিনি।
এম/টিসি